কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এমন দাবি জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলনটি অত্যন্ত যৌক্তিক, ন্যয়সঙ্গত এবং শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যাচ্ছিলাম। সরকারের উচিত ছিল প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরিস্থিতি তৈরি করা এবং দৃশ্যমান পদক্ষেপের মাধ্যমে কোটা সংকটের নিরসন করা। কিন্তু সরকার সেটি না করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন এবং নানান শক্তির মাধ্যমে দমনের পরিকল্পনা করছে। আমরা বলে দিতে চাই, সরকারের এই ধরনের পরিকল্পনা সরকারের জন্যই বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, আমরা ১৮ সালে এ ধরনের ঘটনা দেখেছি। আমরা চাই না এর পুনরাবৃত্তি ঘটুক। সরকার যদি এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে তাহলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। আমাদের ছাত্র ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এটা চলমান থাকবে। শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন শেষ করে ক্লাসে ফিরে গেলেও কিন্তু আমরা ফিরে যাবো না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যে মামলা করা হয়েছে সেই বিষয়ে পুলিশের একটি বক্তব্য আমরা শুনেছি। সেদিন কিন্তু পুলিশ বলেছিল, কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আজ কেন হঠাৎ করেই এই অজ্ঞাতনামা মামলা করা হলো? সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমরা জবাব চাই।
মামলা প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে নাহিদ বলেন, এখানে অজ্ঞাত নাম দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের দাবি এখানে স্পষ্ট। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব জায়গায় প্রকাশ্যে আন্দোলন করছি। যদি মামলা করতেই হয় আমাদের নামেই মামলা দেন। ছাত্রসমাজকে এ ধরনের মামলা হামলা দিয়ে, ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পুলিশ, সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনসহ যারা বৃহস্পতিবারের ব্লকেড কর্মসূচিতে হামলায় জড়িত ছিলেন, তাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার, যৌক্তিক আন্দোলন দমনে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যদি আমাদের দাবি আদায় না হয়, আমরা বৃহত্তর গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম এবং আসিফ মাহমুদ।
যাযাদি/এসএস