"অসুন্দর ও কলুষিত হৃদয় পবিত্র করাই ঈদুল আজহার লক্ষ্য"
প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২৪, ১৮:০১
ক্লাস-পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের ধকল আর ব্যস্ততায় ভরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একটুখানি স্বস্থির বার্তা নিয়ে আসে ঈদের ছুটি। সময় আসে ব্যস্ততার রুটিন ফেলে কিছু অলস দুপুর কাটানোর, প্রিয় মানুষগুলোর সঙ্গে সময় কাটানোর। সেই আশাতেই আমরা টিকিটের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াই, বিস্তর ধাক্কাধাক্কি হয়। সবকিছু গুছিয়ে টিকেট কেটে সুদূর এক পথ পাড়ি দিয়ে তবেই আমরা বাড়ি ফিরি। ক্লান্ত শরীরে এলিয়ে পড়তে চাই নিজের পুরনো ঘরে, পুরনো বালিশ আর বিছানায়, পুরনো ঘ্রাণের ভেতর। পরিবারের সঙ্গে কেমন সময় কাটছে এবং কোরবানির মাহাত্ম্য ও যথার্থতা উপলব্ধি নিয়েই মনের ভাব প্রকাশ করছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
**"ছাত্র জীবনে ঈদুল আজহার প্রভাব ও শিক্ষা"**
ঈদুল আজহা, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব, যা প্রতি বছর আরবি মাসের ১০ই জিলহজ পালিত হয়। কোরবানি একটি প্রতীকী ব্যাপার। এখানে পশু কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জানমাল থেকে শুরু করে সবকিছুই কোরবানি করতে প্রস্তুত।
কোরবানির ঈদে আমরা আমাদের পরিবারের সাথে পশু কোরবানিতে অংশ নেই, যা আমাদের দায়িত্ববোধ এবং সামাজিক কর্মের প্রতি সচেতনতা বাড়ায়। এই সময়ে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, যা আমাদেরকে পারিবারিক বন্ধন এবং সামাজিক মেলবন্ধন জোরদার করার সুযোগ দেয়। এছাড়া ঈদুল আজহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিবদের মাঝে কোরবানির পশুর মাংস বিতরণ। এটি আমাদেরকে উদার মনোভাব, ভ্রাতৃত্ববোধ, ন্যায় এবং মানুষের অধিকার বুঝতে সহায়তা করে। সব মিলিয়ে, ঈদুল আজহা শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি শিক্ষামূলক এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজ করে, যা আমাদের নৈতিক এবং সামাজিক বিকাশে সাহায্য করে।
মাহাদী হাসান
ডিভিএম, পবিপ্রবি
**"আল্লাহর হুকুমের প্রাধান্য এবং আদরের বস্তু ত্যাগের নমুনায় ইদুল আযহা"**
মুসলিম জাতি এক বিশেষ দিনে উৎসব মুখর পরিবেশে ত্যাগের যে বিশেষ মহিমা দেখিয়ে থাকে সেটিই ইদুল আযহা। মূলত হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহ তাআ'লার গোলাম হিসেবে তাঁর হুকুমকে প্রাধান্য দিয়ে তার আদরের একমাত্র সন্তানকে কোরবানি করে সন্তানের মহব্বত যে বড় নয়, বরং আল্লাহর হুকুমই বড় এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন যেকোনো ত্যাগের বিনিময়েই আল্লাহর হুকুমকে পালন করতে হবে। এটিই ইদুল আযহার শিক্ষা। পরিশেষে, ইদুল আযহা হয়ে উঠুক আল্লাহর ভয়, যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে তার হুকুম পালনের নমুনা এবং সবার মাঝে মেলবন্ধন সৃষ্টির এক মাধ্যম।
সাফওয়ান ইবনে সাজ্জাদ
ডিভিএম, পবিপ্রবি
**"মুসলিমদের আত্মত্যাগের ঈদুল আজহা"**
মুসলিমদের প্রধান দুইটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে অন্যতম ঈদুল আজহা। এই উৎসবের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আত্মত্যাগ, সেবা, দান এবং মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পরিবার পরিজনদের সাথে একত্রিত হয়ে আমরা প্রতিবছর ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। কোরবানি করা এবং কোরবানির মাংস বণ্টন করার মধ্যেও থাকে অসীম তৃপ্তি। ঈদুল আজহা যেন ত্যাগের দৃষ্টান্ত। ধনীব্যক্তিরা তাদের সাধ্যমত আল্লাহকে খুশি করার জন্য প্রতি বছর কোরবানি করে থাকে। এরই মাধ্যমে গ্রাম-শহরের সকল শ্রেণির মানুষ গোশত খাওয়ার সুযোগ লাভ করে। মুসলিমদের এই ত্যাগ, এই জীবন যেন আল্লাহকে খুশি করার জন্যই। আত্মত্যাগের মহিমায় আনন্দের উল্লাস ছড়িয়ে পড়ুক সকলের মাঝে। সবাইকে ঈদুল-আজহার শুভেচ্ছা।
ফারহান সাদিক রাহাত
এএইচ, পবিপ্রবি
**"ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির ঈদুল আজহা"**
মহান আল্লাহর জন্য নিজের প্রিয়তম জিনিস ও জান-মাল সন্তুষ্টচিত্তে বিলিয়ে দেওয়ার সুমহান বার্তা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে ফিরে আসে ঈদুল আজহা। এটি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবগুলোর একটি। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে ধনী-গরিবের সম্প্রীতি ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা আমরা ঈদুল আজহা থেকেই পাই। সেই সাথে গৃহপালিত পশুকে কোরবানি করার মাধ্যমে যে ত্যাগের বাস্তবায়ন করি, তা সামাজিক জীবনে প্রয়োগ করে আমরা সমাজটাকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারি। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির পাশাপাশি নিজেদের ভুল ত্রুটি ও খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগের মাধ্যমে নিজেকে বিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই হোক আমাদের এই ঈদের প্রাপ্তি। নিরাপদ ঈদ যাত্রার শুভকামনা রেখে সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক।
যাযাদি/ এস