ভেঙে পড়েছে মাটির স্বাস্থ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় চ্যালেঞ্জ
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাটি সুরক্ষা জরুরি
প্রকাশ | ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০
প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, একই জমিতে বছরে একাধিকবার ফসল উৎপাদন ও মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের মোট আবাদি জমির সাড়ে ৭২ শতাংশে জৈব ঘাটতি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। উর্বরা শক্তি হারাচ্ছে মাটি। ফসল উৎপাদনের জন্য সুষম মাটিতেই পাঁচ শতাংশ জৈব পদার্থ থাকা প্রয়োজন। অথচ দেশের অধিকাংশ এলাকায় জৈব পদার্থের উপাদান এক শতাংশেরও নিচে নেমে গেছে। এতে ভেঙে পড়ছে মাটির স্বাস্থ্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।
মাটি হচ্ছে কৃষির মূল ভিত্তি। উপযুক্ত মাটি না হলে অর্থাৎ ফসলের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ মাটি না হলে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাওয়া যায় না। মাটি এক জীবন্ত সত্তা। তাই মাটিরও ভালো বা মন্দ লাগা আছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বাড়তি খাদ্য চাহিদা মেটাতে গিয়ে একই জমিতে বর্তমানে তিন থেকে চারবার একই ধরনের ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে উচ্চফলনশীল অথবা হাইব্রিড জাতের ফসল। এসব ফসল মাটি থেকে বিপুল পরিমাণ পুষ্টি উপাদান শোষণ করছে। উপরিভাগের উর্বর মাটি ব্যবহার হচ্ছে ইটভাটা ও উন্নয়ন কাজে। ফলে জমি হারাচ্ছে স্বাভাবিক উৎপাদনক্ষমতা। কাজেই মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতি জরুরি। মাটিতে বিনিয়োগ অত্যন্ত লাভজনক। মাটিতে এক মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করলে পাঁচ মার্কিন ডলার প্রতিদান পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় এক হাজার ২শ' জন বসবাস করে যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। বিপুল জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা (যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন) দাঁড়িয়েছে। আগামী ২০ বছরে ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণের বেশি করতে হবে। বাংলাদেশে নিট ফসলি জমি এক কোটি ৯৬ হাজার একর। যা আগামী দিনের খাদ্য উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে শস্যের একর প্রতি উৎপাদন অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া নতুন ঘরবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট তৈরি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য কাজে আবাদযোগ্য জমি বছরে প্রায় ৬৯ হাজার হেক্টর কমে যাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ৪৫ শতাংশ খনিজ বা মাটির কণা, ৫ শতাংশ জৈব এবং ২৫ শতাংশ করে পানি ও বাতাস থাকা মাটিকে সুষম মাটি বলা হয়। একটি আদর্শ জমিতে জৈব পদার্থের মাত্রা ৩.৫ শতাংশ থাকা অতি প্রয়োজনীয় হলেও দেশের বেশিরভাগ জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ এক দশমিক ১৭ শতাংশ এবং কিছু কিছু জমিতে এর পরিমাণ ১ শতাংশের চেয়েও কম? এর মধ্যে ৫৪ লাখ হেক্টর জমিতে ফসফরাস, ২৬ দশমিক ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে পটাশিয়াম, ৩৩ দশমিক ৩০ লাখ আট হাজার হেক্টর জমিতে গন্ধক, ২৭ দশমিক ৭ লাখ হেক্টর জমিতে দস্তা সার, ২৩ দশমিক ৯ লাখ হেক্টর জমিতে বোরন সারের অভাব রয়েছে? এছাড়া অনেক জমিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব। মাটির পুষ্টি উপাদান হ্রাস, মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি, মাটির অম্স্নস্নতা বৃদ্ধি, ভূমিক্ষয়, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতা, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ভারী ধাতু দূষণ ইত্যাদি ভূমির অবক্ষয়ের প্রধান কারণ। একদিকে জনসংখ্যার চাপ, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলাবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ইত্যাদি এখন দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ভূমির অবক্ষয় রোধে করণীয় হচ্ছে অধিক হারে বৃক্ষ রোপণ ও বনায়ন করা, শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা। জমিতে পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা। জমিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তনে জৈব সার ব্যবহার করা। টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। উষ্ণ আবহাওয়া সহনশীল প্রযুক্তি যথা খরা বা অতি তাপমাত্রা সহনশীল, কম পানি লাগে ও অল্পজীবনকাল সম্পন্ন শস্যের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য লবণাক্ত সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবন করা। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা, যাতে বিরূপ ও রুক্ষ্ন আবহাওয়ায় অতি অল্পসময়ে চাষাবাদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়- এমন ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। মাটির স্বাস্থ্য যাতে শস্য উৎপাদান উপযোগী থাকে ও এলাকাটিতে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা। খরা প্রবণ অঞ্চলে জনপদ ধরে রাখার জন্য আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম জোরদার করা ও পরিবেশ উন্নত রাখা। স্থানীয় টেকসই প্রযুক্তিসমূহের সম্প্রসারণ। ভূমি অবক্ষয় বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ভূমি অবক্ষয় মোকাবিলায় সরকার, সুশীলসমাজ ও ব্যক্তি পর্যায়ে অংশগ্রহণ জোরদার করা।
দেশে সব ধরনের আবাদি, বনভূমি, নদী, লেক, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সুন্দরবন ইত্যাদি এলাকা মিলিয়ে দেশে কৃষিজমির মোট জমির পরিমাণ ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে। যা মোট ফসলি জমির ৭৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। ফসল উৎপাদন মাটির স্বাস্থ্যের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। মাটি হচ্ছে কৃষির মূল ভিত্তি। উর্বর মাটি না হলে ভালো ফসল উৎপাদন হয় না। তাই সুষম মাটিতে ৫ শতাংশ জৈব উপাদান থাকার কথা। সাধারণত ৪৫ শতাংশ খনিজ বা মাটির কণা, ৫ শতাংশ জৈব এবং ২৫ শতাংশ করে পানি ও বাতাস থাকা মাটিকে সুষম মাটি বলা হয়। একটি আদর্শ জমিতে জৈব পদার্থের মাত্রা ৩.৫ শতাংশ থাকা অতি প্রয়োজনীয় হলেও এ দেশের বেশিরভাগ জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ এক দশমিক ১৭ শতাংশ এবং দেশের কোথাও কোথাও এর পরিমাণ ১ শতাংশের চেয়েও কম? মাটিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারে দেশের মোট আবাদযোগ্য জমিতে জৈব পদার্থের মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
কৃষিবিদ আব্দুল আজিজ যায়যায়দিনকে বলেন, দেশের অধিকাংশ কৃষকই বেশি ফসলের জন্য ইউরিয়া, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার ব্যবহার করেন। অপরিমিত ও মাত্রাতিরিক্ত সার ব্যবহারে মাটির উর্বরা গুণাগুণ হারিয়ে যাচ্ছে। ধাতব পদার্থের কারণে দূষিত হয়ে পড়ছে দেশের উর্বর মাটি। আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, সিসা, নিকেল হচ্ছে ভারী ধাতব পদার্থ। অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস হওয়ায় মাটির উবর্রতা শক্তি হারাচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষিবিদরা জানান, বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকরা অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেন। মাত্রাতিরিক্ত সারের ব্যবহারে হারিয়ে যাচ্ছে জমির উর্বরা শক্তি? এতে চাষের খরচ বাড়ছে আবার পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। নাইট্রোজেন যদি ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশে যায়, তাহলে তা মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিশুদের মৃতু্যঝুঁকিও থাকে। আবার জমিতে ফসফরাস বেশি দেওয়া হলে তা বৃষ্টির পানিতে বা বন্যায় খাল-বিলের পানিতে মিশে যায়। এর ফলে প্রায়ই মাছ মারা যেতে দেখা যায়। অর্থাৎ অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ফলে তা ঝুঁকি তৈরি করছে। জমির উর্বরা শক্তি ঠিক রাখতে প্রয়োজন নানা ধরনের ফসল চাষ? সুষম ইউরিয়া সার এবং জৈব সারের ব্যবহার বাড়ালে মাটি আবার ফিরে পাবে তার উর্বরা শক্তি।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করে রেখে যাওয়ার অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে মাটি ও পানির গুরুত্ব অপরিসীম। খাদ্যের শতকরা ৯৫ ভাগ উৎপাদিত হয় ভূমিতে, যেখানে মাটি ও পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ ক্রমাগতভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। তাই উন্নত জাত ও ফসল নিবিড়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিক খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। মাটির প্রতি যত্নশীল না হলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে।
কৃষিনির্ভর সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতি মূলত কৃষি ও মাটির ওপর নির্ভরশীল। আয়তনে ছোট, ঘনবসতি ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দেশ হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ দানাদার খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে পরিচিত। এর মূল কারণ হলো আমাদের দেশের সোনাফলা উর্বর মাটি। তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনায় মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করা। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে জমির উর্বরতা হ্রাস পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর সীমিত জমি থেকেই খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। কিন্তু মাটি তার উর্বরা শক্তি হারিয়ে ফেললে খাদ্য উৎপাদনে ভাটা পড়বে এবং বর্ধিত খাদ্য উৎপাদনে দারুণ সংকট দেখা দেবে। কাজেই এ সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে মাটির পরিবেশ এবং তার উর্বরতা সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য রাসায়নিক সারের ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে মাটিতে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। এটা করা সম্ভব না হলে বিপর্যয় অনিবার্য, সেটা ভবিষ্যতে বা সুদূর ভবিষ্যতে।
কৃষিবিদ ডক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, উর্বরা শক্তি ফিরিয়ে আনতে চাষে ভিন্নতা আনতে হবে। একবার ধান করলে পরের বছর ডাল জাতীয় ফসল করতে হবে। আবার দুই ফসল উৎপাদনের পর জমিকে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। জৈব পদার্থের উৎস্য বাড়াতে হবে। মাটির প্রতি যত্নশীল না হলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা বজায় রেখে অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে। মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার পরিহার করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাটির সুস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাবার প্রয়োজন তেমনি সব গাছেরও খাবারের প্রয়োজন হয়।
কৃষিবিদ ডক্টর শহীদুল ইসলাম বলেন, ফসল উৎপাদনের সঙ্গে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনক্ষমতার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। মাটির উর্বরতা বলতে ফসল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানসমূহ সরবরাহের ক্ষমতাকে বোঝায়। অর্থাৎ মাটিকে তখনই উর্বর বলা হবে, যখন তাতে কোনো উদ্ভিদের পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান সঠিক পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। অনুর্বর মাটিতে ফসলের ফলন হয় কম, আর উর্বর মাটিতে ফলন হয় আশাব্যঞ্জক। সুতরাং অধিক উৎপাদন পেতে হলে মাটির উর্বরা শক্তি বজায় রাখতে হবে। জৈব পদার্থ হচ্ছে মাটির প্রাণ। মানবদেহে রক্তের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, মাটিতে জৈব পদার্থের গুরুত্বই তেমন। তাই বিভিন্ন জৈব সার যেমন গোবর, খামারজাত সার, কম্পোস্ট, বসতবাড়ির আশপাশের পচা আবর্জনা সার, খৈল, সবুজ সার, ছাই, খড়-নাড়া, কচুরিপানা, পচা পাতা ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে মাটিকে জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ করে উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করা যায়।