সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কাগমারী-চারাবাড়ি সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে । তারা ‘সারা বাংলায় খবর দে’, ‘কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’,’কোটা না মেধা’ এ স্লোগান দিয়ে মুখরিত রাখে ।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জামিরুল আলম মিয়াজী বলেন,১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল মৌলিক মানবাধিকার এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠায়। সংবিধানের ২৮(৪) ও ২৯(৩ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোটা প্রদান করা যেতে পারে কেবলমাত্র দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে। যেহেতু কোটাব্যবস্থা কোন পুরুষ্কার নয়, তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার পুনর্বহাল সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন বংশপরম্পরায় পাওয়া সম্পত্তি নয়, এটি একটি সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় আদর্শ এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত একটি বৈষম্যনীতি।সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটাপদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।
বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌসিফ কবির বলেন,সংবিধানের ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগের জন্য সবার সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। তবে উপ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কোনো অনগ্রসর অংশের (প্রতিবন্ধী ও উপজাতি) জন্য বিশেষ বিধান রাখার কথা। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারি চাকরির বা জনজারে অধিকাংশ প্রার্থী পোষ্য কোটার সুবিধাভোগী। তাহলে সবার সমান অধিকারের বিষয়টি কতটুকু বাস্তব। সম্প্রতি, পোষ্য কোটা বাতিলে ডিসিদের সুপারিশ নজরকাড়ার মতো। কিন্তু অধিকাংশ কোটা ব্যবস্থা এখনো রয়েই গেছে। কোটা ব্যবস্থা, যেটা অনগ্রসর জাতির জন্য দেয়া হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ সুবিধা ভোগ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এই অযৌক্তিক কোটাব্যবস্থা বাতিল করা এখন সময়ের দাবি। এতে মেধাবীরা অর্জন করবে তাদের যোগ্য স্থান। তারাই এগিয়ে নেবে দেশকে। তাই দেশের কল্যাণার্থে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
যাযাদি/ এস