কোন সংকেতের কী মানে?

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৪, ১৭:৪২

যাযাদি ডেস্ক
ছবি-যায়যায়দিন

সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা কেন্দ্র থেকে ১-১১ পর্যন্ত সংকেত জারি করে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। 

রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে রাতেই দেয়া হবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। এই ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বলতে মূলত কী বোঝানো হয় বা কোন সংকেতের কী অর্থ তা অনেকেই জানেন না। 

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, ১ নম্বর হচ্ছে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত, ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত, ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত, ৫, ৬ ও ৭ বিপদ সংকেত, ৮, ৯ ও ১০ মহাবিপদ সংকেত এবং ১১ নম্বর ঘূর্ণিঝড়ের প্রচণ্ডতার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে দেয়া হয়।

কোন সংকেতের কী অর্থ?

জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে এমন পূর্বাভাস থাকলে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেয়া হয়। আরও স্পষ্ট করে বললে, দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে তাই এসতর্ক বার্তা দেয়া হয়ে থাকে।

দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হলে এবং সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার হলে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেয়া হয়। এই সংকেত থেকে বোঝা যায়, বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেয়া হয় বন্দর ও বন্দরের বাইরে নোঙর করা জাহাজগুলো দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে। এক্ষেত্রে বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে।

বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত হলে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেয়া হয়। এক্ষেত্রে বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার হয়ে থাকে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক না হলে এ সংকেত দেয়া হয়।

৫ নম্বর বিপদসংকেত দেয়া হয় বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়লে। এক্ষেত্রে ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁদিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে এমন আশংকা থেকে এ সংকেত দেয়া হয়। আবার একই পরিস্থিতিতে ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে এমন আশংকা থেকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে এমন আশংকা থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেয়া হয়ে থাকে।

৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে এমন আশংকা থেকে। এক্ষেত্রে ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁদিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে এমন পূর্বাভাস থেকে এই সংকেত দেয়া হয়ে থাকে। আবার এই ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করার পূর্বাভাস থাকলে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়। একইভাবে ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে এমন আশংকা থেকে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেয়া হয়।

প্রচন্ড ঝড়ে আবহাওয়ার বিপদ সংকেত দেয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি খুবই দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করলে ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত দেয়া 
 
ঘূর্ণিঝড় রেমালের ব্যাপারে দীর্ঘ পর্যালোচনা করে এর ভয়াবহতা, গতিবিধি এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি মাথায় রেখে বিভিন্ন সময়ে বন্দর এলাকায় আঘাত হানার শক্তির ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সংকেত দিয়ে যাচ্ছে আবহাওয়া অফিস।

যাযাদি/ এম