হাবিপ্রবিতে সেঁজুতি'র জমকালো আয়োজন কিংকর্তব্যবিমূঢ় ১৪

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৯

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
ছবি-যাযাদি

জমকালো আয়োজনে পর্দা নামলো দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন সেঁজুতি সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্ষিক জমকালো আয়োজন কিংকর্তব্যবিমূঢ়-১৪ এর।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল মাঠে বিকাল ৪ টার সময় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. এম কামরুজ্জামান।আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহাবুব হোসেন এবং প্রক্টর শাখা, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার সহকারী পরিচালকবৃন্দ।এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা এবং হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

বর্ণাঢ্য এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির সাংস্কৃতিক শিল্পীরা মাসব্যাপী রিহার্সেল করেছে।শেখ রাসেল হল মাঠে সাজানো হয়েছে বিশাল মঞ্চ, করা হয়েছে রঙিন আলোকসজ্জা এবং দর্শনার্থীদের অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য ব্যবস্থা ছিল পর্যাপ্ত চেয়ারের। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত থিম "অপারেশন জ্যাকপটের" মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি।এছাড়াও অনুষ্ঠানের আয়োজনে আরো ছিল ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের দুঃখ কষ্ট তুলে ধরে একটি প্রদর্শনী,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রিশাতের দুর্ঘটনার উপর নির্মিত নাটক "রোড এক্সিডেন্ট",পুঁথি পাঠ,ভাষা ভাষার লড়াই আঞ্চলিক কবিতা,ফোক ফিউশন,কাব্যনাট্য শৈবালের আর্তনাদ,রম্য নাটক বাঁশের হাট কোর্ট এবং সেই সাথে বর্তমানে প্রচলিত গান ও নাচ।

অনুষ্ঠানটি আগত দর্শনার্থীদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার করেছে।সংগঠনটির সুন্দর আয়োজনে খুশি সকলেই।দর্শনার্থীরা বলছেন এমন আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের চিত্তবোনদের খোরাক মেটে।যারা সংস্কৃতি প্রেমী তারা তাদের সৃজনশীলতা তুলে ধরতে পারেন।

তেমনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ওসমান গণি রাসেল বলেন,অনেকদিন পরে সেঁজুতি সাংস্কৃতিক ঐক্যের সিগনেচার প্রোগ্রাম কিংকর্তব্যবিমূঢ় দেখছি।নিঃসন্দেহে অনেক ভালো লাগছে। সেঁজুতি সবসময়ই চেষ্টা করে ভিন্নধর্মী কিছু নিয়ে আসার আর আমরা তাদের এমন সৃজনশীলতাকে সাদরে গ্রহণ করি।এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গ্যড়াকল থেকে বের হয়ে একটু হৈ হুল্লোড় করতে পারি যা আমাদের মানসিক প্রশান্তি দেয়।প্রত্যাশা থাকবে সেঁজুতি যেনো এমন অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে আয়োজন করতে পারে।

কিংকর্তব্যবিমূঢ়-১৪ এর আয়োজন নিয়ে সেঁজুতি সাংস্কৃতিক ঐক্যের সভাপতি নাহিয়ান চৌধুরী জয় বলেন,


সেঁজুতি সাংস্কৃতিক ঐক্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বনামধন্য এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন। হাবিপ্রবিতে যাদের উত্থান এবং বিস্তার লাভ। শুরুতে নাট্যচক্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও বর্তমানে এটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাদৃত। এবং এই সংগঠনের বাৎসরিক অনুষ্ঠান কিংকর্তব্যবিমূঢ় শিরোনামে আমরা প্রতিবছর আয়োজন করে থাকি।প্রতিবছর এই আয়োজনের ব্যাপ্তী পূর্বের বছরের তুলনায় ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে এই আয়োজনের ব্যাপ্তী একটি ছোট উদহারণের মাধ্যমে বোঝানো যেতে পারে। এই সংগঠনের বর্তমান সদস্য ৪০০ এর অধিক।প্রতিবছর এই বিপুল সংখ্যক সাংস্কৃতিক কর্মী তৈরিতে এই সংগঠনটি ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ বছর কিংকর্তব্যবিমূঢ়-১৪ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বৃহৎ আয়োজনটি একটি মাইলফলক তৈরি করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের একক সংগঠন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলইডি স্ক্রীন, সাউন্ড লাইনারসহ পূর্নাঙ্গ একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে।ধন্যবাদ জানাই এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য মহোদয়কে তার আন্তরিক উপস্থিতির জন্য। ধন্যবাদ জানাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতার জন্যে। আর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র প্রতিনিধি সহ আপামর ছাত্র সমাজকে যাদের অকুন্ঠ সমর্থনে আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।আরো কৃতজ্ঞতা জানাই অনুষ্ঠানের স্পন্সর হিসেবে পাওয়া জিরো টু ওয়ান পোশাক রিটেইলার ও পাটোয়ারী বিজনেস হাউজকে। এছাড়াও অনুষ্ঠানের সকল কলাকুশলী, সংগঠনের সদস্যবৃন্দের প্রতি ভালবাসা জ্ঞাপন করছি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।এই অনুষ্ঠানে দর্শকদের এই আকুন্ঠ সমর্থন আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।আমরা চাই ক্যাম্পাসকে এই ধরনের সাংস্কৃতিক কাজে মুখরিত রাখতে।ক্যাম্পাসে ফোক ফেস্ট, থিয়েটার,কবিতা উৎসব আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড ফেস্ট সহ মূলধারার সাংস্কৃতিক উৎসবগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রাণ ফিরে পাক। লেখাপড়ার পাশাপাশি সকল প্রকার সামাজিক সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে পাশ কাটিয়ে আমাদের এই সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রায় সকলের অব্যাহত সমর্থন কামনা করছি।

যাযাদি/ এস