‘মা পদক’ পাচ্ছেন ডলি জহুর

প্রকাশ | ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৮

বিনোদন রিপোর্ট
ডলি জহুর  

দেশের প্রথিতযশা এক অভিনেত্রীর নাম ডলি জহুর। এরই মধ্যে অভিনয় জীবনের সাড়ে চার দশক পার করেছেন তিনি। 

একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করা এই নন্দিত তারকার একই সঙ্গে মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রে অবাধ বিচরণ ছিল এক সময়। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকের সিনেমায় নায়ক-নায়িকাদের মায়ের চরিত্রে ছিলেন অপ্রতিদ্ব›দ্বী। 

কিন্তু নানা কারণে শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন দীর্ঘদিন। মাঝখানে অভিনয়ে ফিরলেও মূলধারার চলচ্চিত্রে আর কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। শোবিজের সব মাধ্যমে সমান সমাদৃত জীবন্ত এই কিংবদন্তি; এবার ‘মা পদক-২০২৫’ এ ভ‚ষিত হতে যাচ্ছেন। 

আগামী ১১ মে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনন্দঘন পরিবেশে তাকে এই বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হবে। ‘আলী-রূপা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০২২ সাল থেকে নিয়মিতভাবে প্রতি বছর মা দিবসে এই ‘মা পদক’ প্রদান করে আসছে মাদিহা মার্সিহা অ্যাডভারটাইজিং; যার প্রধান ‘উদ্যোক্তা সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীন।

এবারের ‘মা পদক’-এ ভ‚ষিত হওয়ার খবরে ডলি জহুর বলেন,‘এর আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা’সহ বাংলাদেশের বহু সংগঠন থেকে আমি বহুবার পুরস্কৃত হয়েছি। কিন্তু চলচ্চিত্রে কিংবা নাটকে মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কখনো এমন পুরস্কারে ভ‚ষিত হইনি আমি। যে কারণে এই পুরস্কারটি আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচিত হচ্ছে। যারা আমাকে এই আয়োজনে পুরস্কার তুলে দেওয়ার জন্য চ‚ড়ান্ত করেছেন তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।’

বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী আরও বলেন, সারাটা জীবন আমি অভিনয়ই করে গেছি। যখন যে কাজটি করেছি মন দিয়েই করার চেষ্টা করেছি। কোন কাজ করে কী সম্মানী পাব সেটা নিয়ে কখনো ভাবিনি আমি। শুধু ভাবনায় ছিল আমাকে যে চরিত্রটি দেওয়া হয়েছে তাতে যেন ঠিকঠাক মতো অভিনয়টা করে যেতে পারি। 

এদেশের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি আমি শুধু অভিনয় করেই। অভিনয় ছাড়াতো জীবনে আর কিছু পারি না, তাই এখনো অভিনয় করতেই ভালো লাগে। যদিও বা আগের চেয়ে কাজ অনেক কমে গেছে। আমার শরীরটাও এখন আর ভালো নেই। কিন্তু তারপরও আমি আজীবন অভিনয়ই করে যেতে চাই। সবার দোয়া চাই, যেন আরও কিছু ভালো ভালো গল্পের নাটকে, সিনেমায় কাজ করে যেতে পারি।’

নন্দিত এই তারকা জানানÑ তবে, আগের মতো খুব বেশি কাজ করা সম্ভব নয়। এখন তিনি অভিনয়ের চেয়ে নির্মাণ নিয়ে বেশি ভাবছেন। আগামীতে আরও কয়েকটি নাটক টেলিফিল্ম নির্মাণের পরিকল্পনা আছে তার। তবে, ডলি জহুরের ভাষ্য, ‘মূল ধারার চলচ্চিত্রে আর কাজ করছি না। আর ওইখানে ফেরার ইচ্ছেও নেই। তবে টিভিতে কাজ করছি কারণ, এই জায়গাটিই আমার নিজের জায়গা মনে করি। সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মূল কারণ হলো, ভালো গল্পের ছবি হচ্ছে না।

 ছবি ভালো হলেও তাতে তো নায়ক-নায়িকাই সব। আগে নায়ক-নায়িকা যেমন ছিল তেমন নায়ক-নায়িকার বাবা-মাও ছিল। এখন তো বাবা-মা’র চরিত্র নাই-ই। যতটুকুই বা থাকে, এমন গুরুত্বহীন চরিত্রে অভিনয় করলেই কি আর না করলেই কি?’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ডলি জহুর’কে ‘আজীবন সম্মাননা’ প্রদান করা হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে। ‘শঙ্খঝনীল কারাগার’ ও ‘ঘানি’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভ‚ষিত হন তিনি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি মঞ্চ নাটকের সঙ্গে যুক্ত হন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে ‘নতুন বউ’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘আগুনের পরশমনি’, ‘কুলি’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘বিচার হবে’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘সন্তান আমার অহংকার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’ ইত্যাদি।

যাযাদি/আর