জীববিজ্ঞানে মৌলিক গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির স্বর্ণপদক-২০২৩ পাচ্ছেন ড. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর এর বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সম্পাদক প্রফেসর ড. হাসিনা খান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের জীববিজ্ঞান গবেষণায় চমৎকার অগ্রগতি ও অসামান্য অবদানের প্রমাণস্বরূপ এ মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে। এজন্য তিনি ড. নূরে আলম সিদ্দিকীকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি শীঘ্রই এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পদক প্রদান করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ড. নূরে আলম সিদ্দিকী সম্প্রতি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির আ্যসোসিয়েট ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০০৯ সালে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ হতে স্নাতক পরে ২০১২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিষয়ের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী কৃতিত্বের সহিত সম্পন্ন করেন। পরে ২০১৮ সালে মর্যাদাসম্পূর্ণ ফেলোশিপ জার্মান একাডেমিক একচেঞ্জ নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রপ মলিকুলার জেনেটিক্স বিষয়ের উপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পিএইচডি গবেষণায় চমৎকার অগ্রগতির জন্য তিনি 'DAAD Outstanding Award' লাভ করেন এবং তার উদ্ভাবিত ফসলে নাইট্রোজেন ট্রান্সপোর্ট মেকানিজম আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
২০১২ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়), জামালপুরে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে ড. সিদ্দিকী তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৫ ও ২০২২ সালে যথাক্রমে সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
দেশ ও বিদেশের সহায়তায় ফসলের স্ট্রেস ফিজিওলজি ও মলিকুলার জেনেটিক্রের উপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন এই তরূণ গবেষক। গবেষণায় অবদানের জন্য জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে পেয়েছেন অনেক সম্মানজনক পুরস্কার। বিশ্বের স্বনামধন্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন জার্নালে তার ৫০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আর্ন্তজাতিক জার্নালের এডিটর ও রিভিউয়ার হিসেবে কাজের পাশাপাশি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিয়মিত নিবন্ধ লেখেন।
ড. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, 'প্রতিবছর ভৌত বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান শাখায় গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ এই পদক প্রদান করা হয়৷ এবছর আমি জীববিজ্ঞান শাখায় মনোনীত হয়ে অনেক আনন্দিত৷ আমি মনে করি এই পদক প্রাপ্তি আমাকে গবেষণায় আরো অনুপ্রাণিত করবে। ভবিষ্যতে নতুন গবেষণা চর্চা অব্যাহত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এই অর্জন শুধু আমার একার নয়, আমার প্রাক্তন শিক্ষাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমার শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে গবেষণায় সাহায্যকারী সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।'
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি দেশের বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদদের সর্ববৃহৎ শিক্ষায়তন ফোরাম। দেশের বিজ্ঞান উন্নয়ন এবং গবেষণা কর্মকান্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে এই একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ কুদরাত-ই-খুদা ছিলেন এ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
যাযাদি/ এস