চড়ুইভাতি শব্দটি শুনলেই মনে পড়ে যায় শৈশবের স্মৃতি। গল্প, আড্ডা ও নানারকমের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে যায় আনন্দ উচ্ছ্বাসে। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ও সোনালি দিনের জমে থাকা স্মৃতিগুলোকে ফিরে পায় চড়ুইভাতির অনুষ্ঠানে।
শীতের সকাল। চারিদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ সকালের আভাস জানান দিচ্ছে। ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দু হীরকখন্ডের মতো চকচক করছে। ঘড়ির কাঁটায় যখন বাজে ৯টা, ঠিক তখনই সাভারের (গবি) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় হাজির একদল শিক্ষার্থী। তারা ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ১৩ ব্যাচের তরুণ-তরুণী।
সবার হাতে ব্যাগ ভর্তি বাজার ও রান্নার সরঞ্জাম। সবাই সবার মতো কাজের ব্যস্ততা খুঁজে নিচ্ছে। ব্যাচের সিআরের নেতৃত্বে সবাইকে কাজ বণ্টন করে দেওয়া হলো। অনেকে আবার কাজ না করার অজুহাতে নিজেকে ব্যস্ত দেখাচ্ছে!
সিআর আদি ও সুমনের নেতৃত্বে রান্নার কাজে যথেষ্ট সহায়তা করে সারাফাত, কাওসার, তানভীর, নাঈমুর, সাইফুলসহ আরও অনেকে। রান্নার সময় আশেপাশে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সবার নাকে যখন সুগন্ধ ছড়িয়ে গেল, সমানুপাতিক হারে সবার ক্ষুধাও বেড়ে গেছিল।
রান্নার ফাঁকে ফাঁকে সবার খোশগল্প চলছিল। অনেকে প্রেম-ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলছিল। অন্যদিকে মেয়েরা রূপসজ্জা নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিল। কিছুক্ষণ পর রান্না শেষ। কয়েকজনকে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব দেওয়া হলো। এরই মধ্যে অনেকের ফটোসেশন শুরু হয়। দুপুর ঘনিয়ে আসতেই শেষ হয় রান্নার কাজ।
এরপর উপস্থিত হন অত্র অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা। বাবুর্চি ছাড়াই ৮০ জনের খাবার প্রস্তুতে শিক্ষকেরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে। অথির তৈরি স্পেশাল বেগুনের আচার খাবারকে সুস্বাদু করে তুলছিল। পরিশেষে সারাদিনের কর্মব্যস্ততা ও সবার অংশগ্রহণে দিনটি হয়ে উঠেছিল আনন্দময়। 'দুরন্ত-১৩' ব্যাচের সুর বাধা সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশই ছিল চড়ুইভাতি উৎসবের সারাংশ।