শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধকে নিয়ে জাবি শিক্ষকের কটুক্তি

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৫ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২৬

জাবি প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধকে নিয়ে কটুক্তি করেছেন। 

শনিবার (২৩ নভেম্বর)  রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুগ্ধকে নিয়ে এ কটুক্তি করেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি পোস্ট করে তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগে একজন মেসেজ দিয়ে বলল, "সবাই আবু সাঈদের কবরে যায়, কিন্তু মুগ্ধর কবরে যায় না কেন?" আমি বললাম, "কারণ, আবু সাঈদ জামাতের লোক ছিল, তাদের লোক ছিল।" এরপর সে আমার উত্তরে হাহা রিয়াকশন দিলো। হাহা রিয়াকশন এর অর্থ তখন বুঝিনি। কাল একজন বলল, মুগ্ধর লাশ, কবর এর নাকি হদিস পাওয়া যায়নি। মুগ্ধর পরিবার নাকি কোন মামলাও করেনি। মুগ্ধর ভাই নাকি বিদেশে ঘুরেফিরে ছবি আপলোড করে বেড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, 'আজ শুনলাম মুগ্ধ নাকি ফ্রান্সে। নিজের কানকে তো বিশ্বাস করতে পারছি না।'

এছাড়াও আরেকটি পোস্টে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'বুঝলাম যে আল্লাহ তাঁকে সম্মানিত করেছেন। এতোদিন আল্লাহ তাঁকে গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। এতোদিন তাহলে শেখ হাসিনাকে আল্লাহ ক্ষমতায় রেখেছিলেন। বর্তমান সরকারকেও আল্লাহ বসিয়েছেন। আবার আল্লাহ চাইলে নামিয়ে দিবেন। এতো এতো মৃত্যু এগুলো সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়েছে...। নাসরিন সুলতানার এমন পোস্টে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাবহারকারীরা।

হাসান আল মাহমুদ তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'এই মহিলা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে জাস্ট উন্মাদের মত আচরণ করতেসে। ফেসবুকে এ-টিম যেসব গুজব প্রচার করে তার সবগুলাই সে নিজ দায়িত্বে প্রচার করে। কিন্তু এটা ছিলো তার পাগলামির চূড়ান্ত। এ-টিমের সুশান্ত দাসরা পর্যন্ত মুগ্ধকে নিয়ে গুজব ছড়িয়ে লজ্জায় পড়েছে। আর এই রংহেডেড মহিলাও সে গুজবে শামিল হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক, মতাদর্শিক যেকোন বিতর্ক করার স্বাধীনতা মানুষের আছে। কিন্তু একজন শহীদকে নিয়ে এরকম প্রশ্ন তুললে সেটা তার পরিবারের জন্য কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে সেটা কি এই উন্মাদ মহিলা ভেবে দেখেছে? কারো খুনকে অস্বীকার করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না। এটা রীতিমতো ক্রাইম। কারণ এর সাথে ভিক্টিম ফ্যামিলির ন্যায়বিচার পাওয়া জড়িত, খুনির শাস্তি জড়িত। ফলে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  এই জঘন্য অপরাধের জন্য এই মহিলা জাহাঙ্গীরনগরে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করার যোগ্যতা হারিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই তাকে বরখাস্ত করতে হবে। যদি প্রশাসন সেটা না করে তাহলে আমরা এটা নিশ্চিত করবো যেদিন এই মহিলা বিদেশ থেকে ফিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করবে সেদিন তাকে জুতার মালা দিয়ে বরণ করা হবে।'

আরেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ম্যাডাম, আপনার পরিবার অবৈধ শাসনামলের হালুয়া রুটির ভাগীদার ছিলো কিন্তু আপনার ভাই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার খুব কম সময়ের মধ্যে হাসিনার পতন হয়ে যাওয়াতে আপনি সম্ভবত এখনো ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আশাকরি, খুব তাড়াতাড়ি এই শোক কাটিয়ে উঠবেন।'

সহযোগী অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা ২০১১ সালে দর্শন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।

যাযাদি/ এম