সময়কাল জানুয়ারি, ২০১৬। সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সংগঠন গবিসাসে কাজ করেন। তখনকার ছোট্ট রিফাত একদিন গবিসাসের সিনিয়রদের জানান, তার সহধর্মিণী এ ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব হয় কি না জানতে চেয়েছে!
তৎকালীন গবিসাস নেতৃবৃন্দ এটা শুনে ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেয়। রিফাতসহ গবিসাসের শাহীনুর, পলাশসহ কয়েকজনের কাঁধে পড়ে এ দায়িত্ব। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এ আয়োজনে যুক্ত হয়। ১৪ জানুয়ারি পিঠা উৎসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে স্টল তৈরি করা হয়। প্রথমবার হলেও কোনো কিছুতে কমতি ছিল না। দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে প্রতিটি স্টল পরিপূর্ণ ছিল। প্রায় ৪০টি স্টলে ভাপা, পোয়া, পাটিসাপটা, ঘর কন্যা, কুটুম, হাতকুলিসহ আরও অনেক নাম না জানা পিঠার সমারোহ ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রশাসনিক ব্যক্তিরা ও বাইরের অতিথিদের অংশগ্রহণে সরগরম হয়ে ওঠে পিঠা উৎসবের পুরো দিন। বিকালে বাউল সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়। এভাবে গবিসাসের হাত ধরে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠা উৎসবের সূচনা হয়। সবাই এ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আয়োজন সম্পর্কে শাহীনুর জানান, আমরা চেয়েছিলাম ক্যাম্পাসে নতুন কিছুর শুরু করতে। আরেক সদস্য পলাশ বলেন, ক্যাম্পাসে এখনো সুন্দরভাবে এ উৎসব হচ্ছে। এটাই সার্থকতা। রিফাতের মতে, বউয়ের খোঁচাতে হলেও ক্যাম্পাসে দারুণ একটা উৎসব এখনো চলমান। এমন অনেক ভালো কিছুতে ক্যাম্পাস পরিপূর্ণ হোক।
পরবর্তীতে ছাত্র সংসদের উদ্যোগে ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় এবং ২০২০ সালের ২ ফেব্রম্নয়ারি তৃতীয়বারের মতো ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এসব আয়োজনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নানা নামের, বাহারি পদের প্রায় ৫০-১০০ রকম পিঠা নিয়ে হাজির হয়। একদিকে পিঠা উৎসব, আরেকপাশে সাংস্কৃতিক পর্বে পুরো ক্যাম্পাসে কোলাহলমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
সর্বশেষ, গত বছরের ১২ জানুয়ারি চতুর্থবার পিঠা উৎসবের আয়োজন করে গবি প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফরিদা আখতার এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। ভিন্নধর্মী আয়োজনে প্রতিটি উৎসবই সফল হয়।