বাংলাদেশের ২৯তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সপ্তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পাবনা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে রাজাপুর নামক স্থানে গড়ে উঠে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রসারের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ৫টি অনুষদের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১টি বিভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীরা কি ভাবছেন, তাদের ভবনা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন যুবায়ের আহমেদ
উন্নত গবেষণা সুযোগ ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট
সাপোর্ট দরকার
মোহা : মজিদুল ইসলাম
১২তম ব্যাচ, অর্থনীতি
গবেষণার ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও সুযোগ সৃষ্টি হওয়া উচিত। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আমাদের এখনো খুব কম। আমি আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়াবে এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহিত করবে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়ানোর জন্যও উদ্যোগ নেয়া দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়ে। তাই, আমি আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সাপোর্টের ওপর গুরুত্ব দেবে। ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, ইন্টার্নশিপের সুযোগ এবং বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় হোক শিক্ষার্থীবান্ধব ও প্রযুক্তিগত দিক আরো উন্নয়ন করতে হবে
আব্দুল মকিম,
১৩তম ব্যাচ, টু্যরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
প্রতিটা শিক্ষার্থী অনেক আশা-স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনে প্রবেশ করে। কিন্তু তাদের সেই সুবিশাল আশা আর স্বপ্নগুলো নিমিষেই থমকে যায় যখন তারা বুঝতে পারে যে তাদের সাধারণ প্রয়োজনীয়তা টা অপূর্ণ। প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার হয়ে গেলেও এমন অনেক সাধারণ প্রয়োজনীয়তা আছে যা এখনো অপূর্ণ। এখনো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করতে হয় হাতে লিখে তারপর আবার সেটা নিয়ে এটাচড হলে দৌড়ঝাঁপ করতে হয় স্বাক্ষরের জন্য তারপর লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আবার সেটা নিয়ে বিভাগে জমা দিতে হয়। পরীক্ষার আগে এসব নিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় এখনো শিক্ষার্থীদের। যেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ফাইনাল পরীক্ষার টাকা জমা থেকে শুরু করে ফরম পূরণ অনলাইনে সম্পন্ন করে সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো এনালগ পদ্ধতি অনুসরণ করে। প্রশাসনের উচিত ফরম পূরণসহ ব্যাংকে টাকা প্রদানের সকল বিষয়াবলী অনলাইনে সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেওয়া।
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদগুলোকে দ্রম্নত আইইবি মেম্বারশিপের আওতায় আনা হোক
নিলিমা আক্তার রাত্রি
১৩তম ব্যাচ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে অনেক আশা নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু সেই সুবিশাল স্বপ্ন ও আশাগুলোর কিছু পূরণ হয় আর কিছু অপূর্ণ-ই থেকে যায়। ল্যাব সংকট, ক্লাস রুম সংকট, শিক্ষক সংকট প্রভৃতি সমস্যার সম্মুখীন আমাদের প্রতিনিয়ত হতে হয়। মাত্র তিনটি ক্লাস রুমের বিপক্ষে পাঁচটি ব্যাচ চলমান। কোনো ব্যাচের ক্লাস চলমান থাকলে অন্য ব্যাচকে সেই ক্লাস শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় যা খুবই ভোগান্তিময়। সেমিস্টার শুরুতে শিক্ষকদের ক্লাস নিতে বিলম্বের ফলে সেমিস্টার পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বাড়ে। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের শিক্ষার্থী হিসেবে আইইবি মেম্বারশিপ না থাকায় নামের শুরুতে ইঞ্জিনিয়ার ট্যাগ লাগানোর স্বপ্ন যেনো স্বপ্নই না থেকে যায়, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সেই প্রত্যাশা করি। সকল চাওয়া পাওয়ার ঊর্ধ্বে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক ভালোবাসি। এখানে যেমন ভালো শিক্ষকদের ছায়াতলে আসতে পেরেছি ঠিক তেমনি অনেক ভালো বন্ধুও পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার সমাধান ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে।
শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক
আব্দুর রহমান অয়ন
১৩তম ব্যাচ, ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইসিই)
শিক্ষা, গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম এবং নিজ গুনাবলিতে দেশ-বিদেশে অনন্য হয়ে উঠুক আমার প্রিয় পাবিপ্রবি, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটাই আমার চাওয়া। একজন শিক্ষার্থী অনেক স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। সকলে তার লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত করার পেছনে ছুটে। সেই ছুটে চলা স্বপ্নের পিছনে বাঁ হয়ে দাঁড়ায় অনেক কিছু যেমন : আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ক্লাস সংকট, ল্যাব এর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট তা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এর আবাসন সংকট এবং ক্যাফেটেরিয়ায় নিম্ন মানের খাবার পরিবেশন ও খাবারের ঊর্ধ্বমূল্য। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশন খুব দ্রম্নত এই জিনিসগুলোর সমাধান করবে। তা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছপালা ও সবুজআয়নের কোন কিছু নেই সেই সংকটেরও সমাধান খুবই জরুরি। তা ছাড়া ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা যা সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সম্ভব। পরিশেষে সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে জ্ঞান অর্জনে পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা নিশ্চিত করে বিশ্ব র?্যাংকিং এ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাম প্রথম সারিতে থাকবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।