লিবিয়ার বেনগাজী শহরের আরবান এলাকায় দালালের খপ্পরে আটকে থাকা এক বাংলদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মারা যান ওই শ্রমিক।
নিহত শ্রমিকের নাম ইব্রাহিম ফকির। তিনি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। মৃত্যুর বিষয়টি শুক্রবার রাতে একই গ্রামের সহকর্মী আব্দুল হাকিম মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন।
নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা বেগম স্বামীর মরদেহ দেশে আনতে সরকারে কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, লিবিয়ায় নেওয়া দালালরা আমার স্বামীকে আটকে রেখে নির্যাতন ও মারধরের কারণে মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে রোজিনা বেগম আরও বলেন, দালাল চক্রের সদস্য সফিবাদ গ্রামের খোরশেদ আলম আমার স্বামীকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে প্রায় ১ বছর আগে লিবিয়া নেয়। কাজ না দিয়ে আমার স্বামীকে বদ্ধ রুমে আটকে রেখে টাকার জন্য নানাভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে মারা যান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, দালালের খপ্পরে এ এলাকার অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। তবে খোরশেদ আলমের কারণে অনেকেই ভিটেবাড়ি ছাড়া হয়েছে। ইব্রাহিমের মরদেহ দেশে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লিবিয়ায় দালালের খপ্পর থেকে ২ মাস আগে দেশে ফেরত আসা মো. কবির হোসেন নামের একজন জানান, দালালের কাছে আটকে থাকায় আমার চাচা ইব্রাহিম ফকির অনেক কষ্ট পেয়েছে। মর্মান্তিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইনে স্ত্রী রোজিনা বেগম গেল বছর চাঁদপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত এই মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
চাঁদপুর পিবিআই পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল জানান, মামলাটি তদন্ত কাজ চলছে। দালাল চক্রে খোরশেদ আলম ছাড়াও আরও তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই দালাল চক্রে আরও কয়েকজন রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মোস্তফা কামাল আরও জানান, ইব্রাহিমের মরদেহ দেশে আনতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় পাড়ি জমানো ৪ শতাধিক ব্যক্তি দেশে ফেরত এসেছে।
যাযাদি/এসএস