হাতুড়ির টুংটাং শব্দে জোরেশোরে চলছে বইমেলার প্রস্তুতি

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:০০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং তার সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাতুড়ির টুংটাং শব্দ বলে দিচ্ছে অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতি চলছে। হাতুড়ির পাশাপাশি করাতের ঘ্যাচ ঘ্যাচ আওয়াজ শুনে বইমেলার  জোরেশোরে প্রস্তুতি টের পাওয়া যাচ্ছে।

এ বছর বাংলা একাডেমিতে বইমেলা নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। এ বছর বইমেলা পূর্বাচলে হবে বলে শোনা যাচ্ছিল। তবে শেষমেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 বইমেলার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।যথারীতি ফেব্রুয়ারী তথা  ভাষার মাসের প্রথম দিন বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠবে অমর একুশে বইমেলার। ২০২৪ সাল অধিবর্ষ। তাই এবার বইমেলা হবে ২৯ দিনের।

আজ সোমবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং তার সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে , বইয়ের স্টল তৈরির কাজ দেখে মনে হচ্ছে প্রাণের বইমেলা শুরুর দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এরই মধ্যে রং করা, অঙ্গসজ্জা, নান্দনিক নকশা গড়াসহ স্টলের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলতে মেলা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রকাশকরা।

 মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশের খুঁটির উপর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি সারি সারি স্ট্রাকচারগুলো ঢেকে যাচ্ছে নানা নকশার আড়ালে। প্রাঙ্গণজুড়ে কেবল শোনা যাচ্ছে হাতুড়ি-পেরেকের টুংটাং শব্দ।স্টলের ভেতরে-বাইরে ইট বিছানোর ব্যস্ততা, স্টলের পর্দা সেলাইয়ের তোড়জোড়। সময় কম হওয়ায় সবার মধ্যেই স্টল গোছানোর তুমুল ব্যস্ততা।গত কয়েক বছর মেলার স্টল বিন্যাস, প্রবেশদ্বার নির্মাণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে। এবার তা হচ্ছে না। মেলা আয়োজনের পাশাপাশি সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বাংলা একাডেমি নিজেদের হাতেই রেখেছে।দেশের সবচেয়ে প্রধান এই বই মেলা পরিণত হবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলনমেলায়। মূল মঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মাসব্যাপী সেমিনার। চলবে দেশত্ববোধক গান এবং লোকগান।
পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্য থাকবে চিত্রাঙ্কন, সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন।গত বছরের মতো এবারো মেলার মূল মঞ্চ হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে। রমনা কালী মন্দিরের পাশে থাকছে ‘শিশু চত্বর’। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ও লিটলম্যাগ চত্বর। এছাড়া বরাবরের মতোই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল।

বইমেলার প্রস্তুতি দেখতে আসছে অনেকেই।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লুৎফুর কবির রানা জানান,"বাঙালি জাতির প্রাণের স্পন্দন বইমেলা।ঈদ এবং পূজার মতোই এটি আমাদের কাছে উৎসব। বইমেলা এখানে কবি,লেখক এবং সাহিত্যিকদের সঙ্গে পাঠকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।তাই এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত"।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব এবং বাংলা একাডেমি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন,"বইমেলার প্রস্তুতি নিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি।আগামীকাল সকাল এগারোটায় বাংলা একাডেমিতে বইমেলার প্রস্তুতি সহ সার্বিক বিষয়ে দেশবাসীকে জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সেখানে মিডিয়া কর্মীদের মুখোমুখি হবেন মেলার আয়োজক কমিটি"।

যাযাদি/এসএস