কম বয়সে মা হচ্ছে ইলিশ!
জলবায়ুর প্রভাবে প্রজনন ও জীবনচক্র পাল্টাচ্ছে ইলিশ হ ৯৮ শতাংশ ছোট ইলিশের পেটে ডিম, রুপালি ইলিশের জাদুকরি স্বাদ, ইলিশ স্বাদে যেমন অতুলনীয়, পুষ্টি উপাদানেও ভরপুর
প্রকাশ | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আলতাব হোসেন
রুপালি রং। জাদুকরি স্বাদ। সরষে ইলিশ, ইলিশ পাতুড়ি, ইলিশ ভাজা, হরেক পদের রান্না, হরেক রকম স্বাদ। জাতীয় মাছ ইলিশের এক পদের তুলনা হতে পারে কেবল আরেক পদের সঙ্গেই। আর তা যদি পদ্মার ইলিশ হয় তাহলে তো কথাই নেই। ইলিশের সুঘ্রাণ শুধু বাঙালিকে নয়, ভূতকেও নাকি পাগল করে দেয়। বাঙালির বর্ষবরণ ইলিশ ছাড়া হয় না। ওপার বাংলায় জামাইষষ্ঠীতে তো ইলিশ লাগবেই। ইলিশ স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টি উপাদানেও ভরপুর। জলবায়ুর প্রভাবে প্রজনন ও জীবনচক্র পাল্টাচ্ছে ইলিশ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কম বয়সে মা হচ্ছে ইলিশ। সাগরে ধরা পড়া ইলিশের প্রায় ৯৮ শতাংশ ইলিশের পেটে ডিম পাওয়া যায়। এমনকি এক থেকে দুই শতাংশ ইলিশের পেট ডিমে ভরপুর থাকে।
ইলিশ বাঙালির প্রিয় খাবার। ইলিশ ভাজা, ইলিশের ভর্তা, সরষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, পান্তা ইলিশ, ইলিশের ডিম ছাড়া যেন বাঙালির রসনায় তৃপ্তি আসে না। ইলিশ মাছ স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টি উপাদানেও ভরপুর। ইলিশ যুগ যুগ ধরে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিরাপদ আমিষ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইলিশ দেশের জাতীয় সম্পদ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলছেন, ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ প্রথম। মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরের ভারত-মিয়ানমার, আরব সাগরের বাহরাইন-কুয়েত, পশ্চিম মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের পাশে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায়, মেকং অববাহিকার ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া, চীন সাগরের পাশে চীন ও থাইল্যান্ডে ইলিশের বিচরণ কমছে। আর বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর ১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। সংস্থাটির তথ্যে জানা যায়, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। ভারতে ৮ শতাংশ, মিয়ানমারে ৩ শতাংশ, আরব সাগর তীরবর্তী দেশগুলো এবং প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী দেশগুলোতে বাকি ইলিশ ধরা পড়ে। চার বছর আগেও এই উৎপাদনের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম বাংলাদেশ। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর-এই তিন মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, ইরানসহ আরও কয়েকটি দেশের উপকূলে ইলিশ ধরা পড়ে। তবে ডিম ছাড়ার জন্য তারা বেছে নেয় গঙ্গা অববাহিকার পদ্মা-মেঘনার বাংলাদেশকে।
ইলিশ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। মাত্র চার বছর আগেও এই উৎপাদনের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। বাংলাদেশে ইলিশের আহরণ প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ইলিশ আছে- বিশ্বের এমন ১১টি দেশের মধ্যে ১০টিতেই ইলিশের উৎপাদন কমছে। একমাত্র বাংলাদেশেই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট ইলিশের ৮৮ শতাংশের উৎস বাংলাদেশ। মাত্র চার বছর আগেও এই উৎপাদনের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। ইলিশের অভয়াশ্রম ও নানা কার্যকর পদক্ষেপের ফলে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন মৎস্য গবেষকরা। ইলিশের আকার ও স্বাদ বাড়ছে।
বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। দেশের মোট মাছের ১২ শতাংশের উৎপাদন আসে ইলিশ থেকে। যার অর্থমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। উৎপাদিত ইলিশের যেটুকু রপ্তানি হয় তাতে ১৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। প্রায় পাঁচ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ পরিবহণ, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
গত ১০ বছর আগে দেশের ২১টি উপজেলার নদনদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। বর্তমানে ১২৫ থেকে ১৩০টি উপজেলার নদনদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশে প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে ইলিশের অভয়াশ্রম। বাংলাদেশে ইলিশের জনপ্রিয়তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাদের কারণে পাশের দেশেও বাংলাদেশের ইলিশের কদর অনেক। বিশ্বব্যাপী এই রুপালি ইলিশের কদর রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফিশ সেন্টারের তথ্যমতে ২৫টি ভাষায় ইলিশের ১১০টি স্থানীয় নাম রয়েছে। এই মীনসন্তান নানা দেশে নানা নামে পরিচিত। তাই এক ইলিশের হরেক নাম। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বছরে প্রায় ৩৫ লাখ টন ইলিশ রপ্তানি হয়। অবশ্য এ জন্য দেশের মানুষ বড় ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন।
দেশের বাজারে বড় আকারের ইলিশের সরবরাহ বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা এবং জাটকা নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপের কারণে পাঁচ বছরের ব্যবধানে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। জেলেদের জালে দুই কেজি ওজনের ইলিশ আহরণ বেড়েছে। ২০১৯ সালে এই ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছে মোট ইলিশের ২২ শতাংশ। যা ২০২১ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বর্তমানে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ ৮৯ হাজার টন- যা এক দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণ।
ইলিশ মূলত নোনা পানির মাছ। তবে প্রজনন মৌসুমে ডিম পাড়তে নদীর উজানের দিকে আসে ইলিশ। ফলে দেশের বৃহৎ নদীসমূহ যথা পদ্মা, যমুনা, মেঘনা ইত্যাদি নদীতে ধরা পড়ে রুপালি ইলিশ। ইলিশ মূলত বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ ইলিশের উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। মাছের রাজা হিসেবে পরিচিত ইলিশ। ইলিশ মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ নামে এক ধরনের তেল রয়েছে- যা হৃদরোগসহ বেশ কিছু রোগের ওষুধ হিসেবে বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকটি মাছে এই তেল রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইলিশ মাছের সু্যপ অনেক দামে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি বছর অমাবস্যা পূর্ণিমার হিসাব মিলিয়ে মা ইলিশ রক্ষার জন্য ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে এই উদ্যোগ বড় ভূমিকা রেখেছে। মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করায় সাফল্য এসেছে। ইলিশের বড় হওয়ার জন্য অভয়াশ্রমগুলো বাড়ানো এবং সুরক্ষা দেয়াও ভূমিকা রেখেছে।
ইলিশে অন্যান্য মাছের তুলনায় স্যাচুরেট চর্বির পরিমাণ কম ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি (ইপিএ ও ডিএইচএ) অ্যাসিড বেশি থাকে- যা রক্তের ট্রাইগিস্নসারাইড কমিয়ে দ্রম্নত ভালো চর্বি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে হৃৎপিন্ড ভালো থাকে। রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন বি-১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস। ইলিশের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। এতে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। চর্বিসংক্রান্ত সব সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। ইলিশের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ৪০ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। ইলিশে থাকা ভিটামিন 'এ' রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ইলিশে ভিটামিন সি থাকে, যা ত্বক সুস্থ রাখে। এর কোলাজেন ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় ইলিশ পেটের সমস্যা যেমন আলসার ও কোলাইটিস ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। মানুষের মস্তিষ্কের ৬০ ভাগই চর্বি (ফ্যাট) থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ওমেগা-৩ ছাড়াও ইলিশে আছে ভিটামিন বি-১২- যা স্নায়ুকোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি কমায়। ইলিশ ভিটামিন 'ডি'র ভালো উৎস। ভিটামিন ডি মানবদেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। ইলিশে থাকা আয়োডিন, জিংক ও পটাশিয়ামের মতো বিভিন্ন খনিজ উপাদান রক্তের গস্নুকোজ নিয়ন্ত্রণে, কোষের সংক্রমণ কমাতে ও থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অবসাদের মোকাবিলা করতে পারে।
ইলিশের প্রজননের সময় বছরে তিন বার। ফেব্রম্নয়ারি-মার্চ, জুন-জুলাই ও অক্টোবর-নভেম্বর। সাধারণত জুন থেকে নভেম্বরে বড় ইলিশ ডিম ছাড়ে। তবে গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, জলবায়ুর প্রভাবে ছোট আকৃতির ইলিশ শীতের শেষে মার্চে ডিম ছাড়ছে। দেশে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও ইলিশের ডিম ধারণক্ষমতা আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। দুই থেকে তিন বছরে ৩৩ শতাংশ ধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে মা ইলিশ।
গভীর সাগরে জলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে। কয়েক বছর ধরে বড় ইলিশের দেখা মিলছে না। ছোট বাচ্চা ইলিশই বেশি ধরা পড়ছে। এর মধ্যে ছোট ইলিশের শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগের পেটেই মিলছে ডিম। মাত্র একশ' গ্রাম ওজনের ইলিশেও মিলছে পেটভর্তি ডিম। বড় ইলিশে যে স্বাদ তা ছোট ইলিশে মিলছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কম বয়সেই মা হচ্ছে ইলিশ। অপরিপক্ক ইলিশের পেটে ডিম পাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক দেখছেন গবেষকরা।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য গবেষকরা জানান, বৈশ্বিক জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সাগরে উষ্ণায়ন ছোট ইলিশকে অপরিপক্ব মা হিসেবে ডিম ধারণে অভ্যস্ত করছে। এ ছাড়া নদীতে সময়মতো পানি না থাকা, নাব্যতা বৃদ্ধি এবং স্রোত কমে যাওয়াসহ চর-ডুবোচরে চলাচলে বাধা প্রাপ্ত হওয়া, নদী ও সাগরের পানির অতিরিক্ত দূষণ, পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়াসহ নানা বিরূপ প্রভাবে ইলিশের জীবনচক্র বদলে যাচ্ছে। কম বয়সে ইলিশের মা হাওয়া নিয়ে গবেষণা চলছে বলেও তিনি জানান। ধরা পড়া সব ইলিশই মা। পুরুষ ইলিশ পাওয়া যায় না। ইলিশের লিঙ্গ পরিবর্তনসহ প্রজনন ইকোলজি বিষয়ে গবেষণা অব্যাহত আছে। নোনা পানির এ মাছটি ডিম ছাড়তে নদীর উজান বেয়ে উঠে আসে মিঠা পানিতে। ডিম ছাড়া হলে ভাটিতে ভাসে সাগরের পথে। ডিম ফুটে মাছ হওয়া জাটকাও ছোটে সাগরের দিকে। জীবনচক্র পূর্ণ করে ডিম ছাড়ার সময় হলে ফেরত আসে নদীর অগভীর পানিতে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭১ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে ইলিশ। ডিম ছাড়তে মাছটি ১২শ' কিলোমিটার সাঁতরায়। তবে বেশি গভীরতায় সাঁতরাতে সুবিধা হয় ইলিশের। সাঁতরাতে সাঁতরাতেই মাছটি ডিম ছাড়ে। একেকটি মা ইলিশ ডিম ছাড়ে প্রায় ২০ লাখ পর্যন্ত। গবেষকরা জানান, প্রজনন ঋতুতে ইলিশ খাদ্য গ্রহণ করে না। ইলিশ ৫০ ফুটের বেশি পানির গভীরতা পছন্দ করে। নদীতে এসে ইলিশ ডিম ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়। ভালো পরিবেশ পেলে পেটে জমা থাকা পরিপক্ব ডিমের শতকরা ৬৫-৭০ ভাগ ছেড়ে দেয়। অবশিষ্ট ডিম অনেক সময় তিন থেকে পাঁচ মাসের ব্যবধানেও ছাড়তে পারে। তবে পরিবেশের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যেও দ্বিতীয়বার ডিম ছাড়তে পারে। অক্টোবরেই সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে ইলিশ। ইলিশ মাছ সাধারণত ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বড় ইলিশের ওজন হয় আড়াই কেজি পর্যন্ত। কয়েক মাসেই আকারে বড় হয় স্ত্রী ইলিশ।