গত জুলাই—আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের ২৫ শহিদ শিক্ষার্থীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জুলাই-আগস্ট শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ—উপাচার্য প্রফেসর মোঃ লুৎফর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিদ্দিক জোবায়ের, বিশেষ অতিথি হিসেবে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এবং সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
এ অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, "জুলাই—আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের রক্তমাখা ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাঠ্যসূচিতে এ ইতিহাস অন্তর্ভুক্তির কাজ চলছে। এ ব্যাপারে সরকারের সাথে একযোগে কাজ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বলেন, " জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শহিদ আবু সাইদ ও শহিদ মীর মুগ্ধ সহ অন্যান্য শহিদদের নামে স্মৃতি ফলক, অডিটোরিয়াম, লাইব্রেরী ভবন সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ড. আমানুল্লাহ বলেন, “এই শহিদ স্মৃতি চিরতরে ধারণ করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু করা হবে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, “শিক্ষাখাতে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এর পিছনের কারণ টি খুঁজে বের করতে হবে।” তিনি বলেন, “অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা লাভের সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন," অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সকল শিক্ষার্থী পরিবারের যেকোন যৌক্তিক দাবী মেটাতে আমরা পাশে আছি ও থাকব"। এছাড়া সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বিশেষ অতিথি হিসেবে বলেন, " তার মতো যেন কোন ভাই, বোন, মা, বাবা কে স্বজন হারা হতে না হয়। তিনি স্বজন হারানো এ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে সরকার ও এদেশের সকলকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন।
আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজন হারানো পরিবারগুলোর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে পরিবেশ। এ অনুষ্ঠানে অধিভুক্ত কলেজের শহিদ শিক্ষার্থী পরিবারের সদস্যদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২৫টি পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা চেক প্রদান করা হয়। এছাড়াও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ—উপাচার্য প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম, ট্রেজারার প্রফেসর ড. এটিএম জাফরুল আযম, শহিদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই তথ্য জানানো হয়েছে।
যাযাদি/ এম