মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

৩ দফা দাবিতে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রুয়েট প্রতিনিধি
  ২২ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২১
৩ দফা দাবিতে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: যায়যায়দিন

বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রুয়েট লাইব্রেরির সামনে তারা অবস্থান নেন । পরে তালাইমারি মোড় হয়ে ভদ্রা মোড়ে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় তারা 'কোটা না মেধ, মেধা মেধা', 'কোটার নামে বৈষম্য, চলবে না চলবে না' , 'আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই', 'এই মুহুর্তে দরকার, কোটা প্রথার সংস্কার,' সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রুয়েট ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম সরকার এবং রুয়েটের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এইচ. এম. রাসেল। এসময় অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সরকার বলেন,"আজকের এ আন্দোলন আমাদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়ন হোক। সেজন্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দিতে হবে সরাসরি নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য ৩৩% কোটা রাখা হয়েছে, তা অবশ্যই বাতিল করতে হবে। এখান থেকে পিছু হটার আমাদের সুযোগ নাই।"

পাশাপাশি প্রকৌশলী সমাজ, বিশেষ করে আইইবি এর কেন্দ্রীয় কমিটিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে কোটা প্রথা রহিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও সকল পর্যায়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদেরকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।

আন্দোলনরত কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী রুয়ান জানান, "বাংলাদেশে প্রকৌশল খাতে দীর্ঘদিন ধরে কিছু কাঠামোগত বৈষম্য হয়ে আসছে, যা বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের সাংবিধানিক অধিকার, মেধা ও পেশাগত সম্মানের পরিপন্থী। এসব বৈষম্য দেশের প্রকৌশল ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার ঘাটতি ও ন্যায্যতার সংকট সৃষ্টি করছে।"

এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে পুরকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি সমূহ উপস্থাপন করেন:

১. ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেডে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা সমমান পদে সবার জন্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোনো কোটা বা সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। কারণ, ৯ম গ্রেড একটি প্রথম শ্রেণির পদ, যেখানে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হওয়া উচিত বিএসসি। বিসিএস কিংবা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যারা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা সমমান পদে আসছেন, তাদের পাশ কাটিয়ে কোটাভিত্তিক পদোন্নতি মেধার চরম অবমূল্যায়ন। এটি সংবিধানের ২০(১) ও ২৯(১) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন।

২. টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেডে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়েই চাকুরির পরীক্ষায় সুযোগ পান। বর্তমানে এই পদে প্রায় ১০০% কোটা শুধু ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষিত, যা সাংবিধানিক ১৯(১), ২৭ ও সরকারি চাকুরি আইন ৭(১) লঙ্ঘন করছে। ৪ বছরের পূর্ণাঙ্গ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীদের জন্য এই পদে আবেদনের কোনো সুযোগ না থাকা চরম বৈষম্য এবং মেধার চরম অবমূল্যায়ন।

৩. বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ "ইঞ্জিনিয়ার" পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এই আইন করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ডাক্তার, আইনজীবী, শিক্ষকের মতোই "ইঞ্জিনিয়ার" পদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতা থাকা উচিত। আইইবি অ্যাক্ট অনুযায়ী কেবল বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাই প্রকৃত "ইঞ্জিনিয়ার" হিসেবে স্বীকৃত। এই শব্দের অপব্যবহার বন্ধ করা জনস্বার্থে জরুরি।"

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে