ক্যাপসিকাম বারো মাসের সবজি। লঙ্কা প্রজাতির এই সবজিটির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ক্যাপসিকাম ছাড়া রান্না প্রায় হয় না বললেই চলে। ক্যাপসিকামে ভিটামিন এ এবং সি প্রচুর পরিমাণে থাকে। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এতে ফাইবার, আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ উচ্চ পরিমাণে রয়েছে আর ক্যালরির পরিমাণ সামান্য থাকে। এছাড়া ক্যাপসিকাম বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনাও রয়েছে।
ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এর আকার-আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরুত্ব হয়। এটি আমাদের দেশের প্রচলিত সবজি না হলেও ইদানীং এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। তবে সারা বিশ্বে টমেটোর পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ। মিষ্টি মরিচ অত্যন্ত মূল্যবান সবজি। প্রচুর ভিটামিন 'সি' থাকার কারণে এবং অতি সহজেই টবে চাষ করা যায় বলে দেশের জনসাধারণকে মিষ্টি মরিচ খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। মিষ্টি মরিচ চাষের জন্য দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি ভালো। মিষ্টি মরিচ খরা ও গোড়ায় পানি জমা কোনটিই সহ্য করতে পারে না।
আমাদের দেশে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বেল পেপার। এ নামে অবশ্য খুব বেশি মানুষ এটিকে চিনবে না। কিন্তু যদি ক্যাপসিকাম বা সিমলা মরিচ বলা হয় তাহলে সবাই চিনবেন। মরিচ নাম হলেও এটি আসলে একটি সবজি। মাছ, মাংস, সবজি, সালাদ সবকিছুতেই এর ব্যবহার রয়েছে। সবুজ, লাল ও হলুদ রংসহ বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম এখন কিনতে পাওয়া যায় কাঁচাবাজার ও সুপারশপগুলোয়। তবে একটু চেষ্টা করলে বারান্দা কিংবা ছাদের টবে খুব সহজেই বেল পেপার বা ক্যাপসিকাম চাষ করা যায়। লাল ও হলুদ রঙের বেল পেপার বা ক্যাপসিকাম হয়ে থাকে। ক্যাপসিকামের কয়েকটি উন্নত মানের জাত হলো ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ান্ডার, ইয়েলো ওয়ান্ডার এবং হাইব্রিডের মধ্যে রয়েছে ম্যানহাটন, অনুপম ভারত, রতন, মহাভারত, মানহেম-৩০১৯, মানহেম-৩০২০ প্রভৃতি।
যাদের বাগান করার শখ আছে বা বাগান করছেন ইতিমধ্যে, তারা বাড়িতেই ক্যাপসিকাম চাষ করতে পারেন। এতে একই সঙ্গে বাগানের আবেশে পরিবর্তন আসবে এবং তাজা ক্যাপসিকাম খাওয়াও হবে। ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় সবজি। ক্যাপসিকামে ভিটামিন এ এবং সি প্রচুর পরিমাণে থাকে। এটি আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এতে ফাইবার, আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ উচ্চ পরিমাণে রয়েছে আর ক্যালরির পরিমাণ সামান্য। ক্যাপসিকামের আকার-আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। এটি আমাদের দেশের প্রচলিত সবজি না হলেও সম্প্রতি এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে টমেটোর পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম। এটি অভিজাত হোটেল ও বিভিন্ন বড় বড় মার্কেটে বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনাও রয়েছে প্রচুর।
বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। তবে বর্তমানে ঘরোয়া কৃষকরা ১২ মাসই এটি চাষের চেষ্টা করছেন। ক্যাপসিকাম উৎপাদনের জন্য আদ্রতা কম আছে এমন পরিবেশ সবচেয়ে উপযোগী। বীজ বপনের ৭-১০ দিন পর চারার ৩-৪ পাতা হলে মাঝারি আকারের পলিথিন ব্যাগে চারা স্থানান্তর করতে হবে। এরপর মূল জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। এরপর বেড তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিটি বেড চওড়া ২.৫ ফুট রাখতে হয়। দুই বেডের মাঝখানে নালা রাখতে হবে। সাধারণত ৩০ দিন বয়সের চারা তৈরি করা বেডে ১.৫ ফুট দূরে দূরে লাইনে রোপণ করা হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায় বলে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে রাখলে ভেতরের তাপমাত্রা বেশি থাকে।
প্রতি শতক জমির জন্য গোবর ৪০ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ১.৪ কেজি, এমওপি ১ কেজি, দস্তা ২০ গ্রাম এবং জিপসাম ৪৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়। এর মধ্যে অর্ধেক গোবর সার জমি তৈরির সময়, বাকি অর্ধেক গোবর সম্পূর্ণ টিএসপি, দস্তা, জিপসাম, ১/৩ ভাগ এমওপি এবং ১/৩ ভাগ ইউরিয়া চারা রোপণের গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ২/৩ ভাগ ইউরিয়া এবং এমওপি পরবর্তী সময়ে দুইভাগ করে চারা রোপণের ২৫ এবং ৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। মিষ্টি মরিচ পরিপক্ক সবুজ অবস্থায় লালচে হওয়ার আগেই মাঠ থেকে উঠানো যায়। সাধারণত সপ্তাহে একবার গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। ফল সংগ্রহের পর ঠান্ডা অথচ ছায়াযুক্ত স্থানে বাজারজাতকরণের পূর্ব পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হয়। তবে ফল সংগ্রেহর সময় প্রতিটি ফলে সামান্য পরিমাণে বোটা রেখে দিতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে, ক্যাপসিকামের পাতায় যেন রোগের উপদ্রব না হয়। সাধারণত, দুই ধরনের রোগ দেখা যায় ক্যাপসিকামে। এর একটি হলো পাতা কুঁকড়ে যাওয়া আর অন্যটি হলো পাতায় কালো দাগ হওয়া। জাব পোকা দলবদ্ধভাবে পাতার রস চুষে খায়, এ কারণে পাতা কুঁকড়ে যায়। এ থেকে রক্ষা পেতে নিম বীজের দ্রবণ অথবা সাবান পানি স্প্রে করা যেতে করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ লিটার পানিতে দুই চা-চামচ গুঁড়ো সাবান গুলিয়ে ব্যবহার করতে হবে। পাতার কালো দাগ ক্যাপসিকামের ফলন কমিয়ে দেয়, এমনকি গাছও মেরে ফেলে। সে ক্ষেত্রে এক লিটার পানিতে দুই গ্রাম ব্যাভিস্টিন গুলিয়ে ১৫ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে। ক্যাপসিকাম চাষ করার জন্য বাজার থেকে কেনা ক্যাপসিকাম থেকেই বীজ সংগ্রহ করতে পারেন। আবার বাজারে বীজ কিনতেও পাওয়া যায়।