রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১

'গণপিটুনি দেখতে গিয়ে আসামি হয়েছে রায়হান ' মায়ের আহাজারি

জাবি প্রতিনিধি
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১২
ছবি : যায়যায়দিন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনির পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু শামীম মোল্লার হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামি ইংরেজি বিভাগের মাহমুদুল হাসান রায়হানকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আহাজারিতে ভেঙে পড়ে রায়হানের মা রেহেনা পারভিন।

রেহেনা পারভিন বলেন, 'রায়হান আমার একমাত্র আশা-ভরসার স্থল। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। আমি চাই, আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাকে বিচার করা হোক। কিন্তু আমার ছেলে যদি নিরাপদ হয়ে থাকে তাহলে তাকে যারা ফাঁসিয়েছে তাদের বিচার চাই এবং আমার ছেলের মুক্তি চাই।' তিনি আরও জানান, রায়হান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম সারিতে থেকে সংগ্রাম করেছে। এজন্য শামীম মোল্লা তাকে নির্যাতন ও অত্যাচার করেছে। ১৫ জুলাই শামীম মোল্লাসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা ভিসির বাসায় তার উপর হামলা করে এবং মারধর করে। '

রায়হানের বাবা কবির হোসেন বলেন, আমার ছেলে রায়হান ঐদিন হল থেকে বের প্রক্টর অফিসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো। প্রক্টর অফিসে ভিড় দেখে সে সামনে এগিয়ে যায় এবং দেখতে পায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী শামীম মোল্লাকে গণপিটুনি দিচ্ছে ছাত্রজনতা। এসময় সে দাড়িয়ে দেখে। কিন্তু সে কখনো এই হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। ' তিনি জানান 'শুধুমাত্র দাড়িয়ে থাকার একটা ভিডিও ফুটেছের উপর ভিত্তি করে আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। '

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়হানের ছোট ভাই সেজান আহসান অশ্রুসিক্ত হয়ে বলেন, শামীম মোল্লার পিটুনিতে সেদিন অনেকে সেখানে উপস্থিত ছিল। তাদের কারও নামে তো মামলা হলো না? আমার ভাইকে কেন তিন নম্বর আসামি করা হলো? তিনি বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমার নিরপরাধ ভাইয়ের মুক্তি চাই। শুধুমাত্র একটা ভিডিও ফুটেজের উপর ভিত্তি করে আমার ভাই অপরাধী হতে পারে না।

মাহমুদুল হাসান রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ৷ রায়হানের বাবা কবির হোসেন পেশায় একজন রিকশাচালক এবং মা রেহেনা পারভিন একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ছোটভাই সেজান আহসান গাজীপুর স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

প্রসঙ্গত, গত ২০ সেপ্টেম্বর শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় রায়হানসহ ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও তাদের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২৫ জনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে