সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বাধীনতা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব কবে?

৫৩ পেরিয়ে ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে মহান স্বাধীনতা। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা যে বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রাম করে স্বাধীনতা এনেছেন তা আজ অবহেলিত। আমরা কতটুকু পেরেছি স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন করতে তা গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাবনায় তুলে ধরেছেন আবু হুরায়রা।
  ৩০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
স্বাধীনতা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব কবে?

স্বাধীন বাংলাদেশ ৫৪ বছরে পদার্পণ

মালতি মজুমদার

সিনিয়র প্রভাষক, ফলিত গণিত বিভাগ।

পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হয় স্বাধীন বাংলার। সেই স্বাধীন বাংলাদেশ এবার ৫৪ বছরে পা দিয়েছে। স্বাধীনতার এই এত বছর পরে এখন আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের কাজ করতে হবে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে, যুদ্ধবিহীন শান্তি ও সমতার বিশ্ব নিয়ে। আমরা চাই সব শিশু বেড়ে উঠুক ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যতামুক্ত, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সবুজ, শ্যামল সোনার বাংলায়।

স্বাধীনতার প্রত্যাশা-প্রাপ্তি মেলাতে প্রয়োজন বাক স্বাধীনতার

তানিয়া আহমেদ তন্বী

প্রভাষক, ফার্মেসি বিভাগ।

দীর্ঘ একটা সময় আমরা পেরিয়ে এসেছি। আমি একজন বাঙালি হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি এই দুটার একটা সমন্বয় হওয়া উচিত ছিল যেটা হয়নি। আমাদের অনেক প্রত্যাশা আছে, তবে মনে হয় যারা স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিল তাদের প্রত্যাশা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। তাদের আক্ষেপটা কোথাও গিয়ে এখনো রয়ে গেছে। একটা স্বাধীন দেশে বলার স্বাধীনতা নেই, ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে বহুদিন আগেই। স্বাধীনতার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মিল ঘটাতে হলে আগে বলার স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হবে। বেঁচে থাকার জন্য যে প্রয়োজনীয়তা আছে তা মিটানোর সামর্থ্য তৈরি করতে হবে। আমাদের নেই খাদ্যের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবার অধিকার, নেই বাসস্থান, এত নেই নেই-এর মাঝে আছে শুধু সিন্ডিকেট আর জুলুমদারবাজদের কারসাজি। এই বৈষম্য ও পরাধীনতা থেকে যেদিন বের হয়ে আসতে পারব সেদিন ভাবব আমাদের স্বাধীনতার যে আশাটা ছিল সেটা পূরণ হয়েছে।

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে চেতনার বাস্তবায়ন কতটা?

কয়েস আহমেদ

সিনিয়র প্রভাষক, বাংলা বিভাগ।

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান ও নদীমাতৃক দেশ। গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ- এই স্মৃতিটুকু আঁকড়ে ধরেই, দেশের সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তাতে আমরা কী পেলাম? পেয়েছি এই লাল-সবুজের পতাকা। আর একটি নির্দিষ্ট ভূখন্ড, যা আমাদের বাঁচার একমাত্র সম্বল। এত বছর পরে এসেও দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে বেকারত্ব। দেশের যুবসমাজ আজ মাদকাসক্ত। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই শুধু ফুটে ওঠে অসহায়ত্বের প্রতিচ্ছবি। এসব দিক থেকে যদি আমরা বেরিয়ে আসতে চাই তাহলে আমাদের প্রতিটি সেক্টরে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের প্রয়োজন, তাহলে হয়তো আমরা একদিন আমাদের স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। অর্জন হবে আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য।

দুর্নীতির কাছে হেরে যাচ্ছে স্বাধীনতা

মোখলেছুর রহমান

প্রভাষক, মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্জন বলতে গেলে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। আশাবাদী যে, আমরা খুব দ্রম্নতই মুক্তিযুদ্ধে যে আশা ও লক্ষ্য ছিল সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম হব। মৌলিক অধিকার মানুষের দ্বারে পৌঁছাতে আরও কিছু সময় লাগবে। বর্তমান সরকার এটি নিয়ে কাজ করছে এবং সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে দুর্নীতি রোধে। এই দুর্নীতিকে যদি কমানো যায় তাহলে দেশের স্বাস্থ্যখাত অনেক এগিয়ে যাবে, দেশের মানুষ দেশেই চিকিৎসা পাবে, তাদেরকে বিদেশে যেতে হবে না। জনবলের অভাবে আমরা মানসম্মত চিকিৎসা পাচ্ছি না। তার ওপর রয়েছে কিছু অসাধু দুষ্টুচক্র যারা মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কিন্তু মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। স্বাধীনতার এই দিনে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে সেসব অসাধু লোকজনের হাত থেকে রক্ষা করার মধ্য দিয়ে পেতে পারি মৌলিক চাহিদা, স্বাস্থ্যসেবার স্বাধীনতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে