নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে পূরণ হতে পারে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ
প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদ হোসেন
নবায়নযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি হলো এমন শক্তির উৎস- যা স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পুনরায় ব্যবহার করা যায় এবং এর ফলে, শক্তির উৎসটি নিঃশেষ হয়ে যায় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস যেমন: সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ু প্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈব শক্তি, ভূ-তাপ, সমুদ্র তরঙ্গ, সমুদ্র-তাপ, জোয়ার-ভাটা, শহুরের আবর্জনা, হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ইত্যাদি নবীনকরণযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। পৃথিবীতে নবায়নযোগ্য বিদু্যতের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ মানুষের বিদু্যতের চাহিদার ৮৫ শতাংশ নবীনকরণযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি থেকে পূরণ হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে পূরণ হতে পারে আগামী দিনের নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহ।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাদের বিদু্যতের চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। নবীনকরণযোগ্য শক্তিসমূহ পরিবেশবান্ধব এবং কার্বন নিঃসরণমুক্ত। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং একটি টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থায় পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী আন্দোলনসমূহ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে উৎসাহ অব্যহত রেখেছে। সময় হয়েছে, পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিদু্যতের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্প উৎস খুঁজে বের করতে হবে। সৌরবিদু্যৎ, জলবিদু্যৎ, বায়ুবিদু্যৎ ইত্যাদি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস পরিবেশবান্ধব ও টেকসই। নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে নবায়নযোগ্য শক্তির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। সৌর, বায়ু ও জলবিদু্যতের মতো নবায়নযোগ্য উৎসগুলো টেকসই ও পরিবেশবান্ধব বিদু্যৎ সরবরাহ করতে পারে- যা শহরগুলোকে ক্রমবর্ধমান বিদু্যতের চাহিদা পূরণে এবং পরিবেশগত দূষণ কমাতে সাহায্য করবে।
নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী বাড়ছে বিদু্যৎ উৎপাদনের খরচ। দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। খরচ কমাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বাড়ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক উৎস- সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ু প্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈবশক্তি, শহরে বর্জ্য ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহার করে বিদু্যৎ উৎপাদনে। ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য শক্তি হবে বিদু্যতের প্রধান উৎস ও চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে নবায়নযোগ্য শক্তির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সৌর, বায়ু, বায়োগ্যাস, বায়োমাস এবং জলবিদু্যতের মিশ্রণ ভবিষ্যতের পথ দেখাতে পারে। যেখানে শহরগুলো শক্তির চাহিদায় স্থিতিস্থাপক, পরিবেশবান্ধব ও স্বনির্ভর। টেকসই নীতি গ্রহণ করে শহরাঞ্চল আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিতে পারে নবায়নযোগ্য শক্তি। শক্তির উৎসগুলোর মধ্যে সৌরশক্তি বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের জন্য একটি আশাপ্রদ ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সারা বছর প্রচুর পরিমাণে সূর্যালোক পাওয়া যায়- যা সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ানোর একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। ছাদে, পাবলিক স্পেসে সৌর প্যানেল স্থাপন এবং শহুরে অবকাঠামোর সঙ্গে একীভূত করার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সৌরসম্পদ কাজে লাগানো সম্ভব। উপকূলীয় শহরগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ উপকূলীয় বাতাসকে কাজে লাগিয়ে পরিষ্কার ও টেকসই বিদু্যৎ উৎপাদন করা সম্ভব। উদ্ভাবনী নকশা, যেমন উলম্ব অক্ষ বায়ু টারবাইন, শহুরে পরিবেশের জন্য কার্যকর সমাধান প্রদান করতে পারে, যেখানে স্থান সীমাবদ্ধতা এবং নান্দনিক বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বায়োমাস ব্যবহারের উলেস্নখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে শহুরে প্রেক্ষাপটে। বর্জ্য-থেকে-শক্তি প্রযুক্তি, যেমন পোড়ানো এবং গ্যাসীকরণ, শহুরে জৈব বর্জ্যকে তাপ ও বিদু্যতে রূপান্তরিত করা সম্ভব। এ প্রযুক্তিগুলো গ্রহণের মাধ্যমে, শহরগুলো ল্যান্ডফিলের ওপর চাপ কমাতে পারে এবং একই সঙ্গে পুনর্নবীনকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনে অবদান রাখতে পারে।
বিদু্যৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো বহুলাংশে গ্যাসের ওপর নিভর্রশীল, যদিও বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হলে আমাদের আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর নির্ভর করতে হবে- যা বিশ্বের বর্তমান মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যয়বহুল। তাই বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তি। বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন বিদু্যতের। এছাড়াও রয়েছে পানিবিদু্যৎ, বায়ুবিদু্যৎ, বায়োগ্যাস, ধানের তুষ, আখের ছোবড়া, বর্জ্য, শিল্পপ্রক্রিয়ার অব্যবহৃত তাপ হতে উৎপাদিত বিদু্যৎ ইত্যাদি।
সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা নবায়ণযোগ্য জ্বালানির দিকে নজর দিতে সরকারকে জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। এদিকে সরকারও নানা উদ্যোগ আর একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে জ্বালানির চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে। গড়ে প্রতি বছর ২.৩ ভাগ হারে জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে; এর মধ্যে ৮৬.৪ ভাগ আসে জীবাশ্ম থেকে আর বাকি ১৩.৬ ভাগ আসে অ-নবায়নযোগ্য উৎস থেকে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে ক্রমেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। বাংলাদেশে জ্বালানির মূল উৎস প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজ তেল ও কয়লা। পেট্রোবাংলার শেষ জরিপে জানা গেছে, দেশে গ্যাসের মজুতের পরিমাণ ২০.৭ ট্রিলিয়ন ঘনফুট- যার মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে ১২.৪১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। অপরদিকে, কয়লার মজুত রয়েছে তিন হাজার ৩০০ মিলিয়ন টন। জ্বালানি তেলের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি আমদানির ওপর নিভর্রশীল- যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ভবিষ্যতে জ্বালানির চাহিদা পূরণের জন্য নবায়নযোগ্য উৎসের কোনো বিকল্প নেই। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে নিভর্রতা কমিয়ে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাওয়ার এখনই সময়। আজকের আধুনিক জীবন যেমন যন্ত্র ছাড়া অবান্তর, তেমনি জ্বালানি ছাড়া যান্ত্রিক সভ্যতা অসম্ভব। বিশ্ব আজ জীবাশ্ম-জ্বালানি নিভর্রতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। যার পেছনে রয়েছে মূলত তিনটি কারণ; অনিশ্চিত জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবেশ দূষণ এবং তেলভিত্তিক ভূ-রাজনীতি। বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য শক্তিকেই ভবিষ্যতের সমাধান ভাবা হচ্ছে। পরিবেশকে বাঁচিয়ে বিদু্যতের চাহিদা মেটাতে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী রূপান্তরযোগ্য জ্বালানির পথেই হাঁটছে বিশ্ব।
বিদু্যৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও ভারত থেকে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে তিন শতাংশ বিদু্যৎ উৎপাদন করে, যেখানে ভারতে তার মোট বিদু্যৎ উৎপাদন ক্ষমতার ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। যা প্রায় ৯০ হাজার ৩৯৯ মেগাওয়াট। দেশটির মোট বিদু্যৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১৯৯ মেগাওয়াট। অন্যদিকে, পাকিস্তানের মোট বিদু্যৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৭ হাজার ৪০২ মেগাওয়াটের বিপরীতে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাঁচ শতাংশ (এক হাজার ৮৭০ মেগাওয়াট) উৎপাদন করে। নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো বর্তমানে বিশ্বের বিদু্যতের ২৬ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে, তবে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) এর মতে ২০২৪ সালে এর শেয়ারের পরিমাণ ৩০ শতাংশে পৌঁছবে বলে আশা করছে।
২০৫০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি কার্বনমুক্ত হবে এটি তার পরিকল্পনার অংশ। নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো ব্যবহারের উদ্দেশ্য হলো পরিবেশের ওপর কয়লা, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির প্রভাব কমানো। এ ধরনের সুবজ শক্তির ব্যবহার বেছে নেওয়ার ফলে কেবল দীর্ঘমেয়াদি ব্যয় সাশ্রয় হবে না, সঙ্গে সঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানি দূষণের বিপদ থেকে বায়ুমন্ডলকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বের অধিকাংশ দেশই নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে এগিয়ে যাচ্ছে। জলবাযু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। এতে নবায়নযোগ্য শক্তি দিনের পর দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিবেশবান্ধব শক্তি এবং কার্বন নিঃসরণমুক্ত উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক চাপে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি, রাশিয়া ও ভারত বিশ্বের সব থেকে বেশি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিশ্বের সব থেকে বড় জলবিদু্যৎ কেন্দ্র রয়েছে চীনে। বর্তমানে ভারতে পৃথিবীর সব থেকে বড় সোলার পাওয়ার পস্ন্যান্ট রয়েছে- যা ৬৪৮ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি হবে আগামীর চালিকাশক্তি।
বিদু্যৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে তিন শতাংশ বিদু্যৎ উৎপাদন করে, যেখানে ভারত উৎপাদন করে তার মোট বিদু্যৎ উৎপাদন ক্ষমতার ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ- যা প্রায় ৯০ হাজার ৩৯৯ মেগাওয়াট। অন্যদিকে, পাকিস্তানের মোট বিদু্যৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৭ হাজার ৪০২ মেগাওয়াটের বিপরীতে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাঁচ শতাংশ (এক হাজার ৮৭০ মেগাওয়াট) উৎপাদন করে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো বিদুৎতের চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ঝুঁকছে। বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি উৎসের মধ্যে সৌর শক্তি সবচেয়ে সম্ভাবনাময়; পাশাপাশি রয়েছে বায়োগ্যাস ও বায়োমাস। এছাড়া বাংলাদেশে বায়ু বিদু্যতের সম্ভাবনাও বেশ ভালো। পানি থেকে বিদু্যৎ, সোলার পিভি ব্যবহার করে সৌর বিদু্যৎ, বায়ু বিদু্যৎ পৌর বর্জ্য থেকে বিদু্যৎ, গোবর ও পোল্ট্রি বর্জ্য ব্যবহার করে বায়োগ্যাস। আরও সম্ভাবনার জায়গা হলো বাতাসের গতি, ধানের তুষ, আখের ছোবড়া, বর্জ্য, শিল্ট প্রক্রিয়ার অব্যবহৃত তাপ থেকে বিদু্যৎ ও জ্বালানি উৎপাদন।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস, যেমন- সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ুপ্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈবশক্তি, ভূ-তাপ, সমুদ্রতরঙ্গ, সমুদ্র-তাপ জোয়ার-ভাটা, শহরের ময়লা-আবর্জনা, হাইড্রোজেন ফুয়েল নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। সভ্যতার বিদু্যৎ ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এত দিন ব্যবহার করে আসা জীবাশ্ম জ্বালানির বিপরীতে নবায়নযোগ্য শক্তি বর্তমানে বিশ্বে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অধিকাংশ দেশ তাদের বিদু্যৎ ও জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
গৃহস্থালিতে পরিত্যক্ত পচনশীল বর্জ্য, গোবর, প্রাণীর মলমূত্র, কৃষিজ ফসলের অবশিষ্টাংশ বাতাসের অনুপস্থিতিতে গাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়োগ্যাস নামে এক ধরনের জ্বালানি গ্যাস তৈরি করা সম্ভব। বায়ুশক্তির সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে বিদু্যৎ উৎপাদন করা যায়। বাইরের দেশগুলোতে বায়ুর সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করার প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বে প্রতি বছর বিদু্যৎ উৎপাদন ৩০ শতাংশ হারে বাড়ছে। বর্তমানে জ্বালানি সংকটের সময় বিদু্যতের চাহিদা পূরণে অবদান রাখছে সৌর বিদু্যৎ। কারখানার ছাদে বসানো সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পাওয়া বিদু্যতে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ অনেক উদ্যোক্তা। এছাড়া সেচ মৌসুমে কমখরচে ফসলের ক্ষেতে পানি দেয়ার ক্ষেত্রেও ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সৌর বিদু্যৎ চালিত সোলার পাম্প। যা কৃষি অর্থনীতিতে খুলে দিচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি যেহেতু সীমিত, তাই ভবিষ্যতের জ্বালানি ব্যবস্থা নির্ভর করবে নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর।