শীত হোক সব শিশুর জন্য সমান আনন্দদায়ক
মো. রাকিব
সরকারি সিটি কলেজ চট্টগ্রাম।
শীতের মৌসুমে প্রকৃতি ভরে উঠে হরেক রকমের সৌন্দর্যে। শীতের কুয়াশামাখা ভোরে গরম কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর সময়টা খুবই আনন্দ মুখর হয়ে থাকে। তবে এই শীত সবার জন্য সমান আনন্দদায়ক নয়। যেসব পথশিশু ফুটপাতে ঘুমায়, তাদের জন্য শীত আসলেই অভিশাপ রূপে আগমন করে। এই শীতে তারা ক্ষণে ক্ষণে গরম কাপড় বা কম্বলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। আমাদের সমাজে বিত্তবানদের ছড়াছড়ি অথচ পথশিশুদের এই কষ্ট দেখার মতো কেউ নেই। এটি আসলেই মানা যায় না, আপনি আরামে দশতলায় ঘুমাচ্ছেন আর আপনার দেশের শিশুরা শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমাদের উচিত, পথশিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণে এগিয়ে আসা।
সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে
ফাতেমাতুজ জোহুরা
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ।
শিশুদের অধিকার যেন আজ সবার মাঝে সোচ্চার কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে। পথশিশুদের দিকে তাকালে তাদের নানা করুণ চিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে। পথশিশুদের সেবা ও সাহায্য করা মহৎ ও পুণ্যময় কাজ। হযরত মহানবী (স.) বলেছেন, 'এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আলস্নাহ তাকে জান্নাতে পোশাক দান করবেন।' পথশিশুদের কাছে শীতকাল মানেই বিপদ। এক প্রকার লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। এই শীতে পথশিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণ করেই চুপ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। হাজার হাজার পথশিশুদের রাস্তায় জীবন কাটাতে হয়। তাদের নিদিষ্ট আশ্রয়ের ব্যবস্থা দিকে নজর দেওয়া জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবশ্যই সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। শুধু বস্তু, বাসস্থান নয়, শীতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ-চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ ছাড়া সরকার কর্তৃক বাজেট পথশিশুদের জন্য সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কিনা, এদিকে দায়িত্বশীলদের নজর দেওয়া একান্ত জরুরি।
পথশিশুদের পাশে দাঁড়াই
সাদিক ইবনে কাদের
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম।
এই শহরের পথে-ঘাটে অসহায় দুঃখী শিশুদের সংখ্যা অসংখ্য। বলতে গেলে প্রতিটি পথে ছন্নছাড়াভাবে পথশিশুদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অসহায়ত্বে জীবন পাড়ি দেয় তারা জীবনের নিয়মে। দেখুন, শীতের আগমন আমরা সবাই অনুভব করছি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার শীতের তীব্রতা অধিকতর হবে। আপনি আমি প্রচন্ড ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছি। কিন্তু পথশিশুরা কীভাবে কনকনে ঠান্ডা থেকে পরিত্রাণ পাবে? ভেবেছি কি আমরা তাদের কথা? আসুন, এই শীতে পথশিশুদের পাশে দাঁড়াই। নিজ স্বার্থ মতে, তাদের জন্য শীতবস্ত্র ইত্যাদি ক্রয় করে তাদের কে দেয়। সম্ভব হলে বিভিন্ন সংগঠনকে উৎসাহিত করি, শীতে পথশিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করতে।
পথশিশুদের মুখের হাসি ফোটাতে হবে
ঋতু দে
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম সিটি কলেজ।
'কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ' প্রবাদটি বোধ করি লেখক শীতকালকে দেখেই লিখে গেছেন। প্রবাদটির মতোই আমাদের জীবনে এর প্রকৃত অর্থ আমরা উপলব্ধি করতে পারি। শীতের মৌসুম এলেই আমাদের সমাজের উঁচু শ্রেণির লোকেরা চড়ুইভাতি, ভ্রমণ, শীতের পোশাকসহ নানা আয়োজন করে থাকে। অন্যদিকে পথশিশুরা শীতের মৌসুমে নিজেকে উত্তপ্ত রাখার জন্য দিনের সূর্যের আলোর ওপরই নির্ভর করে থাকে। রাতের বেলা বিভিন্ন মার্কেট বা দোকানের নিচে শুয়ে রাত্রিযাপন করতে চাইলেও বেশিরভাগ সময় সেই সুযোগও মেলে না। অনেক সময় ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে শক্ত কাগজ জড়িয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের একার পক্ষে কখনোই এই পথশিশুদের শীতের কষ্ট দূর করা সম্ভব নয়। তাই সম্মিলিত উদ্যোগে পথশিশুদের শীতবস্ত্র প্রদানের পাশাপাশি তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা উচিত। আসুন এই শীতে আমরা পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাই।
পথশিশুর পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব
মিশকাতুল জান্নাত
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ।
যেসব শিশুর নিজস্ব কোনো ঘরবাড়ি নেই, রাস্তায় ও পথে ঘুরে ঘুরে জীবন পার করে, তাদের পথশিশু বলা হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৬,০০,০০০-এর বেশি পথশিশু বসবাস করছে এবং ৭৫% ই রাজধানী ঢাকায় বসবাস করে। যার কারণে পথশিশুদের খাদ্য, বস্ত্র বিতরণ, কর্মক্ষেত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা হওয়া অনেক প্রযোজন। না হয় তারা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবে। খাদ্য, বস্ত্রের পাশাপাশি শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসা ও ওষুধ-পথ্যের ব্যবস্থা করার দিকে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং সরকারের পাশাপাশি জনসাধারণকে পথশিশুদের যতটুকু সম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। শীত থেকে বাঁচার জন্য তাদের শীতবস্ত্র দেওয়া এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব।
শীত মৌসুমে ভালো থাকুক পথশিশুরা
মরিয়ম খানম সেতু
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু অধিকাংশ পথশিশুর নেই কোনো নির্দিষ্ট বাসস্থান, সুষম খাবার। শিক্ষা? সে তো বহুদূর। পথশিশু শব্দটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মা-বাবা ছাড়া ছোট্ট জীবনের দায়ভার নেওয়ার জন্য নিরন্তর পথযাত্রায় এগিয়ে যাওয়া পথিক। যেখানে নেই তাদের কোনো নিরাপত্তা, নেই আদর-ভালোবাসা, নেই নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশা। শুধু আছে পেটের ক্ষুধা নিবারণের অবিরাম চেষ্টা। এই চেষ্টার যেন কোনো শেষ নেই। সকাল থেকে রাত অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরে, ফুল বিক্রি করে অথবা কাগজ কুড়িয়ে যতটুকু আয় করতে সক্ষম হয়, তা দিয়েই দিনটা পার করতে পারলেই যেন সব হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের দেশের দারিদ্র্য, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, যার ফলে সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। সুতরাং, আসুন, পথশিশুদের পাশে দাঁড়াই, শীত থেকে বাঁচাতে তাদের কথা ভাবার সময় বের করি।