শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ছাত্রলীগ কর্মীর থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নয় মাস পর নিলেন ছাত্রদল কর্মী

ইবি প্রতিনিধি
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮
ফাইল ছবি

নয় মাস আগে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার জেরে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী মিনহাজুল হক রুমন লোক লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শনিবার রাত পৌঁনে ৮ টার দিকে লালন শাহ হলের ৪১৫ নং কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত এনামুল হক ইমন আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত। এসময় তার সঙ্গে আরেক ছাত্রদল কর্মী শ্রাবণসহ ১০/১২ জন ছিলেন বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত ইমনের ভাষ্য, নয় মাস আগে রুমন তাকে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছিল। সেসময় রুমন ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় থাকায় সে বিচার পাইনি। আর তাই প্রতিশোধ থেকে রুমনকে মারধর করেছে সে।

এদিকে পূর্বে ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ভুক্তভোগী রুমন শাখা ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী ছিলেন।

জানা গেছে, গত ছয় মাস আগে হল ছেড়েছেন মিনহাজুল হক রুমন। খুলনায় এক কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তিনি দুইদিন আগে থেকে ক্যাম্পাসের লালন শাহ হলের ৪১৫ নং রুমে অবস্থান করছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার পর ইমনসহ দশ-বারোজন শিক্ষার্থী হঠাৎ তার রুমে প্রবেশ করে। পরে রুমনকে মারধর করে তারা। এছাড়া তাকে আগামীকালকের মধ্যে হল ছাড়ারও হুমকি দেয় অভিযুক্তরা। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুমনসহ ১৫/১৬ জন শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু হলে ইমনের রুমের (৩০৯) দিকে যান। তবে ইমন বিষয়টি জানতে পেরে আগেই হল ত্যাগ করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ইমনের কক্ষে ঢুকে তার বিছানা ও জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন।

ভুক্তভোগী মিনহাজুল হক রুমন বলেন, ‘পরশুদিন রাতে আমি ক্যাম্পাসে আসি। আমার খুলনা যাওয়ার কথা ছিলো, সেই উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে আসা। তবে হুট করে খুলনায় যাওয়া ক্যান্সেল হওয়ায় কয়েকদিন এখানে থাকতে হচ্ছে। আমি আগে যে রুমে থাকতাম (৪১৫ নং) সেই রুমেই ছিলাম। সন্ধ্যায় ১০/১২ জন আমার রুমে আসে। তারা আমাকে হেনস্থা করেছে ও ক্যাম্পাস ছাড়ার হুমকি দিয়েছে। এমনকি গায়েও হাত তোলা হয়েছে।’

অভিযুক্ত এনামুল হক ইমন বলেন, ‘নয় মাস আগে আমাকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয় রুমন ভাই৷ তবে সেসময় সে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় থাকায় আমি বিচার পাইনি। ছাত্রলীগের সভাপতির রুমে আমাকে আর আমার বাবাকে ডেকে হ্যান্ডশেক করিয়ে মিটিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম৷ এজন্য আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে ভাইয়ের রুমে আজকে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে তাকে মারধর করি।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, ‘তারা এর আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলো বলে আমরা জেনেছি। তারা আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে। শ্রাবণসহ আরো কয়েকজন আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে আসে। কিন্তু আমরা এমন কাউকে আমাদের দলে যুক্ত করতে চাই না, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৮ই নভেম্বর ইমনকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে রুমনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও সুষ্ঠু বিচার দাবিতে ২৬শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছিল ইমন। পরে অভিযোগের বিষয়টি তখন ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যস্থতায় মিমাংসা করা হয়।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে