জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি বাতিল ও সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্র করে সকল বৈষম্য দূর করা সহ তিনটি দাবি জানান গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন। দাবিগুলো হলো প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ভিসি কোটা বাতিল করা। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটা বাতিল করা। পোষ্য কোটা সংস্কার করা।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের সদস্যরা।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, আমাদের দাবি ছিল বৈষম্য হীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। এতো বড় একটা পরিবর্তন হলো, অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য এখনো রয়ে গেছে। ভিসি কোটা একটা লজ্জাজনক ব্যাবস্থা। পোষ্যরা মনে করেন তারা উত্তরাধিকার সুত্রে সিট পেয়ে যাচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য মেধাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা। তিনি আরও বলেন, যারা ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বড় একটা অংশ এসেছে কোটা থেকে। তারা মেধার মুল্য বোঝে না। এজন্য এখানে এসে অপরাজনীতি করেন তারা। যেখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে ৭০ থেকে ৭৮ পর্যন্ত নম্বর পেতে হয়, সেখানে ভিসি, পোষ্য কোটায় ৪০ নম্বর পেলেই ভর্তি হতে পারে। তাই আমরা চাই আগামী ভর্তি পরীক্ষায় কোটা বাতিল করা হোক। শহীদদের সাথে বেইমানি না করে এই কোটা সংস্কার করা হোক।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, যে কোটার জন্য দেশে এতো বড় একটা বিপ্লব ঘটে গেলো, এখনো সেই কোটার জন্য আমাদেরকে আবার দাঁড়াতে হচ্ছে এটা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, দেশের জন্য লজ্জাজনক। আমরা প্রশাসনকে প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই অতিসত্বর এই কোটা পদ্ধতি বাতিল ও সংস্কার করা হোক। তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় শিফট পদ্ধতি নিয়ে যে সমালোচনা করা হয়, তারও বৈষম্য দূর করা হোক।
সমাপনী বক্তব্যে ৪৮ ব্যাচের জোবায়ের শাবাব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েরই পরিবেশে গড়ে ওঠা পোষ্যরা এক সময় বৈষম্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এরপর চাঁদাবাজি, মাদকের সিন্ডিকেট সহ সকল অপকর্মে তাদরই উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। তাই অতিদ্রুত এই কোটা পদ্ধতি সংস্কার এবং ভিসি কোটা, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটা বাতিল করতে হবে। তাছাড়া শিফট বৈষম্য দূর করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় সকল পরীক্ষার্থীর সর্বোচ্চ নম্বর বিবেচনা না করে প্রত্যেক শিফট থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে হবে। সবশেষে তিনি বলেন, প্রশাসন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
যাযাদি/এসএস