জমকালো আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিলো রাবি পাঠক ফোরাম

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৩ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৫

রাবি প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পাঠক ফোরামের জমকালো আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ ও মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।এ সময় আয়োজনের অংশ হিসেবে 'তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি মো. সাগর ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাবেক সহ-সভাপতি ফাতেমা মুস্তারিনের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, প্রক্টর মাহবুবুর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজের সহকারী অধ্যাপক জুয়েল কিবরিয়া ও পাঠক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফ হাসনাত বক্তব্য রাখেন। 

রাবি পাঠক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিআইডব্লিউটি এর পরিচালক   আরিফ হাসনাত ফোরাম দিকনির্দেশনা বক্তব্য মাধ্যমে 
শুরু হয় অনুষ্ঠান। 

এসসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, 'নতুন বাংলাদেশে যারা পারবে না তাদেরও জায়গা থাকতে হবে। সেই জায়গাটার জন্য সবচেয়ে বড় উপাদান হলো সহমর্মিতা। আমরা যদি একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই তাহলে সেখানে সহমর্মিতার জায়গাটা থাকতে হবে। হাজার হাজার তোমাদের মত বাচ্চা শহীদ হয়েছে। তাদের কাছে একটা ঋণ আছে রক্তের ঋণ। এই ঋণের কথা একটি মুহূর্তের জন্য ভুললে চলবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা ছিল বৈষম্য বিরোধী একটা আন্দোলন। যেখানে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল। আমি শুরু থেকে আমার শিক্ষার্থীদের বলে এসেছি তোমাদের কোটা নিয়ে আমার তেমন চিন্তা নেই। একটা রাষ্ট্রের প্রসঙ্গে এ ধরনের কোটা থাকা ঠিক না, এটা যেমন ঠিক। তেমনি একটা রাষ্ট্রের বিশালতায় এটা একটা ছোট অংশ। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বড় অংশ হলো আমি কেন তোমাদের সাথে থাকি কারণ আমি একটা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি যেখানে ইনসাফ থাকবে, সুবিচার থাকবে। আসল প্রশ্ন হচ্ছে সুবিচারের প্রশ্ন। সুবিচার যদি থাকে তাহলে কোটা নিয়ে আন্দোলন করার প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের লড়াইয়ের বৃহত্তম লক্ষ্য ছিল এই ইনসাফের জন্য লড়াই করা। কোটা ছিল তার একটি ছোট্ট উপসর্গ। নতুন বাংলাদেশে আমরা কখনো সুবিচারের জায়গাটা নষ্ট হতে দিব না। '

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশের যত সাফল্য সব এসেছে ছাত্রদের হাত থেকে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ছিল বৈষম্যমূলক আচরণ। পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে যে বৈষম্য ছিল তার বিরুদ্ধেই ছিল মূলত আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধারা শহীদ হয়েছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। কিন্তু এরপরেও আবার দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হলো। শিক্ষা ক্ষেত্রে, চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে, সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য ছড়িয়ে পড়ল। যার প্রেক্ষিতে জুলাইয়ে ছাত্র গণঅভ্যুত্থান হলো। আমাদের চাওয়া-পাওয়া একটাই সমাজে কোন বৈষম্য থাকবে না, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ থাকবে না, মেধাও যোগ্যতার ভিত্তিতে সবাই সমান সুযোগ পাবে এবং দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।'

সংগঠনটির সভাপতি মো. সাগর ইসলাম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করেছি। আমরা এখানে প্রায় ৫০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য আয়োজন সামগ্রী প্রস্তুত করেছি। আমাদের মূলত কাজ হচ্ছে অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদেরকে যা যা দরকার সেটা আমরা পাঠক ফোরামের পক্ষ থেকে করার চেষ্টা করি।'

উক্ত অনুষ্ঠানের শেষাংশে মেধা যাচাই প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ প্রথম ৬ জনকে প্রফেসর’স ও বিশ্ব সাহিত্যের সৌজন্যে বিশেষ পুরষ্কার প্রদান করা হয় এবং এসময় প্রায় ৫০০ নবীন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এসএম