শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

দেশজুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে আছে বাউবির শিক্ষাব্যবস্থা : উপাচার্য

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২:১৭
ছবি-যায়যায়দিন

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বাউবি একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে শিক্ষাবঞ্চিত, দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল, বিভিন্ন পেশাজীবী, ক্ষুদ্র নৃ—গোষ্ঠি, অবহেলিত, সব বয়সের মানুষ, শারীরিক প্রতিবন্ধী, ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষের জন্য ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র, ৮০টি উপ—আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং ১,৫৪৫টি স্টাডি সেন্টারের মাধ্যমে দেশজুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে আছে বাউবির শিক্ষাব্যবস্থা।

তরুণদের কর্মসংস্থান, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও দক্ষতা বাড়াতে জীবনমুখি নানা দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাউবি ও ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক প্রতিনিধি দলের সাথে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উপাচার্য এসব কথা বলেছেন বলেন।

বৈঠকে বাউবির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার ড. মহা. শফিকুল আলম এবং ইউনিসেফের পক্ষে ছিলেন এডুকেশন চিফ দীপা শংকর, এডুকেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন, ন্যাশনাল এডুকেশন কনসালটেন্ট দিদারুল আনাম চৌধুরী, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ শামীমা সিদ্দিকী, শিক্ষা অফিসার রুবাইয়া মনজুর।

বাউবি'র পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো: খালেকুজ্জামান খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, গত তিন দশকে বাউবি ও ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে এটাই প্রথম বৈঠক। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উঠে আসে বাউবির শিক্ষাক্রমের মৌলিক দর্শন এবং ইউনিসেফ কর্তৃক এ উদ্যোগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের পারস্পারিক সহযোগিতায় খুব শিগগির দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছরের যুবকদের আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করে দেশে দক্ষ জনগোষ্ঠেী গড়ে তোলা হবে।

এ সম্পর্কিত কোর্স ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টে বাউবি ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি দল খুব শীঘ্রই কাজ করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক প্রতিনিধি দলের সাথে আমরা আজ যে উদ্দেশ্যে বৈঠকে বসেছি তা খুবই প্রাসঙ্গিক, যৌক্তিক ও সময়োপযোগি।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘দক্ষ জনশক্তি ও স্বনির্ভর দেশ গড়তে বাউবিতে লাইভস্টক এন্ড পোলট্রি, পিসিকালচার এন্ড ফিসারিজ, ডিপ্লোমা ইন ইয়্যুথ ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড এপ্লিকেশন থেকে শুরু করে এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক, স্নাতকোত্তর এমনকি এমফিল পিএইচডি’র শিক্ষাক্রম চলমান। এছাড়াও দেশের অর্থনীতির চাকা সচলকারী প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের আত্ম মর্যাদাশীল, কর্ম ও ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত, ইতালি— এই ৬টি দেশে বাউবির স্টাডি সেন্টারে বিভিন্ন প্রোগ্রামে শিক্ষা গ্রহণ করছে ১,২৮৫ জন শিক্ষার্থী। চাইনিজ, এ্যারাবিক, ইংরেজি ভাষার জন্য আমাদের সার্টিফিকেট কোর্স চালু রয়েছে।’ অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বাউবির মৌলিক, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাধারা ও ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ইউনিসেফের প্রতিনিধি দলকে অবহিত করে আরো বলেন, অনলাইন ও ই—প্লাটফর্মের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, ফল প্রকাশ ও শিক্ষকদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা সবই নিজ জায়গায় বসে সম্ভব হচ্ছে আমাদের। বাউবির প্রযুক্তিবান্ধব শিক্ষাসেবায় যুক্ত রয়েছে ই—বুক, বাউবি ওপেন টিভি, ওয়েব টিভি, ওয়েব রেডিও, বাউবি টিউব, বাউবি অ্যাপস, মোবাইল অ্যাপস, টুইটার, ফেসবুক, ইমেইল, ই—লার্নিং, এলএমএস এবং অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম। বিশ্বব্যাপী গড়ে উঠেছে বাউবির প্রযুক্তি বান্ধব শিক্ষাধারা। আজ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির প্রায় সব কিছুই বাউবির শিক্ষা কার্যক্রমে প্রয়োগ হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইউনিসেফের পক্ষ থেকে দীপা শংকর বলেন— দক্ষিণ এশিয়ায় বাউবি অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। আমি আশা করছি, দুটি প্রতিষ্ঠানের পারস্পারিক সহযোগিতায় উপকৃত হবে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণরা। এ সভায় বাউবি ও ইউনিসেফ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের যুবকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ যুবসমাজ গড়ে তুলতে দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে। বাউবি এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধিদের দিয়ে এবিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি ওয়ার্কিং টীম গঠন করা হবে। এবিষয়ে ইউনিসেফ, বাংলাদেশ সকল প্রকার সহযোগীতা দেওয়ার বিষয়ে আশ^াস দেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে