বিতর্কিত যবিপ্রবি শিক্ষক সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণ মামলা

প্রকাশ | ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:১৩

যবিপ্রবি প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকা, নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা, জুলাই ছাত্র জনতার অভ্যুথানের বিরোধিতা করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পরও অদৃশ্য ক্ষমতার বলে শাস্তি না পাওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষক ড. সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার জোরপূর্বক ধর্ষণ মামলা হয়েছে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে। 

এছাড়া তাকে উপযুক্ত শাস্তি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী ঐ নারী।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি,২০২৫) ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগপত্রে তিনি লিখেন, ২০২৪ সালে ২২ অক্টোবর ভুক্তভোগীর নিজ বাসায় একাধিকবার ধর্ষণ করেন ড. সুজন চৌধুরী। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ সুজন চৌধুরীর সাথে অর্থের বিনিময় করে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আদালতের শরণাপন্ন হতে বলেন। 

পরে তিনি চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুজন চৌধুরীকে কয়েক দফায় ডাকা হলেও তিনি বিভিন্ন তাল বাহানায় বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন।

এ ব্যাপারে জানতে ভুক্তভোগী বলেন, আমি ড. সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি এর যথাযথ বিচার চাই।
 
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ড. সুজন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে ব্লাকমেইল করে টাকা দাবি করছেন ঐ নারী। এদিকে ব্লাকমেইল করে টাকা দাবি করার বিষয়ে ঐ নারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি যদি তাকে ব্লাকমেইল করে থাকি তাহলে ড. সুজন চৌধুরী সেটা প্রমাণ করুক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীব বলেন, আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমি সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবো।

মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তা এস আই তালেব বলেন, আমি এই মামলার বিষয়ে তদন্ত করছি। যেহেতু ধর্ষণের মামলা তাই মেডিকেল রিপোর্ট প্রয়োজন। মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর বিস্তারিত জানাতে পারবো।
 
উল্লেখ্য, ড. সুজন চৌধুরী এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার অভিযোগ থাকলেও তার ক্ষমতার কারণে মুখ খুলেনি কোন ভুক্তভোগী।

 এদিকে গত জুলাই আন্দোলনে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। পরবর্তীতে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অপসারণের দাবি তুলে আন্দোলন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশ্বাস দিলেও মিলেনি কোন সমাধান।


যাযাদি/ এমএস