গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সকল গোষ্ঠীর সহাবস্থান নিশ্চিত চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি এ দাবি জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সকল শক্তিকে সাথে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রশাসনকেই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সকল গোষ্ঠীর সহাবস্থান নিশ্চিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছে, অতিদ্রুত গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সকলকে সাথে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সহাবস্থানের লক্ষ্যে কাজ করার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সকলপক্ষের রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিতে কাজ করতে এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
কিন্তু গত ১৯ নভেম্বর এর মিটিংয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রয়াসের সম্পূর্ণ ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রশাসনের এমন আচরণ মোটেও কাম্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করেন, এমন মিটিং ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক অবস্থাকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ১৮ই নভেম্বর, ২০২৪ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক নোটিশে জানানো হয় যে, ১৯ নভেম্বর, বিকাল ৪টায় প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে সকল ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) সম্পর্কিত মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সেই মিটিংস্থলে উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জানতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন না। যিনি একইসাথে পদাধিকারবলে জাকসু'র সভাপতি। এমতাবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির প্রতিনিধিত্ব ছাড়া এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের কোনো কার্যকারিতা থাকে না। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত মিটিংয়ে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি উপাচার্যবিহীন এমন মিটিং আয়োজনের চেষ্টাতে দূরভিসন্ধিমূলক কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে তারা মনে করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর জাকসু নিয়ে দ্বিতীয় দফায় মিটিং করার কথা জানায় জাবি প্রশাসন। এসময় মিটিংয়ে ডাকসু সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান অনুপস্থিত থাকায় মিটিং স্থগিত ঘোষণা করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন)। পরে পরিচয় পর্বে শিবির ইস্যুতে বাকবিতন্ডায় জড়ান উপস্থিত সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারই প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ স্পষ্ট বিবৃতি দেওয়া হয়।
যাযাদি/এআর