পৃথিবীর অন্যতম বিষধর সাপ নিয়ে নয়া তথ্য প্রকাশ্যে। ভয়ঙ্কর সেই সাপের একটিই প্রজাতির কথা এত দিন জানা যেত। তবে, বিজ্ঞানীরা শঙ্খচূড় নিয়ে সম্প্রতি এমন এক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন, যা ১৮৮ বছরের পুরনো ধারণাকে ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত করেছে।
সর্প বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আরও তিন ধরনের শঙ্খচূড়ের অস্তিত্ব রয়েছে পৃথিবীতে।
গত দু’দশক ধরে শঙ্খচূড় নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন সর্প বিশেষজ্ঞ পি. গৌরীশঙ্কর। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডট কম-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘ ১২ বছর শঙ্খচূড়ের দেহের গঠন এবং জিন সম্পর্কে গবেষণার পর কর্নাটকের ‘কলিঙ্গ সেন্টার ফর রেইনফরেস্ট ইকোলজি’র বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, শঙ্খচূড় কোনও একক প্রজাতির অন্তর্গত নয়। এই বিষধর সাপের চারটি স্বতন্ত্র প্রজাতি রয়েছে। এত দিন শুধু শঙ্খচূড়ের ‘ওফিওফ্যাগাস হ্যানা’ প্রজাতির কথা জানা ছিল বিজ্ঞানীদের। বাকি তিন প্রজাতি হল—ওফিওফ্যাগাস বাঙ্গারাস, ওফিওফ্যাগাস কলিঙ্গ এবং ওফিওফ্যাগাস সালভাটানা। দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে দেখা মেলে ওফিওফ্যাগাস কলিঙ্গের। এর শরীরে অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় কম দাগ রয়েছে।
ওফিওফ্যাগাস হ্যানার দেখা পাওয়া যায় উত্তর ভারত, পূর্ব পাকিস্তান, চিন এবং তাইল্যান্ডে। এদের শরীরে ৫-৭০টি গোল দাগ দেখতে পাওয়া যায়। ওফিওফ্যাগাস বাঙ্গারাসের শরীরে ৭০টির বেশি দাগ রয়েছে। চতুর্থ প্রজাতি ওফিওফ্যাগাস সালভাটানার শরীরে কোন দাগ নেই। মূলত দক্ষিণ ফিলিপিন্সে দেখতে পাওয়া যায় এই সাপকে।
গৌরীশঙ্করের কথায়, ‘‘কেউ কখনও কল্পনাও করেনি যে শঙ্খচূড়ের একাধিক প্রজাতি রয়েছে। গবেষণা দল সাপটির বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং দেহের রঙ, আঁশ এবং গায়ের দাগ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীরা হিমালয় এবং তার আশেপাশের অঞ্চল-সহ ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ ফিলিপিন্স এবং ভারতের উত্তরাঞ্চলে তাঁদের গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, শঙ্খচূড়ের চারটি প্রজাতি রয়েছে। ১৮৩৬ সালে প্রাণীবিদ থিওডোর এডওয়ার্ড ক্যান্টর শঙ্খচূড়ের শ্রেণিবিন্যাস করেছিলেন।
যাযাদি/ এম