রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

বেরোবিতে আদিবাসীদের মিলনমেলা

মো. ফজলুল হক
  ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০
বেরোবিতে আদিবাসীদের মিলনমেলা

পাহাড় ও তার সামগ্রিক সৌন্দর্য আমরা সমতলে বাস করা বাঙালিদের কাছে সব সময়ই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার বিষয়। কিন্তু সেই আকর্ষণ কি পাহাড়ে বসবাস করা আদিবাসীদের আছে? যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্ভোগ, খাবার পানির সংকট, শিক্ষা ও চিকিৎসার অপ্রতুলতাসহ নানা জটিলতার মধ্য দিয়েই অতিবাহিত করতে হয় তাদের দৈনন্দিন জীবন। আমার বন্ধুকে কতদিনই তো আফসোস করতে শুনেছি যে, এখানে (বর্তমান ঠিকানায়) মারা গেলেও কেউ জানবে না। কারণ ১০-১২ দিন হয়েছে বাসায় কথা হয় না, ওর গ্রামে নেটওয়ার্ক নেই বলে। আধুনিক এই সময়ে এসেও উন্নয়নের ছোঁয়া নেই তাদের জীবনে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের পানির জন্য ঝরনার পানির ওপর নির্ভর করে থাকতে হয়। সেই পানি আনার জন্য কত কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়, কতটা কষ্ট করতে হয় সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে নিতে নিতেই মারা যাওয়াটা খুব অপরিচিত ঘটনা নয়।

এ রকম নানা জটিলতা কঠিন পরিস্থিতিকে ভেদ করেও সেই পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখে স্বপ্ন ছোঁয়ার উদ্দেশ্যে বেশ কিছু তরুণ তরুণী চলে এসেছে উচ্চ শিক্ষার জন্য। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ইন্ডিজিনাস শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল।

অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশে ভরপুর। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল পাহাড়ি উপজাতীয় পোশাকের বর্ণিল সাজ।? একেকজনের একেক রকম পোশাক, সাজগোজ এবং সাংস্কৃতিক ভিন্নতা বৈচিত্র্য এনেছে এই অনুষ্ঠানে। এই আয়োজনে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, চাক, গারো, সাঁওতাল, ওরাওঁ, মাহাতো, মুন্ডা, মুসহর, মালোসহ বেশ কিছু উপজাতি অংশগ্রহণ করেছিল।

সংগ্রামী সেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়েই আয়োজিত হয়েছিল আজকের এই অনুষ্ঠান। এখানে অধ্যয়ন শেষ করে বিদায় নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা, নবাগত তরুণদের সংবর্ধনা এবং চলমান অধ্যয়নগত শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক কাজের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। যেই সংগ্রামী জীবন তারা পার করে এসেছে সেটার লক্ষ্য যেন অটুট থাকে, তাদের এই পরিশ্রম যেন পূর্ণতা পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে নবাগত তরুণদের উদ্দেশে কথা বলেন অভিভাবকরা।

তাদের নিজস্ব এলাকায় বিদ্যমান নানা সমস্যা ও প্রতিকূলতা দূর করে তাদের পাহাড়ি জীবনকে সহজ এবং শান্তিময় করতে এই তরুণদের চেষ্টাও রাতে থাকবে। তাদের দাবি-দাওয়া পূরণ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির জন্য প্রচেষ্টা থাকবে এই তরুণদের। তারা আশা ব্যক্ত করেন এই যে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আদিবাসীদের প্রতি যেসব অবকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন তা খুব দ্রম্নতই বাস্তবায়ন করবেন এবং এর মাধ্যমেই এই জনগোষ্ঠীর জীবন উন্নয়নের ভূমিকা রাখতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে