বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি, বিইউবিটিতে ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত হলো ৬ষ্ঠ বিইউবিটি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে।
প্রতিযোগিতার জন্য এক হাজারেরও অধিক আলোকচিত্র জমা পড়ে যার মধ্য থেকে কঠোর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে ১০৭টি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয় ।
গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয় প্রদর্শনীর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফটোগ্রাফি প্রতিভাকে সবার সামনে তুলে ধরা এবং তাদের সৃজনশীল দক্ষতাকে আরও সমৃদ্ধ করা। এটি কেবল একটি প্রদর্শনীই নয়, বরং এটি একটি মিলনমেলা, যেখানে শিক্ষার্থীরা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তাদের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি ও গল্পকে চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। ফটোগ্রাফি কেবলমাত্র ছবি তোলার মাধ্যম নয়; বরং এটি একটি গল্প বলার শক্তিশালী হাতিয়ার, যা সমাজের সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরার পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক নানা দিককে ফুটিয়ে তোলে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিইউবিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলী। তার স্নেহময় উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক হয়ে ওঠে। উপাচার্য সম্পূর্ণ প্রদর্শনী ঘুরে দেখে ছবিগুলোর শিল্পমান বিশ্লেষণ এবং ফটোগ্রাফারদের প্রশংসা করেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এমন আলোকচিত্র প্রদর্শনী শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে আরও উৎসাহিত করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পচর্চাকে সমৃদ্ধ করবে।
প্রদর্শনীর বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন দেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান। তিনি শিক্ষার্থীদের ছবির প্রতিভাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেছেন এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তার গভীরতাকে সম্মান জানিয়েছেন।
প্রদর্শনীতে অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মিঞা লুৎফার রহমান, এডভাইজর, বিইউবিটি ট্রাস্ট ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি, বিইউবিটি’র ব্যবসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাসুদ হোসেন, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিইউবিটি ফটোগ্রাফী ক্লাবের মডারেটর মোঃ আব্দুল্লাহ আল আজাদ।
২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় প্রদর্শনীর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, যা প্রতিযোগিতার উত্তেজনা এবং উদ্দীপনাকে নতুন মাত্রা দেয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন জান্নাতুল ফেরদৌস তাঁর "২৪-এর ছাত্র জনতার বিজয়" শিরোনামের ছবির জন্য, যা ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে জীবন্ত করে তোলে। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ইসরাত জাহান ওলি তাঁর "Resilience in her eyes" ছবির জন্য, যেখানে এক নারীর মনের দৃঢ়তা ও সাহসের চিত্র ফুটে উঠেছে। তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করেন তারেক নিয়ামতুল্লাহ তাঁর "বড় ছেলে" শিরোনামের ছবির জন্য, যেখানে পারিবারিক বন্ধন ও ভালোবাসার আবেগ মূর্ত হয়ে উঠেছে।
এই ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিরাট অনুপ্রেরণা, যা তাদের ফটোগ্রাফির প্রতি ভালোবাসা ও সৃজনশীলতাকে আরও উজ্জীবিত করবে। শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে এই আয়োজন বিইউবিটির শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনন্য মঞ্চ তৈরি করেছে, যা তাদের ভবিষ্যতের পথচলায় সাহস ও আত্মবিশ্বাস যোগাবে যা ইতিমধ্যে বিইউবিটি পরিবারের জন্য একটি বিশেষ স্মৃতিরূপে স্থান করে নিয়েছে।
যাযাদি/এআর