ইংলিশ মিডিয়ামে ইসলামিক শিক্ষা দিচ্ছে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাফল্যের কারিগর সোহাগ

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৩৮ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:০৯

যাযাদি ডেস্ক
ছবি-যায়যায়দিন

দেশের ইসলামিক ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। শুধুমাত্র আধুনিক শিক্ষা নয়, ইসলামি মূল্যবোধ, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিক শিক্ষার সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রতিষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার পেছনে কাজ করছেন মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ।

প্রথমে রেডব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন সোহাগ। নানা প্রতিকূলতায় স্কুলটি বন্ধ হয়। কিন্তু তিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে গেছেন। নতুন উদ্যমে শুরু করেন এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। এটি এখন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আনিসুর রহমান সোহাগ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হেড অব স্কুল হিসেবে সহকর্মী ও অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন।

ঢাকায় বিভিন্ন শাখায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে আধুনিক ও ইসলামিক শিক্ষা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের কুরআন মুখস্ত করার জন্য হিফজ প্রোগ্রাম, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য তারবিয়াহ কার্যক্রম এবং বাস্তব জীবনে সফল হতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিশেষ কোর্সগুলো পরিচালনা করা হয়। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি কেবল একাডেমিক শিক্ষা নয়, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকেও শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে।

ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে এভেরোজ, একটি স্বপ্নের যাত্রা: ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ কাউন্সিলের একজাম ফেসিলিটেটর হিসেবে কাজ করার সময় থেকেই সোহাগ স্বপ্ন দেখেছিলেন—এমন একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গড়ে তোলার, যেখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ইসলামের শিক্ষায় সমৃদ্ধ হবে। তাঁর লক্ষ্য ছিল একটি আন্তর্জাতিক মানের স্কুল তৈরি করা, যা কেবল ইংলিশ মিডিয়ামের নামের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দেবে।

বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সুযোগ: এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে— যেমন মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি, আইআইইউএম মালয়েশিয়াসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা ও দক্ষতার জোরে বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের অবস্থান করে নিচ্ছে। এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ২০১৮ সালে ‘বেস্ট প্রি-স্কুল অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কার এবং দুবাইয়ে ‘বেস্ট স্কুল চেইন অফ দ্য ইয়ার’ শিরোপা অর্জন করেছে। এমনকি, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে একমাত্র এভেরোজকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যেখানে তাদের শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভর্তির সুযোগ পায়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ইকোনমিকস থেকে ৩.৯৪ সিজিপিএ নিয়ে এন্ট্রাপ্রেনরশিপ ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন সোহাগ। পাশাপাশি, আইবিএ থেকে ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এমডিপি) সম্পন্ন করেছেন। এর আগে তিনি ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন। তিনি এখন মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার অধীনে পিএইচডি করছেন।

মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ জানান, দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য একটি নির্দিষ্ট মডেল, কাঠামো ও পাঠ্যক্রম প্রয়োজন, যা আন্তর্জাতিকমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মকে সুযোগ দিতে হবে— তারা যেন দেশের শিক্ষার কাঠামো পর্যবেক্ষণ করতে পারে, তাদের মতামত দিতে পারে এবং সংস্কারের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সোহাগ বলেন, ‘আমাদের ছাত্রছাত্রীরা জাতির ভবিষ্যৎ এবং এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের সঠিক সুযোগ, শিক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা দেওয়া হলে, তারা দেশের উন্নয়নের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবে।’

দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই আন্দোলনে সমর্থনে সোহাগ গত ১৮ জুলাই ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশের সাহসী ছাত্রছাত্রীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি.... তোমাদের আন্দোলন কেবল কোটার জন্য নয়; এটি ন্যায্যতা, ন্যায়বিচার এবং আমাদের জাতির ভবিষ্যতের জন্য।’

তাঁর এই সমর্থন অনেকেই ভালোভাবে নেয়নি। তাঁকে ও তাঁর স্কুলকে নিয়ে নানা মিথ্যা অভিযোগ এবং ষড়যন্ত্র চালানো হয়। নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। তবে সোহাগ তাঁর অবস্থানে অবিচল ছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে দাঁড়াতে কখনো পিছপা হননি। তাঁর মতে, এ ধরনের আন্দোলন তরুণ প্রজন্মকে আগামীতে দেশের সংস্কার ও উন্নয়নে সাহসী ভূমিকা পালনে অনুপ্রাণিত করবে।

যাযাদি/ এস