শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ছাড়া, মাথায় হাত পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন দোকানিদের!

পাবনা প্রতিনিধি
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩৮
ছবি : যায়যায়দিন

আওয়ামীলীগ জোট সরকারের পতনের পর থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো নেতা কর্মীর আনাগোনা দেখা যায় নি। এর ফলে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস সংলগ্ন দোকানদারদের মাথায় হাত। ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাস ছাড়া হওয়ার পর তাদের বাকি টাকা আদায়ের আশঙ্কায় আছেন তারা। পাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীর কাছে টাকা পাওয়ার কথা জানায় দোকানীরা। অনেক সাবেক নেতা কর্মীর থেকেও টাকা পাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের নেতারা বিভিন্ন খাবার দোকান, ভাতের হোটেল ও চায়ের দোকানে বাকি রেখে যাচ্ছিলেন। সরকার পতনের পর ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ায়, তারা দোকানীদের বাকি পরিশোধ করবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন দোকানদাররা। এদিকে এতো পরিমাণ বাকি রাখা হয়েছে কিছু দোকানে যার ফলে তাদের দোকান চালানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দোকানের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে নেতা কর্মীরা এসে জোর করেও খেয়ে যায়। আবার এমনও হইছে যে কর্মীরা খেয়ে নেতার নাম করে চলে গেছে। পরে টাকা চেয়ে পাওয়া যায়নি। অনেকে বলেছেন অনেক সাবেক নেতা কর্মীর থেকেও টাকা পাবেন তারা।

দোকান মালিক মো. আলামিন সরকার জানান, ‘প্রতিদিন নানা অজুহাতে বাকি রেখে যাচ্ছিল ছাত্রলীগের নেতারা। বিশেষ করে তানভীর তুষারের কাছে পাব ১০ হাজার টাকা ও নাইমুর রহমান ইমন বিকাশে ৩ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে সেটা আর দেইনি। সব সময় দিবে দিবে বলে দিত না। ভয় পেতাম তাই কারো কাছে নালিশ করিনি। গরীবের টাকা মেরে খেয়ে কী তারা সুখী হবে? তারা টাকা দিলে দোকানটা আরো সচল হতো। এখন তারা চলে যাওয়ায় আমাদের পাওনা টাকা কীভাবে আদায় করবো, তা নিয়ে চিন্তিত।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এমনই ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান গেটের সামনে আলামিন স্টোর থেকে ছাত্রলীগ নেতা নাইমুর রহমান ইমন ৩২০০, তানভীর তুষার ১০০০০, সাঈদ স্টোর থেকে ইমন ১৪০০০, মাসুদ ৪৬০০, হৃদয় ২৯২২, জিসান ৪৪২৭, নানার হোটেল থেকে মাসুদ ৪২০০, পিয়াস ৩৬০০, সৌরভ ৩০০০, আসিফ ১০৫০০, সাব্বির ১০০০০, লেলিন ৬০০০, আবির ৬০০০, রেন ৮০০, সাব্বির ১০০০, সাব্বির ৬০০০, হৃদয় ৫০০০, সিয়াম ৪০০০, শাহীন ২১০০, শামীম ৩০০০, সমাজি ৪৬০০, সোহাগ ১০০০, সোহান ১৬০০, রানা ১২০০০, জিহাদ স্টোর থেকে বাবু ৫০০, লেলিন ২৫০০, আলমগীর স্টোর থেকে আসিফ ৬০০, মাসুদ ১০০ ও শামীম ৬০০ সহ আরও কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বাকি নিয়েছে বিভিন্ন স্তরের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অন্য এক দোকানদার মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে ছাত্রলীগের নেতারা এখানে খেয়ে দেয়ে টাকা দেয়নি। মাঝেমধ্যে দিত আবার মাঝেমধ্যে বাকি রাখতো। দিন শেষে হিসাব করে দেখলাম বাকির পরিমাণ টাই বেশি। এত টাকা বাকি আছে, আমরা এখন কী করবো বুঝতে পারছি না। প্রায় সকল নেতা কর্মীর কাছে থেকে টাকা পাবো। তার মধ্যে নাইমুর রহমান ইমন ১৪ হাজার টাকা, মাসুদ রানা ৪৬০০ টাকা, হৃদয় ২৯০০ টাকা, জিসান ৪৪০০ টাকা বাকি রেখে চলে গেছে। এদের সাথে যোগাযোগ ও করতে পারছিনা। ’

স্থানীয় দোকানদারদের এই অবস্থার কারণে ব্যবসার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে এবং তারা তাদের পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে