রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

রঙিন ঘুড়িতে রাঙাল আকাশ

রায়হান আবিদ
  ০৮ জুন ২০২৪, ০০:০০
রঙিন ঘুড়িতে রাঙাল আকাশ

মুখে অট্টহাসি, হাতে ঘুড়ি, অফুরন্ত আড্ডার সঙ্গে আবিরে মাখামাখি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের  একদল তরুণ। শাড়ি-পাঞ্জাবিতে সেজে বিভিন্ন আকার-আকৃতির ও রংবেরঙের ঘুড়িতে রাঙাল ক্যাম্পাসের আকাশ। সব কিছু মিলে যেন তৈরি হলো এক মনোরম দৃশ্য। শুরুটা হয়েছিল ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চাপ ও একঘেয়েমি কমাতে ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা থেকে। টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানকার একাডেমিক চাপে যেন ছাত্রদের এই বিশাল সুন্দর ক্যাম্পাসও কারাগার মনে হয়। সেই চাপের কারাগার থেকে মুক্তির সঙ্গে একটু আনন্দ-ফুর্তি করার মনের দাবি 'ঘুড়ি উৎসব'।

বেলা যত যায় আয়োজন যেন আরও বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বেড়েছে উৎসবের আমেজ। ঘুড়ি ওড়ার শোঁ শোঁ শব্দ মনে করিয়ে দেয় পুরনো গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। ঘুড়ি ওড়ানোর সময় মনে হচ্ছিল যেন সবাই ছেলেবেলায় ফিরে যাচ্ছি।

আবার অনেকের জন্যই এটা ছিল তাদের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথম এক্সপিরিয়েন্স। ঘুড়ি ওড়ানোর পর ছিল আবির খেলার আয়োজন। এদিকে সবাই আবির মাখাচ্ছিল একে অপরকে, আবার অনেকে রঙের সঙ্গে তাদের হতাশাগুলোও উড়িয়ে দিচ্ছিল হাওয়ায়। ছবি তোলা ও গান-বাজনারও আয়োজন ছিল। রং মাখার পর ছিল বল নিক্ষেপ  খেলার আয়োজন। যেখানে সঠিক নিশানায় লাগাতে পারলেই পয়েন্টের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের জন্য ছিল বিশেষ পুরস্কার।

গব শেষে সবার চোখে-মুখে যখন ক্লান্তির ছাপ, তখনই চলে আসে নাশতা ও ঠান্ডাপানীয়। সন্ধ্যায় শুরু হলো আরেকটি মজার খেলা। যেখানে প্রত্যেককে একটি করে টোকেন দেওয়া হয়। টোকেনগুলোতে ছিল বিভিন্ন সিনেমার নাম। আর যার ভাগ্যে যে টোকেন পড়েছে তাকে সিনেমার নাম মুখ দিয়ে না বলে অভিনয় করে বোঝাতে হয়েছিল। আর সব শেষে সবাই মিলে বসে শুরু করলাম গানের আসর। গানে জয়িতা আর মাজহারুল ছিল গিটারে। আর বাকি সবাই সুরে সুর মিলিয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত গানের আসর উপভোগ করলাম। জীবনের ব্যস্ততা হয়তো থেকে যাবে কিন্তু মাঝের এই স্বল্প সময়গুলোই যেন সেই দীর্ঘ ব্যস্ততাগুলোকে সাময়িক অদৃশ্য করে রাখবে।

আয়োজনের সম্পূর্ণ ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করার দায়িত্ব ছিল সাজিদের। সাজিদ জানায়, বায়োইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট এ এই চাপটা যেন আরেকটু বেশি। কারণ একই সঙ্গে লাইফ সায়েন্সের টপিকগুলো গিলতে হয় আর প্রোগ্রামিং হজম করতে হয়। আর এই চাপ কমাতে ডিপার্টমেন্টের সিনিয়ররা যেন একেকজন দেবতাদূত। সুযোগ পেলেই নানা ধরনের আয়োজন করে, যেগুলো ক্যাম্পাসের অন্যরা কেউ সচারাচর করে না।

মুন জানায়, ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে এমন কোনো উৎসব কাউকে করতে দেখিনি। তবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এর প্রচলন থাকলেও টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেন যেকোনো উৎসব করাই যেন একটা কঠিন ব্যাপার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে