শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১

মতিউর কন্যা ইপ্সিতার কানাডা ও দেশে সম্পদের পাহাড়

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৪
-ফাইল ছবি

কয়েকদিন বেশ আলোচনা ছিল। এখন প্রায় থেমে গেছে সেই আলোচনা। কিন্তু মাঝে মধ্যে কানাডায় বসবাসরত মতিউর কন্যা বিভিন্ন ছবির সঙ্গে নিজের কথা পোস্ট করে উস্কে দেন। তিনি সেখানে কি ধরণের জীবন-যাযন করেন তার জানান দেন। আর এসব হয়েছে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকায়।

জানা যায়, ছাগলকাণ্ডে একে একে বের হতে থাকে মতিউরের দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জন করা কোটি কোটি টাকার সম্পদ। শুধু মতিউর না তার দুই স্ত্রী এবং সন্তানদের নামে বেনামে থাকা সম্পদের তথ্যও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।

মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকীর মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা সম্পদের তথ্য এবার ফাঁস হয়েছে।

বয়স মাত্র ৩২ বছর। নিজেকে মেকআপ আর্টিস্ট হিসাবে পরিচয় দেন এই তরুণী। পড়াশোনা শেষে এই পেশায় যোগ দিয়ে কতই বা আয় করতে পারেন। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি, এই অল্প বয়সেই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাততলা বাড়িসহ শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন।

কানাডায় নিজস্ব ফ্লাটে বসবাস করেন ইপ্সিতা। কানাডায় তার বাড়ি-গাড়িসহ বিলাসী জীবনের ছবি ঘিরে নেট দুনিয়ায় হইচই চলছে। তবে কানাডার চেয়ে দেশেই তার বেশি সম্পদ রয়েছে।প্রশ্ন উঠেছে একজন মেকআপ আর্টিস্ট এত টাকার সম্পদের মালিক হলেন কীভাবে।

ইপ্সিতার সম্পদ নিয়ে একাধিক সূত্রে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য সামনে এসেছে, ২০২৩ সালে মতিউর কন্যার প্রকাশিত আয়কর ফাইলেই ৪২ কোটি টাকার সম্পদ দেখানো হয়েছে।

সোনালী সিকিউরিটিজে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সিনাজি ট্রেডিং লিমিটেডে ৫ লাখ টাকা, গ্লোবাল সুজ কোম্পানিতে ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৫৫ হাজার, ওয়ান্ডার পার্কে ১০ লাখ ও মামুন অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস কোম্পানিতে ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯০ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে ইপ্সিতার।

কানাডার প্রভিন্স অন্টারিও থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ব্যারি সিটি। ব্যয়বহুল এই শহরে কেবল অঢেল সম্পদের মালিকেরাই বাড়ি কেনার সামর্থ্য রাখেন। আর এই শৌখিন শহরেই প্রাসাদ গড়েছেন বাংলাদেশের আলোচিত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের কন্যা ফারজানা রহমান ইপসিতার। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বাড়িটি কেনেন তিনি। এজন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে ৮ লাখ ৮৮ হাজার কানাডিয়ান ডলার। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশন এবং জমি ট্রান্সফার ফি বাবদ আরও গুনতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কানাডিয়ান ডলার। সব মিলিয়ে বাড়িটির মালিক হতে বাংলাদেশি টাকায় ৯ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে হয়েছে তার।

সম্প্রতি তার ছেলে মুসফিকুর রহমান ইফাত কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। এছাড়াও তিনি বিপুল টাকায় কিনেছিলেন কয়েকটি গরু। এ ঘটনা ভাইরাল হলে মুসফিকুর রহমান ইফাতকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান। তবে পরবর্তী সময়ে প্রমাণিত হয় যে আলোচিত ইফাত সত্যিই মতিউর রহমানের ছেলে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটতে গিয়ে বের হতে থাকে মতিউরের অবৈধ সম্পদের গোপন ভান্ডারের তথ্য। প্রকাশ্যে আসে তার বাড়ি-গাড়ি, রিসোর্ট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত কোটি টাকার সম্পদের তথ্য।

কানাডা থেকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের কেনা দামি গাড়িগুলোর ছবি পোস্ট করেন মতিউরকন্যা। তার বিষয়ে ঘাটতে গিয়ে জানা গেল কানাডায় বিপুল টাকায় কেনা এই বাড়ির সম্পর্কে। কানাডার জমি রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের নথি অনুসারে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি অন্টারিওর ব্যারি শহরে এই বাড়িটি কেনেন ফারজানা রহমান ইপসিতা। শহরের মোনার্কি স্ট্রিটের ১১৭ নম্বর বাড়িটি তার। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ব্যারি শহরের এই বাড়িতে তিনি থাকেন না। তিনি মূলত অন্টারিও শহরের একটি বাড়ি থাকেন। সেটিও তার নিজের কেনা বাড়ি।

সূত্র জানিয়েছে, ট্রিপ্লেক্স এই বাড়িটি অত্যাধুনিক সব আসবাবপত্র দিয়ে সজ্জিত। বাড়ির সামনে দীর্ঘ লন। এ ছাড়া একটি সুইমিংপুলও রয়েছে। রয়েছে আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। প্রধান সড়ক ঘেঁষে গড়ে তোলা ফুল ফার্নিশড এ বাড়িটি যেন রাজপ্রাসাদ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে