শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সূর্যমুখী হতে পারে স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেলের প্রধান উৎস্য

জটিল ব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে খুবই পারদর্শী সূর্যমুখীর তেলে থাকা সেলেনিয়াম উপাদান। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম উপাদান আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। মাইগ্রেনের সমস্যা এবং আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এই উপাদান। হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, দেহের চামড়ায় জ্বালাপোড়া, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ সারিয়ে তুলতে এই তেল খুবই উপকারী। সূর্যমুখী ফুলে আছে লিনোলাইক অ্যাসিড- যা ত্বকে মেলানিন উৎপাদন কমায়। এছাড়া রোদে পোড়া ত্বক থেকে ট্যান দূর করে এই সূর্যমুখীর তেল। ত্বকের যাবতীয় সমস্যা যেমন ব্রণ,র্ যাশ, বস্ন্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস, বলিরেখার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। সূর্যমুখীর তেলের লিনোলাইক অ্যাসিড খুব অল্প সময়ে ত্বকের গভীর ক্ষত থাকলে তা সারিয়ে তোলে।
আলতাব হোসেন
  ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সূর্যমুখী হতে পারে স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেলের প্রধান উৎস্য

সূর্যমুখী শুধু দেখতে অপরূপ নয়, গুণেও অনন্য। বাংলাদেশের আবহাওয়া, পানি ও মাটি সূর্যমুখী চাষের উপযোগী। সূর্যমুখী বীজের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান থাকে, সূর্যমুখীর তেলে তেমন নেই। বিশেষ করে এই তেল ক্ষতিকর কোলেস্টেরলমুক্ত। তাই দেশে তেলের ঘাটতি মেটাতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যানসার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কম খরচে আর স্বল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় খুশি চাষিরা।

হলুদ রঙের এই ফুল দেখতে যেমন সুন্দর। তেমনই উপকার অনেক। এই ফুলের বীজ, প্রায় সব ধরনের বাদাম এবং বীজ, অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড সুস্বাস্থ্যের উৎস। সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। এটা শুধুই রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য নয়। সূর্যমুখী ফুলের বীজের আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

এই ফুলের জন্মস্থান আমেরিকা। এক সময়ে এই ফুলের চাষ হতো ভোজ্যতেলের জন্য। তবে, কোথাও কোথাও এই ফুলের বীজ রোস্ট করে বা কাঁচা খাওয়ার রেওয়াজও আছে। বিভিন্ন দানাশস্য এবং মিষ্টি তৈরি করতে এর ব্যবহার করা হয়। যারা মাখন ও পিনাট মাখন খেতে পারেন না, তাদের জন্য এই ফুলের বীজ থেকে মাখন তৈরি হয়। সূর্যমুখী ফুলের বীজের আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুল গাছ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে। দৃষ্টিনন্দন ফুল হিসেবে সূর্যমুখী সবার কাছে পরিচিত। ফুলটি তেলবীজ হিসেবেও দারুণ সমাদৃত। সূর্যমুখীর বীজ ও তেলে রয়েছে নানা উপকারী গুণ। আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরকে দীর্ঘদিন কর্মক্ষম রাখতেও সূর্যমুখীর ভূমিকা অনন্য।

জটিল ব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে খুবই পারদর্শী সূর্যমুখীর তেলে থাকা সেলেনিয়াম উপাদান। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম উপাদান আমাদের মানসিক চাপ দূর করে। মাইগ্রেনের সমস্যা এবং আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এই উপাদান। হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক আলসার, দেহের চামড়ায় জ্বালাপোড়া, হাঁপানি ইত্যাদি রোগ সারিয়ে তুলতে এই তেল খুবই উপকারী।

সূর্যমুখী ফুলে আছে লিনোলাইক অ্যাসিড- যা ত্বকে মেলানিন উৎপাদন কমায়। এছাড়া রোদে পোড়া ত্বক থেকে ট্যান দূর করে এই সূর্যমুখীর তেল। ত্বকের যাবতীয় সমস্যা যেমন ব্রণ, র?্যাশ, বস্ন্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস, বলিরেখার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। সূর্যমুখীর তেলের লিনোলাইক অ্যাসিড খুব অল্প সময়ে ত্বকের গভীর ক্ষত থাকলে তা সারিয়ে তোলে। যাদের ত্বক স্পর্শকাতর, তারা ত্বকে কিছু লাগাতে ভয় পান। এ ক্ষেত্রে সূর্যমুখীর তেল চোখ বন্ধ করে ব্যবহার করতে পারেন। এই বীজে আছে ভিটামিন-ই- যা আমাদের দেহের নানারকম ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে সূর্যমুখী বীজের তেলে বিদ্যমান ভিটামিন-ই আমাদের ত্বককে রক্ষা করে সূর্যের আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মি থেকে। ত্বকের অযথা বুড়িয়ে যাওয়া ও ক্ষয় রোধে এই তেল খুবই উপকারী।

প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকায় সূর্যমুখী বীজের তেল আমাদের দুর্বলতা কাটাতে কার্যকরী। আমাদের দেহের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং দীর্ঘদিন কর্মক্ষম রাখতেও সূর্যমুখী তেলের ভূমিকা অনন্য। সূর্যমুখী বীজ আমাদের দেহের হাড় সুস্থ রাখে ও মজবুত করে। আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও কপার এর চাহিদা পূরণ করে সূর্যমুখী তেল। সূর্যমুখীর বীজ নানা ভিটামিনের গুণে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে ই-কমপেস্নক্স গ্রম্নপ এবং ভিটামিন ঈ ও ঊ এতে আছে। এছাড়াও এতে আছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ঈ থাকায় সূর্যমুখী ফুলের বীজ কার্ডিওভ্যাসকুলার রোগ অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক প্রভৃতি প্রতিরোধ করে।

সূর্যমুখীর বীজের তেল স্বাস্থ্যর জন্য অসাধারণ। অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান (বিশেষ করে কোলেস্টেরল) থাকে সূর্যমুখীতে তা নেই। বরং আরও উপকারী উপাদান ও পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে সূর্যমুখী ফুলের বীজ। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তাদের জন্য এই বীজ খুব ভালো। লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এলডিএল ধমনিতে জমা হয়ে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সূর্যমুখীর বীজে আছে লিনোলেইক অ্যাসিড- যা কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং এলডিএলের মাত্রা কমায়। এছাড়াও এতে আছে ওলেইক অ্যাসিড- যা ট্রাইগিস্নসারাইড কম করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

সূর্যমুখী তেলে আছে ওমেগা-৯ ও ওমেগা -৬, আর এতে আছে অলিক অ্যাসিড। সূর্যমুখীর তেলে আছে শতকরা ১০০ ভাগ উপকারী ফ্যাট। আরও আছে কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ও জল। এতে আছে ভিটামিন ঊ, ভিটামিন কে এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, আছে মিনারেলও। মুখের যত্নে দাঁতের জন্য উপকারী একমাত্র তেল। হৃদরোগী, ডায়াবিটিসের রোগী উচ্চ রক্তচাপের রোগী, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ। চমৎকার এনার্জির উৎসও সূর্যমুখীর তেল। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন নিঃসরণ করে না। রক্তে শকর্রার মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রভাবিত হয়। সূর্যমুখীর বীজের গস্ন্যাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম এবং এতে আছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড- যা বস্নাড সুগার কম করে। এতে আছে এন্টি-এজিং প্রপার্টিজ- যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এর মধ্যকার ভিটামিন 'ঊ' ও বিটা-ক্যারোটিন ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত করে ও ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখে। বিটা-ক্যারোটিন ত্বককে সূযের্র ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে ও ভিটামিন 'ঊ' ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ভিটামিন বি-৬- যা মাথার স্কাল্পে অক্সিজেন সাপস্নাই করে চুলপড়া রোধ করে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল নতুন চুল জন্মাতে সাহায্য করে। এতে আরও রয়েছে কপার- যা চুলের স্বাভাবিক রং ধরে রাখে। সূর্যমুখীর বীজ ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস হওয়ায় ত্বকের এলাস্টিক ধরে রেখে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে।

এর মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম নার্ভ সেলের অতিরিক্ত ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করাতে সাহায্য করে। সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার এমিনো এসিড- যা শরীরে সেরেটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। সেরেটোনিন হচ্ছে এমন একটি উপাদান- যা ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা ও হতাশা দূর করে। সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে উন্নতমানের ভিটামিন-ই- যা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া কমায়। নিয়মিত এটি খেলে অস্টিওআর্থারাইটিস, অ্যাজমা ও বাতের মতো রোগ নিরাময় হয়। বীজের তেল বা সূর্যমুখী তেল আপনার চাহিদা পূরণ করতে পারে। রান্নায় ব্যবহার হয় সূর্যমুখী তেল। এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা অনেক। সেইসঙ্গে ত্বকের যত্নেও রয়েছে বেশ গুণ। ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ সূর্যমুখী তেলে রয়েছে প্রসাধনী গুণ। ফলে ত্বক পায় পূর্ণ উজ্জ্বলতা। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে প্রাকৃতিক সান প্রটেকটিভ উপাদান। এতে থাকা ভিটামিন এ ও সি সান ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখে। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড ও লিনোলিক অ্যাসিড- যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে- ভিটামিন, মিনারেল ও ফ্যাটি অ্যাসিড- যা ত্বকের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যে উপকারী। সূর্যমুখী তেলে রয়েছে- ভিটামিন এ, সি, ডি ও ই এবং মিনারেল, যেমন- কপার, জিঙ্ক ও আয়রন- যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে সৌন্দর্য বাড়াতে সহায়ক হয়। এ তেল ত্বককে আর্দ্র রেখে নরম ও কোমল করে। অল্প সূর্যমুখী তেল হাতের তালুয় নিন এবং উষ্ণ না হওয়া পর্যন্ত ঘষতে থাকুন। এরপর সম্পূর্ণ শুষে না নেওয়া পর্যন্ত ত্বকে ম্যাসাজ করুন। আরো ভালো ফল পেতে এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল, ল্যাভেন্ডার বা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে পারেন। এ ছাড়া এমন প্রসাধন কিনতে পারেন, যাতে সূর্যমুখী তেলের উপাদান রয়েছে। আপনি যদি আরামদায়ক বডি ম্যাসাজ চান, তবে সূর্যমুখী তেলের জুড়ি নেই।

দেশে ভোজ্যতেলের বিপুল পরিমাণ উৎপাদন ঘাটতি মোকাবিলায় কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে দেশব্যাপী সরিষা তিল তিসিসহ নানা জাতের তেলজাতীয় ফসলের পাশাপাশি সূর্যমুখী ফুলের আবাদ এখন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সে কারণে প্রতি মৌসুমেই বাড়ছে সূর্যমুখীর উৎপাদন। চলতি মৌসুমে দেশে ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ২০ হাজার ৭২ টন সূর্যমুখী তেলবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরদিকে, চলতি মৌসুমে সরিষায় ১০ লাখ, সূর্যমুখীতে ৭০ হাজার, চীনাবাদামে ২৬ হাজার ও সয়াবিনের ১৮ হাজার চাষিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সার বীজসহ বিভিন্ন উপকরণসহ কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সে কারণে দেশব্যাপী তেলজাতীয় ফসল চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টন। আর চাহিদার বিপরীতে দেশে সয়াবিনসহ বিভিন্ন জাতের তেলজাতীয় ফসল থেকে জোগান হচ্ছে চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ আর বেশিরভাগ তেলই আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এ জন্য প্রতি বছর সরকারকে ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। সে কারণে সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশে উৎপাদিত সরিষা ও তিলের পাশাপাশি সূর্যমুখী ফুলের আবাদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেন তার অনেকটাই সফলতার মুখ দেখছে প্রতি বছরই দেশব্যাপী বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ। গত মৌসুমে দেশে দুই হাজার ৭২৬ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭২৫ টন হলেও এক বছরের ব্যবধানে ২০২০-২১ মৌসুমে ৫ হাজার ৫০১ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ৬২৮ টন। ২০২১-২২ মৌসুমে ৯ হাজার ১৩৬ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১৫ লাখ ৯৬১ টন।

সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুল গাছ- যা লম্বায় প্রায় ১০ ফুট হয়, গাছে ফুল হয় প্রায় ৩০ সেন্টিমিটারের উপরে (১৩ ইঞ্চির মতো) এই ফুল দেখতে সূযের্র মতো এবং ফুল ফোটা থেকে বীজ পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত ওই ফুল সূযের্র দিকেই মুখ করে থাকে সে কারণেই মূলত এই ফুলের নামকরণ করা হয়েছে সূর্যমুখী। এই ফুলের বীজ হাঁস-মুরগির ও নানা জাতের পাখির আদর্শ খাবার। অপর দিকে বীজ থেকে উৎপাদন হয় পুষ্টিগুণেসমৃদ্ধ ভোজ্যতেল। ১৯৭৫ সাল থেকে অল্প বিস্তর এ ফুলের আবাদ হলেও এখন দেশের রাজশাহী, কুষ্টিয়া যশোর, নাটোর, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ছাড়াও এখন বৃহত্তর নোয়াখালী কুমিলস্না চাঁদপুর ফেনী ও চট্টগ্রাম কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে সূর্যমুখীর আবাদ।

সূর্যমুখী দেখতে রূপময় নয় গুণেও অনন্য। সূর্যমুখীর বীজের তেল স্বাস্থ্যর জন্য অসাধারণ। সূর্যমুখীই হতে পারে স্বাস্থ্য রক্ষার গুণসম্পন্ন তৈলবীজ। আমরা যেভাবেই তার তেল আহরণ করি না কেন, তা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। বাংলাদেশের অসংখ্য চরাঞ্চল ও হাওড়ের জমিতেও সূর্যমুখী উৎপাদন করা যেতে পারে বাণিজ্যিকভাবে। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই সূর্যমুখী চাষ করা সম্ভব। উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে কম থাকায় এবং বাজারে দাম ভালো থাকায় ও বেশ চাহিদা থাকায় কৃষকরা এ ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বাড়ির আশেপাশের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে পরিবারের দৈনন্দিন ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে