জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দেয়া লাগবে পরীক্ষা: উপাচার্য 

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৫৯ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১:০৭

গাজীপুর প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

শিক্ষা এবং ডিগ্রীর মান উন্নয়নে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানে স্নাতক সম্মানে লিখিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ্। এবার যারা এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে তাদেরই জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলেন উপাচার্য।  

শনিবার সকালে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ৬টি কলেজের ছাত্র-শিক্ষক এবং স্থানীয় সূধিজনদের অংশগ্রহণে গুণগত শিক্ষা এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়নে আয়োজিত এক সূধী সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা উল্লেখ করেন।

সমাবেশে উপাচার্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির মান উন্নয়নে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংক উন্নয়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস সংস্কারের রূপরেখা উল্লেখ করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্মান শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য আইসিটি এবং অন্যান্য সংক্ষিপ্ত টেকনিক্যাল কোর্সের প্রস্তাব করেন তিনি। ছাত্র-ছাত্রীদের আগামীতে স্নাতক সম্মান কোর্সের সাথে সাথে এ সমস্ত যেকোনো একটি টেকনিক্যাল কোর্সে বাধ্যতামূলকভাবে পড়াশোনা করতে হবে। 

এ লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে কলেজ পর্যায়ে টেকনিক্যাল কোর্স পাঠদানে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিতির হার বাড়ানো, এসাইনমেন্ট এবং ইনকোর্সগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং কলেজের লাইব্রেরীগুলোতে পর্যাপ্ত রেফারেন্স বইয়ের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণসহ দেশের সর্বস্তরের কলেজসমূহের ভৌত অবকাঠামো উন্নতিকল্পে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত রূপরেখা তুলে ধরেন। 

তিনি ২০২৫ সালকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাবর্ষ হিসেবে ঘোষণা দেন এবং এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, এই মুহূর্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে দ্রæত গতিতে থেমে থাকা পরীক্ষাগুলো আয়োজন করছে তাতে আগামী বৎসরের নভেম্বর ডিসেম্বর নাগাদ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জট প্রায় ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এ ব্যাপারে তিনি শিক্ষক-কর্মকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সহযোগিতা কামনা করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা তাহমিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপাচার্য বলেন, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিহত প্রতিটি শহীদ পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যা নিয়ে ইতোমধ্যে সিন্ডিকেটে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীর ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। 

এ অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাছানাত আলী এবং বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জনাব জেদান আল মূসা, পিপিএম। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ্। তারপর শান্তির পায়রা অবমুক্ত করে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন তিনি। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক জোরদার ও সকল কলেজ এবং অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ও কর্মমুখী শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেন তিনি। উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ বীর আবু সাঈদ এবং বীর মুগ্ধ'র নামে ভবন এবং নতুন স্থাপনার নামকরণ করা হবে। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা মহিলা ডিগ্রী কলেজ চত্ত¡রে আয়োজিত সমাবেশে বগুড়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণেরও ঘোষণা দেন উপাচার্য।

যাযাদি/ এম