শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে কীটনাশকের ব্যবহার কমছে মহাদেবপুরে

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
  ০৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

নওগাঁর মহাদেবপুরে চলতি বোরো মৌসুমে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছে কৃষকরা। ধান ক্ষেতে পোকা দমনে এ পদ্ধতি শতকরা ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ কার্যকর। ফলে কীটনাশকের ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় বোরো চাষিদের প্রতি একরে কীটনাশক খাতে খরচ কমেছে দেড় হাজার টাকারও বেশি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ২৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কৃষকরা ২৭ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকা দমন করেছেন কৃষকরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাদেবপুর সদর, উত্তরগ্রাম, খাজুর, হাতুড়, চাঁন্দাশ, সফাপুর, ভীমপুর, রাইগাঁ, চেরাগপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ধান ক্ষেতের মাঝে ১৫ থেকে ২০ হাত দূরে দূরে গাছের ডাল পোঁতা। সেখানে কিছুক্ষণ পর পর উড়ে এসে বসছে শালিক, ফিঙে, বুলবুলিসহ নানা জাতের পাখি। একটু পরপর ডাল থেকে জমির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে পাখিগুলো আর ক্ষেতের পোকা ধরে খাচ্ছে। যে জমিতে পোকা বেশি সেই জমিতে পাখির আনাগোনাও বেশি। এভাবে কীটনাশক ছাড়া সহজেই দমন হচ্ছে পোকা। পোকা দমনের এই পদ্ধতির নাম পার্চিং। পার্চিং ইংরেজি শব্দ। পাখি বসে এমন উঁচু ডাল বা খুঁটির নাম পার্চ। আর পার্চ থেকে পার্চিং নামের উদ্ভব। পার্চিং পদ্ধতি অত্যন্ত কম ব্যয়বহুল এবং পরিবেশবান্ধব। পার্চিং দুই প্রকার- ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং এবং ধইঞ্চা, কলা গাছ ইত্যাদি জীবন্ত পুঁতে দিলে তা হবে লাইভ পার্চিং। কীটনাশক ছাড়াই পোকা দমনের এই পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

উপজেলার ভীমপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, 'ধান লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে জমিতে ডাল পুঁতে দিয়েছি; ওই ডালে পাখি বসে পোকা ধরে খেয়ে ফেলে। ফলে জমিতে পোকা আক্রমণ করতে পারে না।' উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর বলেন, 'পার্চিং পদ্ধতির সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এতে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে।'

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, কৃষকদের মাঝে পার্চিং পদ্ধতি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার না করে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকদের ফসল উৎপাদনে খরচ কমে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ধান ক্ষেতে বেশি ক্ষতি করে মাজরা পোকা। একটি মাজরার মথ থেকে ২০০ থেকে ৩০০ বাচ্চার জন্ম হয়। শুধু একটি পাখির দ্বারা প্রতিমাসে কমপক্ষে দুই লাখের ওপরে পোকা ধ্বংস করা সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<91597 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1