রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

মুজিবনগরে একদিন

মোহাম্মদ আলী
  ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
মুজিবনগরে একদিন

দীর্ঘ যাত্রার অবসান কাটিয়ে মধ্যাহ্নের সময় আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত পর্যটন কেন্দ্র 'মুজিব নগর'। বাস থেকে নেমে কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে মেইন গেট পার হয়ে দেখতে পেলাম সেই ইতিহাস খ্যাত আম্রকানন। যেখানে আমাদের ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইয়েরা আমাদের জন্য একটা আলোচনা সভার মঞ্চ সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন আগে থেকে। প্রথমত আমাদের কিছু নিয়মকানুন ও সময়সূচি জানিয়ে দিলেন। এর পরে আমরা মুজিব নগরের মূল আকর্ষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মরণীয় স্থান মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ তথা মুজিবনগর স্মৃতি কমপেস্নক্সে গেলাম। সেখানে আমরা আমাদের সহপাঠীরা মিলে হাজারো স্মৃতিচারণ করলাম। সবাই এক ফ্রেমে বন্দি হয়ে কিছু গ্রম্নপ ফটো তোলা হলো। মুজিবনগরে স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম জয়বাংলা স্মৃতি মিনার, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, বাংলাদেশের শেষ সীমানা এবং ভারতের নদীয়া জেলা অনেক কাছ থেকে দেখলাম, মানচিত্র ওয়াচ-টাওয়ারে উঠে অনেক উঁচু থেকে চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশটা প্রত্যক্ষ করলাম চতুর্দিকে সবুজে সবুজময় চির সবুজ সত্যি সত্যিই বিমোহিত হয়ে গেলাম তখনই মনে পড়ে গেল কবি জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত কবিতার লাইন 'বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যায় না আর।'

যহরের নামাজ মুজিবনগর মসজিদে আদায় করে আমরা ভোজন সভায় বসে পড়লাম- গরুর গোশত, মুরগির রোস্ট, ডিম, মুগ ডাল, সালাদ আর সাদাভাত পেটপুরে দুপুরের খাবার খেলাম। অনেক সুস্বাধু ও মজাদার ছিল এখানো মনে পড়লে জিভে জল চলে আসে। খাবার শেষ হওয়ার পরেই শুরু হলো আমাদের শিক্ষা সফরের দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিকতা ক্লাসমেট বায়েজিদ হোসেনের অসাধারণ তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হলো অনুষ্ঠান। কিছুক্ষণ পরে কবির মতো ভাব নিয়ে মঞ্চে উঠলাম কবিতা আবৃত্তি করতে। যেহেতু দিনটি ছিল ৭ই মার্চ তাই আবৃত্তি করলাম কবি নির্মলেন্দু গুণের রচিত বিখ্যাত কবিতা 'স্বাধীনতা শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো'। বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট আঞ্চলিক ভাষায় বিতর্ক, উপস্থিত অভিনয় বিশেষ করে সহপাঠী সাকীফের অসাধারণ অভিনয়টা আমাদের বিভাগের প্রফেসর ড. এ বি এম জাকির হোসেন স্যার এখনো ভুলতে পারেন না। অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় বক্তব্য দিলেন অত্র বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী স্যার ও বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. নাছির উদ্দীন মিঝি স্যার। আমরা সবাই বাজপাখির মতো কানখাড়া করে শুনতে লাগলাম স্যারদের হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য, যা শিক্ষার্থীদের হৃদয় কেড়ে নিয়েছিল। সব অনুষ্ঠান শেষে বাসের সিট ধরার জন্য ছুটে পড়লাম। রাতে বাসের মধ্যে বড় ভাইদের সাথে নাশিদ, সংগীত, গান-গজল কবিতা বিভিন্ন কিছু গাইতে গাইতে ক্যাম্পাসে ফিরলাম। হাজারো আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে স্মৃতিপটে স্মরণীয় একটি দিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে