রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গ্রাফিক ডিজাইনার ও ইলাস্ট্রেটর হিসেবে নিজেকে একটি উচ্চতর অবস্থানে নিয়ে যাওয়া

নজরুল ইসলাম
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
গ্রাফিক ডিজাইনার ও ইলাস্ট্রেটর হিসেবে নিজেকে একটি উচ্চতর অবস্থানে নিয়ে যাওয়া

জনাব মাহবুব হাসান খানের জন্ম টাংগাইল শহরে। তিনি সেখানকার স্কুল-কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন খুলনা আর্ট কলেজে। পেইন্টিংয়ে বিএফএ (ব্যাচেলার অব ফাইন আর্টস) ডিগ্রি অর্জন শেষে তিনি গ্রাফিক ডিজাইনে এমএফএ (মাস্টার্স অব ফাইন আর্টস) ডিগ্রি নেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), ঢাকা থেকে। ডিজাইন এবং ইলাস্ট্রেশন বিষয়ে আগ্রহ থাকায় এই বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন বিগত ১০ বছর। ইভেন্টে ম্যানেজমেন্টের কাজে আছে তার বিশেষ আগ্রহ। শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে তিনি বাংলা দৈনিক পত্রিকা ও প্রথম আলোতে কাজ শুরু করেন মার্চ ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত। এখানে ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেশনের নানা কাজ তাকে আনন্দিত ও সমৃদ্ধ করেছে। এসব প্রসঙ্গে কথা বললেন জনাব মাহবুব হাসান খান।

ছবি আঁকার প্রতি বিশেষ আগ্রহ থাকার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করার পর ১৯৯২ সালে ভর্তি হন খুলনা আর্ট কলেজে। কৈশোরে সেই সব দিনগুলো ছিল অনেক আনন্দের। শিল্পী এস এম সুলতানের সান্নিধ্য পাই ১৯৯৩ সালে। শিল্পী এস এম সুলতান আন্তর্জাতিক মানের শিল্পী ছিলেন। তিনি খুলনা আর্ট কলেজে আসেন অংকন বিষয়ক কর্মশালার পরিচালনার জন্য। তিনি খুবই সাধারণ মানুষ ছিলেন। এরকম একজন গুণী মানুষের সান্নিধ্য পাওয়াটা ছিল অনেক সৌভাগ্যের। অংকন বিষয়ক কর্মশালায় আমি শিল্পী এস এম সুলতানের কাছ থেকে ড্রইং এবং ইলাস্ট্রেশনের অনেক কিছু শিখেছি।

আপনি অংকন এবং চিত্রায়ন ও গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে পড়েছেন। কাজ করছেন দেশের প্রথমসারির জাতীয় দৈনিকে। আপনার এই কাজের মাধ্যমে সামাজিকভাবে নিজেকে কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছেন?

দৈনিক পত্রিকায় কাজটা প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জের। প্রতিনিয়ত নতুন কিছু করতে হয়। নানা বিষয়ে কাজের সুযোগ থাকে। প্রথম আলো সারা বছর নানা ইভেন্টের আয়োজন করে। ইভেন্টের সাথে কাজ করার সুবাধে নানা বিষয়ে সৃজনশীল চিন্তার প্রতিফলন ঘটে এবং সামাজিক ভাবে এর দারুণ প্রভাব পড়ে।

তেলরং, জলরং, ভাস্কর্যেও আপনার দক্ষতা আছে, কিন্তু এ কাজগুলো কি আপনার পক্ষে সামাজিকভাবে কাজে লাগানো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্ভব?

অবশ্যই সম্ভব। আমি মনে করি একজন শিল্পী একটি প্রতিষ্ঠান। শিল্পীরাই পারে সমাজ পরিবর্তন করতে। তেলরং, জলরং, ভাস্কর্যের মাধ্যমেও সমাজের সুন্দর অবস্থান তৈরি করা সম্ভব।

গ্রাফিক ডিজাইনের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সফটওয়ার টেকনোলজি আসছে। এ কাজগুলো খুব দ্রম্নত আধুনিক ও স্মার্ট হচ্ছে। সেগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন কীভাবে?

এটা খুব মজার বিষয় এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমরা প্রতিনিয়ত আধুনিক থেকে অতি আধুনিক হচ্ছি। তাই নতুন নতুন টেকনোলজি আমাদের আরও আধুনিক করে তুলছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক সফটওয়ার টেকনোলজি আমরা খুব সহজেই আয়ত্ত করে ফেলতে পারছি।

\হআমাদের দেশে গ্রাফিক ডিজাইন ধারণাটি খুব সংকীর্ণ। একে বৃহত্তর পরিসরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের ব্যাপক কর্মপরিসর তৈরি হচ্ছে কি?

অবশ্যই তৈরি হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে ডিজাইনের ব্যবহার হচ্ছে ব্যাপকভাবে। তাই কর্ম ক্ষেত্রে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা তৈরি হচ্ছে।

আপনি ফটোসপ, ইলাস্ট্রেটর সফটওয়ার কতদিন ধরে ব্যবহার করছেন? এর শতভাগ পরিপূর্ণ ব্যবহার শিখতে কী পরিমাণ সময় লাগে?

প্রায় আনুমানিক ২০ বছর যাবৎ ফটোসপ, ইলাস্ট্রেটর সফটওয়ার ব্যবহার করছি। এখনও প্রতিদিনিই একটু একটু করে নতুন জিনিস শিখছি।

বিজ্ঞাপন বিভাগে শিল্পীদের বিশাল কর্মযোগ রয়েছে। কিন্তু সেখানে কি আশানুরূপ আয়ের সুযোগ রয়েছে?

গ্রাফিক ডিজাইন দেশে এবং বিদেশে কাজের অনেক চাহিদা আছে। এবং এখান থেকে আশানুরূপ আয় করা সম্ভব।

সাতরং, রে কমিউনিকেশন, মাইন্ড ম্যাপ, বি ডি ফাইব ছাড়াও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে আপনি ড়হ-পধষষ তাদের কাজ করেছেন। এ জায়গাগুলোতে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজের সুযোগ কেমন?

গ্রাফিক ডিজাইন এবং ইলাস্ট্রেশনে চাকরির বাইরেও অনেক কাজের সুযোগ আছে। স্বকর্ম (সেলফ এমপস্নায়েড) ছাড়াও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে ড়হ-পধষষ এই কাজগুলো হয়ে থাকে।

প্রথম আলো বাংলা ভাষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকাগুলোর একটি। এখানে কাজের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভিটি চর্চা করার কতটা স্বাধীনতা রয়েছে?

প্রথম আলো অনেক বড় মাপের সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠান। আমার সৌভাগ্য যে, আমি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত। এখানে কাজের অনেক ধরন রয়েছে। নান্দনিক ও সৃজনশীলতার অনেক সুযোগ রয়েছে। প্রথম আলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তনে বিশ্বাস করে। তাই সবসময় নতুন কিছু তৈরি এবং উদ্ভাবনে গ্রাফিক ডিজাইনারকে ক্রিয়েটিভিটি চর্চা করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়।

বাংলাদেশে যে কাজগুলো করছেন, শিখছেন সেগুলোর মাধ্যমে আপনার আত্মবিশ্বাস কতটা বেড়েছে? এই দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস কি বাংলাদেশের বাইরে কোনো কাজে লাগবে বলে আপনি মনে করেন?

আমি আশা করি আমার এই শিক্ষা এবং কাজের দক্ষতা দেশে যেমন কাজে লাগছে, ঠিক তেমনি করে দেশের বাইরেও তা সমানভাবে কাজে লাগাতে পারব।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

নিজেকে গ্রাফিক ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেটর শিল্পী হিসাবে একটি উচ্চতর অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাফিক ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেশন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আরও আধুনিক কিছু শিক্ষা দেওয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে