বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন 

প্রচারণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা 

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৯
প্রচারণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদ-২০২৪ এর নির্বাচন আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল অংশগ্রহণ না করলেও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু নীল দলের অনুসারী শিক্ষকরা দুইটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থী দুই প্যানেলের শিক্ষকদের মধ্যে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে তুষার-শফিক প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদ প্রত্যাশী নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আসিফ ইকবাল আরিফ এবং জান্নাত-আবির প্যানেলের অনুসারী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ড. মো. তারিকুল ইসলাম ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মাসুদ রানা বাগবিতণ্ডায় জড়ান। এসময় উভয়গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি ড. মো. রিয়াদ হাসান, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষক ড. মো. নজরুল ইসলাম, ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক ড. মো. মাহবুবুর রহমান, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ সহ শিক্ষক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে ড. মো. নজরুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহর কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা এবিষয়ে কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘আজকে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি শিক্ষকদের কাছ থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং শিক্ষকসুলভ আচরণও না। শিক্ষকদের এই ধরণের আচরণে শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। ’

এদিকে এই ঘটনার পর ‘অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হেয় প্রতিপন্ন করার’ অভিযোগ তুলে শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৪ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী মো. সাহিদুজ্জামান বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তুষার-শফিক প্যানেলের সহ-সভাপতি পদপ্রত্যাশী নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আসিফ ইকবাল আরিফ। এরপর এদিন রাতেই ঘটনার প্রতিবাদ করে বিবৃতি প্রদান করে তুষার-শফিক প্যানেল।

এ বিষয়ে আসিফ ইকবাল আরিফ বলেন, ‘অনলাইনে (শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপ JKKNIU-TEACHERS) নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে 'জান্নাত আবীর' প্যানেলের কতিপয় সমর্থক গোষ্ঠীর দ্বারা উগ্র ও অশালীন, এবং পেশাদারি বহির্ভূত অসদাচরণ ও মৌখিক আক্রমণে আমি মানসিকভাবে আহত। 'সহ-সভাপতি' পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও অন্যান্য সাধারণ সহকর্মী, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সামনে আমার শিক্ষক রাজনীতি ও আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যে ধরণের অশ্রাব্য মন্তব্য ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে তাতে আমি মর্মাহত। তাঁদের এই ধরণের আচরণে আমি আতঙ্কিত।’

জান্নাত-আবীর প্যানেলের সমর্থক ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (আসিফ ইকবাল আরিফ) বর্তমান শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি। তারপরেও বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক মনগড়া কথা-বার্তা বলেন। শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতির সামনে আমরা তার মনগড়া কথার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। সেখানে ‘অশ্রাব্য ভাষায়’ কোনো কথাবার্তা হয়নি।’

বাকবিতণ্ডায় জড়ানো জান্নাত-আবীর প্যানেলের অনুসারী মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মাসুদ রানার বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী মো. সাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা মিটিংয়ে এই বিষয়ে কথা বলবো। মিটিংয়ে সব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে