চির নিদ্রায় শায়িত হলেন রাবি শিক্ষার্থী সিয়াম
প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২৬
চির নিদ্রায় শায়িত হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সিয়াম। ২ ডিসেম্বর (সোমবার) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীনগরে নিজ গ্রামে দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে বেলা ১১টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে বিভাগের ক্রিকেট খেলার সময় হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান তিনি। পরিবারের ৩ সন্তানের মধ্যে অত্যন্ত খেলাপাগল ছেলেটার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে পরিবারসহ তার বিভাগে নেমেছে শোকের ছায়া।
খেলার সময় তার সাথে মাঠে থাকা সতির্থ শাহ আলম সাজু বলেন, গত দিনগুলোর মতোই তিনি খুবেই স্বাভাবিক ছিলেন। ১০ম ওভারে আমি স্ট্রাইক প্রান্তে আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় ভাই পানি চাইলেন। পানি নিয়ে যাওয়ার আগেই মাঠে লুটিয়ে পরেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনিই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। সিনিয়র হিসেবে তিনি ছিলেন অমায়িক একজন মানুষ। কথা বলার সময় তার মুখের হাসি যেকোনো মানুষের মন ভালো করে দিতে পারত। আমার ক্যাপ্টেন, আমার ভাই এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারি নি। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।
একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, সিয়াম ভাই চলে গেলেন মেনে নিতে পারছিনা। ভাইয়ের সাথে আমার মাঝে মাঝে অনেক খুনসুটি হতো।ভাইয়ের হলের সিট আমি বার বার চাইতাম। ভাই মাঝে মাঝে মজা করে বলতেন তুই অনেক ভন্ড, তোকে দেব না। উনি অনেক হাসিখুশি, অমায়িক একজন মানুষ ছিলেন। প্রথম ম্যাচে হারার পর আমাকে হেসে বললেন তুই কুফা, ফাইনালে উঠে আবার আমাকে হেসে বললেন তুই ভালো, কুফা না।
তিনি আরো বলেন, শেষ সময়ে টিমের সদস্য হয়ে গতকালও কথা হয়েছিল ভাইয়ের সাথে। টিম চাম্পিয়ন হলে টিম পিকনিকে আমাকে রাখবেন বলেছিলেন। আর আজ উনিই থাকলেন না, রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন।
জিয়া হলে তার পাশের রুমে থাকতেন তার সহপাঠী মনির হোসেন মাহিন। তিনি বলেন, সিয়াম খুব শান্তশিষ্ট ছেলে ছিল। ওকে কখনো কারোর সাথে ঝগড়া ঝামেলা করতে দেখিনি। চার মাস হলো ও হলে উঠেছে। ওর সাথে খুব কম কথা হতো কারণ ও কথা কম বলতো। সারাদিন খেলাধুলা নিয়েই থাকতো। কি থেকে কি হয়ে গেল কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না।
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ছেলেটা খুবই শান্তশিষ্ট ছিল। পড়াশোনাতেও ভালো ছিল। আজ সকালেও খেলার বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে দেখা করে কথা বলে গেল। কিভাবে যে কি হয়ে গেল কিছু বুঝতে পারলাম না।
যাযাদি/এসএস