কুয়েট সমস্যার সমাধান কোন পথে!
প্রকাশ | ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২

শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্পর্ক এখনও একটা শীতল বলে উল্লেখ করেছেন কুয়েটের এক শিক্ষার্থী।
গত ২৫ এপ্রিল রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর ভিসি এবং প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
এই অব্যাহতি প্রদানকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের জন্য বিজয় বলে মনে করছেন। এদিকে শিক্ষক সমাজ এই সিদ্ধান্তকে ন্যায়বিচারের পরাজয় বলে অভিহিত করেছিলেন।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন যাবৎ কুয়েট শিক্ষার্থীরা ভিসি পদত্যাগের আন্দোলন করলেও শিক্ষক সমিতি ভিসির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
এভাবে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের একে অপরের বিপরীতে পাশে অবস্থান করাটা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক লাইফে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে গালিব রাহাত নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমাদের অধিকাংশ শিক্ষক উন্নত মানসিকতার অধিকারী। আমাদের শিক্ষকেরা এই বিষয়গুলো (আন্দোলনে বিপরীত পাশে অবস্থান করা) নিয়ে আমাদের খাতায় প্রভাব ফেলবে এমনটা আমরা মনে করি না। তবুও দুই একজন শিক্ষক থাকতে পারে যারা এমনটা করতেও পারেন বলে আমাদের ধারণা। এক্ষেত্রে নতুন প্রশাসনের কাছে তারা ওয়েমারভিত্তিক খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতির আবেদন জানাবে।
শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রেস ব্রিফিং এ শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমরা মনে করি আমাদের এবং শিক্ষকদের উভয় পাশ থেকে কিছু ভুলত্রুটি হয়েছে। মানুষ তো ভুলের উর্ধ্বে না। শিক্ষকরা যেহেতু আমাদের অভিভাবক তারা আমাদের ভুলগুলোকে ক্ষমা করবেন বলে আমরা আশাবাদী’।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমরা শিক্ষকদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। আমরা শিক্ষকদের কাছে আমাদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইবো এবং কেউ যদি শিক্ষক লাঞ্ছনার সাথে জড়িত থাকে আমরা তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনতে চাই। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরও বলেন,ক্লাস শুরু হলে এই বৈরী সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ওবায়দুল্লাহ নামের আরেক শিক্ষার্থী জানায়, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে শিক্ষকদের সাথে আলোচনার চেষ্টা চলছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বারবার বলেছেন,তাদের আন্দোলন প্রশাসনের বিরুদ্ধে,শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ,কয়েকজন স্বার্থান্বেষী মহল আছে যারা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদেরকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিয়েছে। এই স্বার্থান্বেষী মহল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে এক শিক্ষার্থী জানায়,এরা তারাই যারা আমাদের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীকে বিএনপির এক ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার পিছনে দাড় করিয়েছেন।
শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আখতার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ভিসি, প্রোভিসি নেই। নতুন প্রশাসন আসার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত ৪ মে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্তই কার্যকর আছে।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষক লাঞ্ছনার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।এটা শুধু শিক্ষকদের দাবি নয়, এটা আমাদের ছাত্রদেরও দাবি ‘
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝের এই সম্পর্কের অবনতি ছাড়া ক্যাম্পাসের বাকি অবস্থা স্বাভাবিক আছে। শিক্ষার্থীরা হলে ফিরেছেন। হলগুলো খুলে দেওয়ায় হলের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।