পৃথিবীর বুকে সন্তানের জন্য বটবৃক্ষ হচ্ছে বাবা
মো: মোবারক হোসেন
শিক্ষার্থী : আল আযহার ইউনিভার্সিটি মিসর।
উত্তাল এই পৃথিবীর বুকে সন্তানের জন্য একমাত্র বটবৃক্ষ হচ্ছে বাবা। রবের পক্ষ থেকে এক বিরাট নেয়ামত। পৃথিবীর বাস্তবতা বুঝতে উঠতে পার হয়ে যায় প্রায় বিশ থেকে পঁচিশ বছর। তবুও বোঝা হয় না বাবার অবদান। বুঝতে চাই না, হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাবার দুঃখের ভাষা। কিন্তু যখনই বাস্তবতার যুদ্ধে হেরে গিয়ে ভেঙে পরি মাঝপথে, ঠিক তখনই মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে বার্ধক্যজনিত সুরে কেউ একজন বলে ওঠে, কিরে এত কিসের চিন্তা তোর? কী এমন হয়েছে! আমি তো এখনো জীবিত আছি। তখন চোখের অশ্রম্ন ঝরার সাথে সাথে নিজের অজান্তেই বলে উঠি, আমি এই ২০-২৫ বছর বয়সেই হাঁপিয়ে যাচ্ছি! কিন্তু বাবা কিভাবে ষাট বছর বয়সেও লড়ে যাচ্ছেন! মনে উঁকি দেয় এমন হাজারো প্রশ্ন। যার আংশিক উত্তর হয়তো সময়ের সাথে-সাথে পেয়ে যাবো। আর কিছু থেকে যাবে রহস্যময় হয়ে। বাবাকে নিয়ে লেখার মতো কোনো ভাষা নেই আমার। বাবা মানে সন্তানের চিন্তা মুক্ত। এক লাক্সেরিয়াস সুন্দর জীবন। বাবা মানে সন্তানের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে নিজের ক্যারিয়ারের কথা ভুলে যাওয়া এক স্বার্থহীন সৈনিক। কিন্তু কথায় কথায় মা তোমাকে অনেক ভালোবাসি বলতে পারলেও বাবা তোমাকেও অনেক ভালোবাসি বলার সাহস হয় না। আজ না বলা সব ভালোবাসা আমার বাবার জন্য নিবেদিত। ভালো থেকো বাবা।
বাবা হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা
শরীফুল ইসলাম সোহাগ
শিক্ষার্থী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ।
স্বার্থের এ পৃথিবীতে যদি কেউ তোমায় নিঃস্বার্থ ভালোবেসে থাকে, তবে সে হলো বাবা। বাবার মধ্যে জড়িয়ে আছে বিশালতার এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ। বাবা নামটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে প্রত্যেক সন্তানের হৃদয়ে শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা, বিশ্বাস, ভরসা আর ভালোবাসার এক অনুভব জাগে। আমার বাবা হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা, যিনি আমাকে সব বিপদাপদ থেকে আগলে রাখেন, যিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমার গায়ে একটা আঁচড় ও লাগতে দেন না। বাবা এমন একজন মানুষ যার নিজের বলতে কিছু নেই, যিনি সন্তানের জন্য সার্বক্ষণিক নিবেদিত প্রাণ, যার অস্তিত্বজুড়ে শুধুই সন্তানেরা থাকেন। রবের কাছে করা প্রার্থনাতে যিনি সার্বক্ষণিক সন্তানকেই জড়িয়ে রাখেন। যিনি সন্তানের সুখের জন্য নিজের সমস্ত সুখ বিসর্জন দিতেও পিছ পা হন না। আমার ছোট্ট এ জীবনে অভাব, প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও বাবা কখনোই আমার ইচ্ছেগুলোকে অপূর্ণ রাখেননি। সন্তানের একটু সুখের জন্য বাবারা কতই না ত্যাগ স্বীকার করেন। যদি একটু প্রতিদান তোমায় দিতে পারতাম বাবা!!
পৃথিবীর সব পুরুষ খারাপ হতে পারে কিন্তু একজন বাবা কখনোই তার সন্তানের জন্য খারাপ হতে পারেন না। হে প্রভু, নিঃস্বার্থ, ছায়াদানকারী বাবার নেক হায়াত বাড়িয়ে দিন।
কখনোই হাত ধরে বলা হয়নি, বাবা তোমায় ভালোবাসি। আজ আমি সারা বিশ্বকে জানিয়ে চাই, বাবা-সত্যিই তোমাকে খুব ভালোবাসি।
বাবা যে এক নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র
উবাইদুলস্নাহ শিমুল
শিক্ষার্থী, ফ্রেদরিশ আলেক্সান্ডার ইউনিভার্সিটি জার্মানি।
'বাবা' ছোট্ট একটি সুমধুর শব্দ। বাবা শব্দটি মস্তিষ্কে স্মরণ মাত্রই হৃদয় শীতল হয়ে যায়। বাবা যে এক নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র। যিনি নিজের জীবন বাজি রেখে শুধু উৎসর্গ করেন সন্তানের জন্য। কোন কিছুতেই কার্পণ্য হন না।
বাবা শুধু একটি শব্দ নয়। অদম্য উচ্ছ্বাস অনুপ্রেরণা ও অনিবর্তিত শক্তি। যে শক্তি রুপান্তরিত হয়ে সন্তানের সুন্দর জীবনমান উন্নয়নের অপরিসীম ভূমিকা পালন করছে। পড়াশোনার সুবাধে বাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। আমার যখন অসহায়ত্ব বোধ হয়, বাবার শরণাপন্ন হই। তখন বাবা আমার কাঁদে হাত রেখে তিনি সাহস জোগান দেন। জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার উৎসাহিত ও উজ্জীবিত করেন। জীবন-সংগ্রামে যখন থমকে যায়, পেছন থেকে বাবা এসে হাল ধরেন। আমি এখন যা এক বাক্যে বললে পুরাটাই আমার বাবার অবদান এবং তার দীর্ঘ লালিত স্বপ্নের প্রতিফলন। বাবার চোখ দিয়ে আমি এখনো সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা খুঁজি। আজ তোমাকে বড্ড মিস করছি বাবা। ভালো থেকো বাবা।
বাবা তো একজন সফলতার বীজ রোপণকারী
মাহফুজ রুমান খান
শিক্ষার্থী : মাধখলা কামিল মাদ্রাসা।
বাবা মানে একজন আদর্শ সৈনিক। সৃষ্টি কর্তার পক্ষ হতে একজন ন্যায়পরাণ প্রতিনিধি। বাবার কাছে সন্তান হলো সমতল ভূমির মতো। পানি যেভাবে সমতল ভূমিতে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তেমনি বাবার আদর, সোহাগ, স্নেহ ভালোবাসা, মমতা প্রত্যেক সন্তানের কাছে সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। বাবা তো একজন সফলতার বীজ রোপণকারী। যিনি ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখিয়ে চলছ। হোঁচট খেলে বুকে আগলে নিয়ে অনুপ্রেরণা উৎসাহিত করছে। নিজের হাজার ইচ্ছে ত্যাগ করে সন্তানের ইচ্ছে পূরণ করছে। বাবা আপনাকে খুব ভালোবাসি, আকাশ সমান। কিন্তু বলা হয় না, অজানা এক ভয়ের কারণে। বাবা, খুব ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে বলি ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি।
পৃথিবীতে একমাত্র অপ্রকাশিত ভালোবাসা হলো বাবার প্রতি ভালোবাসা। বাবাকে মুখ ফুটে বলতে পারি না। শুধু বুকের ভেতর আগলে রাখি।
বাবা আমায় বটবৃক্ষের মতো আগলে রাখেন
আতিকুল ইসলাম ফাহিম
শিক্ষার্থী হোসেনপুর সরকারি কলেজ।
\হ
আমার অন্যায়ে রাগান্বিত হয়ে আমাকে বকাবকি করে নিজেই আড়ালে কেঁদে ফেলেন।
বাবা নিঃস্বার্থে অক্লান্ত প্ররিশ্রম করে যান নিয়মিত। শুধু আমাদের চাহিদা পূরণ করার জন্য নিজেকে প্রতিনিয়ত বিলিয়ে দেন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান। শুধু আমাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। বিনিময়ে এখনো কিছুই দিতে পারিনি। আমার বাবা আমার কাছে মহানায়ক। বাবা আপনাকে ভালোবাসি। অসম্ভব ভালোবাসি। আপনার ঋণ পরিশোধ হওয়ার নয়। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব বাবা।
বাবা শব্দটির সাথে মিশে আছে গভীর ভালোবাসা ও আবেগময় স্মৃতি
শিক্ষার্থী, রাইসুল ইসলাম শাতিল
ঈসা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।
বাবা শব্দটির সাথে মিশে আছে গভীর ভালোবাসা ও আবেগময় স্মৃতি। যেই ভালোবাসা চুক্তি ও স্বার্থ মুক্ত। তিনি সন্তানের সুখের জন্য ও সব চাহিদা মেটাতে বাবা তার জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতেও দ্বিধা করে না। যতটুকু মনে পড়ে। বাবাকে দেখেছিলাম যুবক বয়স, কালো চুল এবং সুঠাম দেহের অধিকারী। দেখতে দেখতে বাবার মাথার চুল আজ সাদা। শরীরের চামড়া ঢিলে, চোখেও ঝাপসা দেখে। তবে, আমাদের দায়িত্বের সময় বাবাকে অনেক শক্ত ও পরিশ্রমি দেখি। বাবাকে যত দেখি বিস্মিত হই। তিনি সর্বদাই আমাদের ভালো-মন্দ নিয়ে চিন্তিত। অথচ নিজের বেলায় ছেড়া জুতো, পুরাতন জামা। মনের অজান্তেই চোখে জল চলে আসে। বাবা, আমার জন্য সুখের ছায়া। পৃথিবীতে বাবার পরিপূরক হিসেবে অন্য কিছুই হয় না। পৃথিবীর সব বাবার অনূভুতি এবং ভালোবাসা একই। আমার চোখে আমার বাবা সবচেয়ে সুদর্শন ও সেরা। তবে বাবাকে ভালোবাসি তা আজও বলা হয়নি। একদিন সজোরে চিৎকার করে বলবো, বাবা, ভালোবাসি।
বাহ-বাহ ও আমার বাবা
শিক্ষার্থী, তাছনিম রহমান স্বর্ণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাবার দিকে তাকিয়ে বারবার আমি অভিভূত হই কেননা আমার কাছে মনে হয় তিনি 'বাহ-বাহ' এর সংক্ষিপ্ত রূপ; এক কথায় যার অর্থ দাঁড়ায়, চমৎকার! আমার বাবা সাধারণভাবেই অসাধারণ। তিনি সুপারহিরো নন কিন্তু, জাদুকর। নিমিষেই আমার চাওয়া পাওয়া পূরণ করেন তিনি, আমাকে হাসিয়ে ফেলেন। আমার এত পাওয়ার গল্প, এর পেছনে রয়েছে আমার বাবার অসংখ্য বিনিদ্র রাত, কপালের ঘাম আর অপূর্ণ স্বপ্ন।
বাবার দিকে তাকালে আমি মানবজীবনের মানে খুঁজে পাই কি সুন্দর তিনি আমাকে দায়িত্ববান, শক্ত, কঠোর হতে শিখিয়ে যাচ্ছেন। শিখাচ্ছেন, কীভাবে বটবৃক্ষকে বুকে ধারণ করতে হয় পরিশেষে, তিনি শুধু বাবা-ই নন বরং হাজারো বিশেষণের সংক্ষিপ্ত রূপ; একের ভিতর সহস্র কিংবা সহস্র রূপে 'বাহ-বাহ'।
বাবা আমার সুপারহিরো
শিক্ষার্থী, নাফিস আহমেদ ভূঁইয়া
কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়
ছোটোবেলায় রূপালি পর্দার সুপারহিরো দেখে ইচ্ছে জাগত- আমার জীবনেও যদি এরকম কেউ থাকত। সুঠাম দেহ, ভরাট কন্ঠ এবং উজ্জ্বল চেহারা এবং অদম্য শক্তি- এসবকিছু ছিল কৃত্রিম চাহিদা। এই কৃত্রিম চাহিদার মূলে থাকা মিডিয়ার হঠকারিতা শিশুমনের বোঝা ছিল বেশ কঠিন। একদিন বাসে বাসা ফেরার পথে ঘুম ভেঙে চোখে পড়ল পাশে বসা আমার বাবার হাত বয়সের কারণে সামান্য কুঁচকে গিয়েছে কিন্তুু শক্ত হাতে ব্যাগ ধরে রেখেছেন। ভেবে দেখলাম যতবারই বাবার সাথে বাসায় যাই, ততবারই বাসে নিশ্চিন্তে ঘুমাই। ভাবলাম বাবা আছে বলেই বাসায় দুশ্চিন্তাহীনভাবে ঘুমাই। বাবা সাথে থাকলেই অনিশ্চিত দুনিয়াতে স্বস্তির নিশ্বাঃস ফেলি। আমার বাবা-ই তো আমার সুপারহিরো, দেরিতে হলেও দিনশেষে বুঝতে পেরেছি।
\হ
মনে পড়ে 'তোমার স্নেহগুলো! বাবা,'
শিক্ষার্থী, মো.আবদুর রহমান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
'বাবা' শব্দের এই মানুষটাকে অনেকে বটগাছের সাথে, অনেকে আবার ছাতার সাথে তুলনা করেন। ঝড়, বৃষ্টি ও তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে ছাতা যেমন আমাদের আগলে রাখেন, তেমনি সকল পরিস্থিতিতে আমার বাবা আমাদের পরম যত্নের সাথে আগলে রাখেন। আমার বাবা আমাদের জন্য নিজের বন্ধু-বান্ধব আড্ডা, শখ আহ্লাদ ত্যাগ করেছেন। অথচ, কখনো আমাদের সঙ্গ ত্যাগ করেননি, আমাদের হাত ছেড়ে দেননি। শুধু বাবা দিবসে নয়; সবসময় বাবাকে ভালোবাসি। পড়াশোনার জন্য দূরে থাকলেও সবসময় বাবার স্নেহগুলো মনে পড়ে। তিনি আমাদের ছোটবেলায় যেভাবে পরম যত্নে লালন করেছিলেন, সেভাবে যেন আমরাও তার যত্ন নিতে পারি, তার ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করতে পারি, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে এই কামনায় করি।