ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবন’ উদ্বোধন
প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শেখ মুজিবুর রহমান হলের নবনির্মিত এগারো তলা বিশিষ্ট ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবন’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে। একইসাথে নতুন আবাসিক শিক্ষক ভবনও উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আনুষ্ঠানিকভাবে ভবন দুটি উদ্বোধন করেন। প্রকল্পে সর্বোমোট ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৯২ কোটি টাকা।
আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনে ২৫২টি কক্ষে ১০০৮টি সিট রয়েছে৷ ভবনটির প্রতিটি কক্ষ ও মেঝে টাইলস দ্বারা আচ্ছাদিত। ভবনটিতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা, আধুনিক ফায়ার হাইড্রেন্ট সিস্টেম, জরুরি সিঁড়ি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রদের জন্য র্যাম্প এবং লিফট স্থাপন করা হয়েছে।
জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনের নিচতলায় প্রভোস্টের কার্যালয়, সভাকক্ষ, দর্শনার্থীদের অপেক্ষার জন্য কক্ষ, মিলনায়তন, ডাইনিং, সেলন, লন্ড্রি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয় কক্ষসহ প্রভৃতি কক্ষ রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় আবাসিক শিক্ষক কক্ষ, মসজিদ, ক্যান্টিন, গেমস কক্ষ, সাইবার কক্ষ, ইমামের আবাসিক কক্ষসহ ইত্যাদি রয়েছে। তৃতীয় তলা থেকে একাদশ তলা ছাত্রকক্ষ ও পাঠকক্ষ। আবাসিক শিক্ষক ভবনটির নীচ তলা পার্কিং সুবিধাসহ জরুরি সিঁড়ি, সিসি ক্যামেরা, ফায়ার হাইড্রেট সিস্টেম অর্থাৎ আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের ন্যায় সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাসের প্রথম দিনে অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতিকে সামনে এই ভবনটি উদ্বোধন করা হলো। আমাদের জন্য আজকের দিনটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত হয়ে থাকবে। এই ভবনটি নির্মানে প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমরা হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, আজকের এই দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। শেখ মুজিব হলের এই ভবনটি নামকরণ করা হয়েছে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে। বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছে তারা কি চেয়েছিলেন সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে। তারা একটি বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছিলেন। তাদের এই চাওয়াটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় মনে রাখে। আমাদের হয়তো সম্পদের ঘাটতি আছেন কিন্তু আমাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসন সংকট সমাধান করা। এই ভবন উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা সে সংকট কিছুটা হলেও মোকাবিলা করতে পারবো বলে আশা রাখছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, কয়েকটি কারণে আজকের দিন গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সমাধান ইস্যু। আমরা এই সংকট যেনো সহনীয় পর্যায়ে আনা যায় সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারই একটি উপলক্ষ আজকের এই ভবন উদ্বোধন। দ্বিতীয়ত, এই ভবনটি আধুনিক একটি স্থাপত্য। ভবনটির নামকরণটি হয়েছে শহীদদের স্মরণে। সেই শহীদদের রেখে যাওয়া দায় কিছুটা পূরণের জন্য আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ।
উপাচার্য বলেন, এই হলের প্রতিটি জিনিস বিপ্লবের স্মৃতিকে ধারণ করছে। এটা আমরা ভাবতে পারলেই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবো৷ শিক্ষার্থীদের এই হলটিকে সুন্দর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে ভবনটি ব্যবহার করতে হবে। এসময়, তিনি এই ভবন নির্মাণের সাথে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, হলের হাউজ টিউটরগণ, হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
যাযাদি/এস