শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

দেশসেরা ক্যালিগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন নিথির

আবির হোসেন, ইবি
  ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০
দেশসেরা ক্যালিগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন নিথির

মিষ্টি হাসির মেয়ে নওরীন নিথি। গল্প-আড্ডায় বন্ধুমহল মাতিয়ে রাখার আসাধারণ এক গুণ রয়েছে তার। বাংলা অথবা ইংরেজি সাহিত্যে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বর্তমানে পড়ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই তার আঁকাআঁকিতে বেশ ঝোঁক। আজও ছাড়তে পারেননি সেই নেশা। বেশির ভাগ সময়ই আঁকেন অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি। লেখাপড়া ও আঁকাআঁকিকে সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিথি। প্রশংসা কুড়াচ্ছেন আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, শিক্ষক ও বন্ধুমহলে। স্বপ্ন দেখেন দেশের একজন বড় ক্যালিগ্রাফার হওয়ার। নিথির আঁকিবুকির দুনিয়ায় গল্প জানাচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ্‌ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আবির হোসেন।

নিথির জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিনাজপুর সদরে। ছবি আঁকা, গান শেখা, গাছ লাগানো ও বিভিন্ন রকম ক্রাফটিং করে নিজ বাড়িতেই কেটেছে ছেলেবেলা। নিজ শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। পরে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। স্কুলজীবন থেকেই বিভিন্ন আঁকাআঁকির প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। তখনই তিনি বুঝেছিলেন ছবি আঁকার এক আলাদা প্রতিভা রয়েছে তার মধ্যে। তখন থেকেই শখের বশে আঁকতে বসতেন বারবার। চেষ্টা করতেন যেকোনো কিছু দেখে তার মতো করে একই জিনিস আঁকার। সময়ের পরিক্রমায় রং-তুলির সঙ্গে গাঢ় হয় সম্পর্ক, বাড়ে সখ্যতা। পরবর্তী সময়ে আর ছাড়তে পারেননি রঙের দুনিয়া। শখ থেকেই এখন হয়ে উঠছেন পুরোদস্তর ক্যালিগ্রাফার। বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফিতেই বেশি সময় দিচ্ছেন তিনি।

নিথি কখনো কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারও কাছে ক্যালিগ্রাফি শেখেননি। এ বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও অবলীলায় এঁকে যাচ্ছেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় লেখাপড়ার চাপে আঁকাআঁকিতে কিছুটা ছেদ পড়ে। তবে করোনাকালে যখন সবাই ঘরবন্দি তখন নিজেকে শানিয়ে নেওয়ার বড় সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে সময় কাটানোর জন্য আবারও আঁকাআঁকিতে ডুব দেন। এর পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। নিথি বলেন, ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব ও গুগল থেকে অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফির বিভিন্ন ছবি দেখে সেগুলো আঁকানোর চেষ্টা করতাম। প্রথমে খুব কঠিন লাগত। কোথা থেকে পঁ্যাচ শুরু আর কোথায় শেষ সেটা বুঝতেই পারতাম না। তবে বারবার চর্চা করায় এখন আর খুব একটা কঠিন মনে হয় না। এভাবে নিজে থেকেই ক্যালিগ্রাফি শেখা। আজ অবধি কোনো কোর্সও করা হয়নি। মূলত শখের বশে আঁকা শুরু করেছিলাম। তবে শখকে এখন ব্যবসায়িক দিকেও নিয়ে এসেছি। প্রথমে আমার আঁকা বেশ কিছু ক্যালিগ্রাফির ছবি তুলে নিজের ফেসবুক আইডিতে আপলোড করি। সেখানে শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রশংসা ও প্রচুর উৎসাহ পাই। এভাবে নিয়মিত আমার আঁকা ক্যালিগ্রাফির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করতে থাকি। এরই মধ্যে দু-একটি করে বিক্রি শুরু হয়। পরে অনলাইনে নিয়মিত প্রচারণা চালাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে