আমাদের সবার জীবনেই শৈশব সবচেয়ে সুন্দর ও স্মৃতিবিজড়িত একটি অংশ। জীবনের অনেকটা সময় কাটে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্জনে। শৈশবের সবটুকু স্মৃতি জড়ো হয় এই স্কুল জীবনকে ঘিরেই। স্মৃতির টানে, প্রাণের বন্ধনে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মাদারীপুরের জেলার কালকিনি উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাহেবরামপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ১৭ এর প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান শুরুর সময় ৯টা থাকলেও ফেলে আশা শৈশবের স্মৃতি রোমন্থনে এর আগেই প্রিয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয় সবাই। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক মুদাচ্ছের হোসেন এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সালাহউদ্দিন মাসুদ। অনুষ্ঠান শুরুতেই প্রয়াত শিক্ষক এবং সহপাঠীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন এই বিদ্যালয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। দোয়া শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের সম্মানসূচক সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এরপর আলোচনা অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী কামরুন নাহার শিমু এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইয়াছিন ইসলাম।
শিক্ষকদের জ্ঞানগর্ভ এবং দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে যেন নতুন পথের দিশা খুঁজে পায় সাবেক এসব শিক্ষার্থী। দীর্ঘ ৭ বছর পরে প্রাণপ্রিয় শিক্ষকদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে কেউ খুঁজে পায় স্মৃতি রোমন্থনের উপসর্গ। কিছুসময়ের জন্য মনে হয় হারিয়ে গিয়েছে সেই ফেলে আশা শৈশবে। আলোচনা অনুষ্ঠানের পরে শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন সম্মানিত শিক্ষকরা। এরপর শিক্ষকদের সঙ্গে ফটোসেশান শেষে সবাই চলে যায় নামাজ এবং মধ্যাহ্নের বিরতিতে।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং স্মৃতি বিজড়িত সব বক্তব্যে এ যেন এক শৈশবের সেই ক্লাসের দুরন্তপনায় ফিরে গিয়েছিল সবাই। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, খানিকটা বৃষ্টি এসে রঙ মেখে দিল শেষ বিকালের আয়োজনে। বৃষ্টিভেজা আবছা আলোয় সন্ধ্যে নামার একটু আগেই স্মৃতি কুড়ানির দল ফিরল একগুচ্ছ স্মৃতি নিয়ে আর রোমন্থিত হলো শৈশবের সব দুরন্তপনার। পুনর্মিলনী সর্বদাই আলাদা একটি মাত্রা নিয়ে আশে বন্ধুত্বের বাঁধনে। চিরন্তন সম্পর্কের বাঁধনে আবদ্ধ হয়ে ছাত্র-শিক্ষক এবং প্রিয় প্রাঙ্গণ যেন আজ এক অমলিন স্মৃতিপট।