বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ট্যাক্স দিতে হবে : সুপ্রিমকোর্ট
প্রকাশ | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৬ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৭
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর (ট্যাক্স) আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে আজ আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষে ছিলেন এএফ হাসান আরিফ ও খায়রুল আলম চৌধুরী।
এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ফাইল করা হয়। এ বিষয়ে ৪৪টি মামলা ছিল। এগুলোর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি দেন) করেন। সেসব আপিলের শুনানি শেষে আজকে রায় হলো।
রাষ্ট্র চালানোর জন্য ট্যাক্স আহরণ দৈনন্দিন কাজ। অর্ডিন্যান্স অনুসারে সবার জন্য ট্যাক্স ধার্য করা আছে। ব্যক্তিদের জন্য ২৫ শতাংশ। সেখানে তাদের (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়) কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটার সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক নেই। ভ্যাট হলে ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতো। এখন ট্যাক্স তাদের (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে), মালিকদের দিতে হবে। আয়ের ওপরে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে।
২০০৭ সালের ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয় যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনঃনির্ধারণ করা হলো। ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে।
২০১০ সালের ১ জুলাই এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ ও উদ্ভূত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। পরে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৪৬টি রিট হয়। ৪৬টি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ওই দুই প্রজ্ঞাপন অনুসারে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি দিয়েছেন) করেছেন। একইসঙ্গে অর্থ ফেরতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন। তবে এ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ১৫ শতাংশ আয়কর নেয়া থেকে এনবিআরকে বিরত থাকতে বলা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের ৪৪টি আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত।বাসস
যাযাদি/এসএস