যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তারকে অপমানের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন দত্ত লাইব্রেরী কাম একাডেমিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষক।
মানববন্ধনে কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ জাভেদ হোসাইন খান বলেন আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের অবস্থানের জন্য গর্ব করি। আমাদের সব শিক্ষকরা এ বিশ্ববিদ্যালয় কে প্রাণপণে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় একটি কুচক্র বিশেষ কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি ঘটনা স্থলে উপস্থিত ছিলাম এবং আমার কাছে এটি একটি পূর্ব পরিকল্পনা বলে মনে হয়েছে। আমি চাই একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটির মাধ্যমে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এসময় যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি ও নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় সংহতি জানিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণায় যে উর্ধ্বগতি, সেটা থামানোর প্রচেষ্টা হিসেবে শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা তৈরি ও শিক্ষকদের অপমান করা হচ্ছে। যা কখনো আমরা শিক্ষকরা মেনে নিবো না। আমরা এঘটনার বিচার চাই, যেন আমাদের পরবর্তীতে ক্লাস পরীক্ষা বাদ দিয়ে মাঠে নামতে না হয়।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সকল শিক্ষকের মধুর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীসুলভ নয় এমন কিছু বহিরাগতরা অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিনা আক্তারের সাথে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে ও মানহানির চেষ্টা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই আগামী তিন দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আগামী ৭ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, তৎক্ষনাৎ উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আমি ড. সেলিনা আক্তারকে বলেছিলাম আপা তুলেন না। তবে আজকে মানববন্ধনের বিষয়ে মনে হয়েছে শিক্ষকরা নীল দলের শিক্ষকদের পুনর্বাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর ছবি পদদলিত করেছে যশোর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সহ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ড. আনোয়ার হোসেনকে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার তার সরাসরি শিক্ষক দাবি করে লিফটের দরজার সামনে ফ্লোর থেকে সাবেক উপাচার্যের ছবিটি তুলে নেন। এর প্রেক্ষিতে ড. সেলিনা আক্তারের অফিস কক্ষের নেম প্লেট খুলে ফেলে তাঁরা।