শৈশবে ফেরার একদিন
প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ঐশ্বী চক্রবর্তী
কেউ ব্যস্ত 'মার্বেল' খেলায়। কিছু মেয়েরা মিলে খেলছে 'কপাল টোক্কা' খেলা। পাশেই গুলতি দিয়ে নিশানা ঠিক করার খেলা চলছে। আবার চোখ বেঁধে 'হাটে হাড়ি ভাঙ্গা' খেলাও চলল কিছুক্ষণ। কয়েকজন আবার 'চোর, ডাকাত, পুলিশ, বাবু' খেলছে। ওদিকে আবার লুডো খেলায় ব্যস্ত কয়েকজন। এ যেন গ্রামীণ আর শৈশবের খেলার হাট বসেছে। কিন্তু যারা খেলছে, সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী। বলছিলাম নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার (এনইউবিটিকে) সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত 'জেএমসি ডে' উদযাপনের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী নানা আয়োজনেই স্মরণীয় করে রাখা হয় দিনটি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দ্রম্নত তৈরি হয়েই ছুটলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। সবাই মিলে আনন্দ করতে করতে একসঙ্গে ৯টার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিভাগ হিসেবে সাংবাদিকতা বিভাগই নতুন এই স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন আগ্রহ জন্মেছে, তেমনি স্মৃতির পাতায় যোগ হয়েছে স্মরণীয় একটি দিন। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরাই নয়, গ্রামীণ সব খেলায় যোগ দেন শিক্ষকরাও। সবাই ক্লাসরুমের গন্ডি পেরিয়ে যেন হারিয়ে গিয়েছিল নিজেদের শৈশবে। যেখানে নেই কোনো অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, ক্লাস কিংবা বাড়ির কাজ। এরই মধ্যে পেট জানিয়ে দিল দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেছে। একদম খোলা ময়দানে সবাই মিলে সেই ছোটবেলার মতো করেই বনভোজনের মতন দুপুরের খাওয়া হলো। এরপর শুরু হয় 'ম্যাজিক বক্স' খেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয় সব মিলে এক নতুন আবহের তৈরি হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় 'জেএমসি ডে'-এর ফরমাল আয়োজন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার রেজিস্ট্রার ডক্টর মো. শাহ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপিস্ননের প্রধান সারা মনামী হোসেন এবং আমাদের বিভাগের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মুস্তাফিজুর রহমান। জেএমসি ডে এর আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিভাগের প্রভাষক এমএম মুজাহিদ উদ্দীন। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট দিয়ে বরণ ও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভাগের ইনডোর ও আউটোর গেমসের পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার পাওয়ার পর ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় চারদিক। বিজয়ী ক্রেস্ট কিংবা ফুটবল, ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হাতে একের পর এক ক্লিক চলছে ক্যামেরা আর মোবাইল ফোনে। শুধু যেন ছবি নয়, ফ্রেমবন্দি করে নিচ্ছে সময়টা। আমিও সবার সঙ্গে ছবি আর আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলাম। কারণ, আবার এক বছরের অপেক্ষা করতে হবে এই দিনটি পেতে। আনন্দ করতে করতে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সন্ধ্যার কুয়াশা আমাদের জানান দিচ্ছে এখন বাসায় ফেরার পালা।